ধানমন্ডি ৩২-এর ভাঙা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যা বললেন ন্যান্সি
Published: 20th, March 2025 GMT
গত বছরের আগস্ট মাসে আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তখনকার সরকার প্রধান। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
বর্তমানে বাড়িটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাড়িটি ভাঙার এক মাস পর সেখানে গিয়ে ছবি তুলেছেন গায়িকা নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি।
বুধবার রাতে সেই ছবি নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, জীবন বাংলাদেশ আমার মরণ বাংলাদেশ। পরাধীনতার শেকলমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশের সূচনা।’
এর কিছু সময় পরেই অরও একটি পোস্টে এই শিল্পী লেখেন, ‘আমি এখন আছি সুখে, আগুন জ্বলুক খুনীর দোসরদের বুকে। ঘুমাতে গেলাম।’
সম্প্রতি গণমাধ্যকে তিনি বলেছেন, ‘এবারের ঈদটা আমার জন্য অন্যরকম আনন্দ নিয়ে এসেছে। কারণ শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে আমি নতুনভাবে কাজ করতে পারছি, মামলার হয়রানি ছাড়াই চলাফেরা করতে পারছি। তাই এবারের ঈদ আমার জন্য বেশি আনন্দের।’
বলে রাখা ভালো, জনপ্রিয় গায়িকা ন্যান্সি রাজনৈতিক দল বিএনপির সমর্থক হওয়ায় গত ১৬ বছরে বেশ কোণঠাসা ছিলেন। দেখা যায়নি কোনো অনুষ্ঠানেও।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর নিয়ন্ত্রণে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পরদিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় এক ঘণ্টার এ আলাপচারিতা ‘বেশ ভালো ছিল’ বলে জানান তিনি। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে জেলেনস্কি জোর দিয়েছেন– এটা কেবল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।
জেলেনস্কি জানান, তিনি ও ট্রাম্প জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র মার্কিন তত্ত্বাবধানে রাখার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে থাকা ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হতে দুই বছর সময় লাগবে। ইউরোপ ও ইউক্রেনের জন্য এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা খুবই জরুরি।
বৃহস্পতিবার বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে জোরালো প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইউরোপের নেতারা। এ উপলক্ষে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে বৃহস্পতিবার ওসলো পৌঁছান জেলেনস্কি। একই দিনে লন্ডনে ২০ দেশের শীর্ষ সামরিক কমান্ডারদের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ইউক্রেনের সমর্থনে গঠিত কোয়ালিশন অব উইলিংয়ের অংশ হিসেবে এ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা অংশ নিচ্ছেন।
ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে সৃষ্ট ফাটল আরও স্পষ্ট হচ্ছে। ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্য। কিন্তু সেখানেও রাজনীতিকরা এখন ভিন্নমত পোষণ করছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই সামনে এগোনোর কথা বলছেন। ইইউ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ব্রিটেনের রক্ষণশীল এমপি তোবাইস এলউড বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই আমাদের ভাবতে হবে। ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর সাবেক এ সদস্য বলেন, ‘আমাদের সেই পৃথিবীর কথা চিন্তা করতে হবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পেছনে নেই।’
এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের যে ফোনালাপ হয়েছে, তাতে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে এ বছরই স্থায়ী শান্তি অর্জন করা সম্ভব হতে পারে। জেলেনস্কি ট্রাম্পকে জানান, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে আংশিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি।
গত মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সফরের সময় ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বাদানুবাদকে ঘিরে যে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, ফোনালাপের পর পরিস্থিতি তাঁর থেকে ভিন্ন বলে মনে করা হচ্ছে। ওভাল অফিসে বৈঠকের পর বুধবারই প্রথমবারের মতো দুই প্রেসিডেন্ট সরাসরি কথা বললেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আংশিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি। ইউক্রেন নতুন করে আরও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পেয়েছে। তবে কতগুলো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তারা পেয়েছে, তা জানাতে চাননি তিনি। ২০২৪ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান প্রথমবার পায় ইউক্রেন। সেগুলো ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস দিয়েছিল।
রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনে আংশিক যুদ্ধবিরতির কারিগরি বিষয় নিয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের প্রতিনিধি দল সৌদি আরবে বৈঠক করবে। ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ তথ্য জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেছেন, আংশিক যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও আওতা বৃদ্ধির জন্য কারিগরি দিক সমাধানে আমাদের প্রতিনিধি দলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন ও ইউক্রেনীয় দল দ্রুতই সৌদি আরবে এক বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের ১৭৫ বন্দি বিনিময়
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ১৭৫ বন্দি বিনিময় হয়েছে। বুধবার তারা যুদ্ধের এক অন্যতম বৃহৎ বন্দি বিনিময় করেছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে গুরুতর আহত সেনা ও যোদ্ধা ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে রাশিয়ায় আটক রাখা হয়েছিল।