সিলেট সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত
Published: 20th, March 2025 GMT
সিলেটের গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে বিছনাকান্দি সীমান্তে মরকি টিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ইউনিয়নের কুলুমছড়া পার এলাকার জাকির মিয়ার ছেলে ইয়ামিন মিয়া ও একই এলাকার আক্তার হোসেন। সম্পর্কে তাঁরা চাচা–ভাতিজা।
স্থানীয় সূত্র ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, বিছনাকান্দি ইউনিয়নের বিছনাকান্দি মরকি টিলার ১২৬৪ নম্বর মেইন পিলার এলাকা দিয়ে গতকাল কয়েকজন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারত সীমান্তে প্রবেশের পর সেখানকার খাসিয়াদের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ হয়। এ সময় খাসিয়াদের ছোঁড়া গুলিতে বাংলাদেশের দুজন আহত হন। পরে তাঁরা বাংলাদেশ সীমান্তে পালিয়ে আসেন।
সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা স্থানীয় ও গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছি, গতকাল বিকেলে কয়েকজন বাংলাদেশি বিছনাকান্দি এলাকায় ভারত সীমান্তে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন। সেখানে ভারতীয় খাসিয়াদের সঙ্গে টাকাপয়সা নিয়ে তাঁদের বিরোধ হয়। এতে ভারতীয় খাসিয়ারা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় দুজন ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। আহতসহ অন্যরা বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে ফিরেছেন।’
নাজমুল হক আরও বলেন, আহত ব্যক্তিদের পাঁয়ে ছররা গুলি লেগেছে। তাঁরা আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা শঙ্কা মুক্ত রয়েছেন। এ বিষয়ে বিজিবি আরও খোঁজ নিচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়