আপনিও কি ছোট ছোট বিষয় নিয়ে ভাবতেই থাকেন
Published: 20th, March 2025 GMT
আদতে কী ঘটল বা কে কী বলল, এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো সে বিষয়ে আপনি কী ভাবছেন বা চিন্তা করছেন, সেটি। কে কী করল, বলল, কী ঘটল, তার ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে সেই ঘটনায় আপনার প্রতিক্রিয়া আপনার নিয়ন্ত্রণে। সবকিছু আপনার মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য নয়। সব ছোটখাটো বিষয়ে আপনার এনার্জি, চিন্তা, সময়ের অপচয় করবেন না। আপনি কীভাবে, কোন বিষয়ে, কতটা প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, সেটা আপনার সিদ্ধান্ত। তাই মস্তিষ্ককে প্রশিক্ষণ দিন। আপনার জীবনে যা কিছু আদতে গুরুত্বপূর্ণ, যা কিছু ইতিবাচক, যা কিছু সৃজনশীল, যা কিছু আপনাকে সামনে এগিয়ে নেয়, কেবল সেসবই স্থান দিন আপনার চিন্তায়।
আরও পড়ুনদুশ্চিন্তা বাড়ায় অ্যাসিডিটি১২ ডিসেম্বর ২০২০১.
২. কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটি নয়, বুঝতে পারেন না? নিজেকে প্রশ্ন করুন, যা নিয়ে ভাবছেন, সেটি কি ৭২ ঘণ্টা পরও প্রাসঙ্গিক? এক সপ্তাহ পরও আপনাকে প্রভাবিত করবে? যদি ‘না’ হয়, তাহলে সেটা নিয়ে ভাবনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
৩. ‘ওভারথিঙ্কিং’ চক্রাকারে ঘুরতে থাকে মাথার ভেতর। সেই চক্র ভেঙে দিতে আপনি উঠে দাঁড়ান। খানিকটা হেঁটে আসুন। নিজেকে এক কাপ চা বানিয়ে খাওয়ান। স্ট্রেচিং করুন। হালকা ফ্রি হ্যান্ড এক্সাসাইজ করুন। গভীরভাবে শ্বাস নিন, ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এভাবে কয়েকবার করুন।
আরও পড়ুনআমি তেমন দুশ্চিন্তা করি না, তবু পালস রেট এত বেশি কেন? ০২ জুলাই ২০২২৪. আপনার মস্তিষ্ককে কোনো একটা বিষয়ে চিন্তা করার জন্য সময় বেঁধে দিন। সুশৃঙ্খলভাবে চিন্তা করার জন্য বিষয়টি নিয়ে লিখতে বসুন। সেটি সমাধানে আপনার কী করণীয়, তা লিখে ফেলুন। আর যদি সেখানে আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তাহলে সেটা নিয়ে ভাবনার কোনো মানে নেই। সম্ভাব্য সমাধান লেখা শেষ করে বিষয়টিকে চলে যেতে দিন।
৫. সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা ভাবা বন্ধ করুন। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির পক্ষে জোর করে যুক্তি দাঁড় করানো বন্ধ করুন; বরং নিজেকে বলুন, যদি সবচেয়ে খারাপ কিছুও ঘটে, আপনি সেটা নিজের সেরাটা দিয়ে মোকাবিলা করবেন।
৬. যেকোনো পরিস্থিতি ‘জুম ইন’ না করে ‘জুম আউট’ করুন। পাঁচ বছর পরও কি আপনি এ অবস্থায় থাকবেন? নিশ্চয়ই না। পাঁচ বছর পরও কি আপনি একই বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন? প্রশ্নই আসে না। আপনি যখন একটু দূর থেকে দেখেন, তখন ছোটখাটো বিষয় আপনাকে দুশ্চিন্তায় ফেলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
৭. কোনো একটি সমস্যার দুটি দিক থাকে। ‘প্যানিক মুড’ আর ‘প্রবলেম সলভিং মুড’। আপনি বরং দ্বিতীয়টাতেই মনোযোগ দিন।
নিজের মানসিক শান্তির চেয়ে বড় কিছু নেই। সেটি যেকোনো মূল্যে রক্ষা করুন।
সূত্র: হ্যাবিটস অন পারপাস
আরও পড়ুনসকালে ঘুম ভাঙে দুশ্চিন্তা নিয়ে? জেনে রাখুন সমাধান২৭ নভেম্বর ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত সবচ য় আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়