মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ দেখা যাচ্ছে। তাঁর আহ্বানে পরস্পরের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা ৩০ দিনের জন্য বন্ধে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন।

জ্বালানি স্থাপনায় হামলা বন্ধ হওয়ায় বিশ্ববাজারে রুশ জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়ছে। ফলে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর মার্কিন হামলা সত্ত্বেও বুধবার জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। এ ছাড়া প্রভাব পড়েছে শস্যের বাজারে। ফিউচার মার্কেটে বুধবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১৯ সেন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলার ৩৭ সেন্টে নেমে আসে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ২০ সেন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৬৬ ডলার ৭০ সেন্টে নেমে আসে। খবর রয়টার্স

আজ বৃহস্পতিবার উভয় জাতের তেলের দাম আবার বেড়েছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭১ দশমিক ২০ ডলারে উঠেছে। সেই সঙ্গে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়ে ৬৭ দশমিক ৫১ ডলারে উঠেছে।

এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন জ্বালানি যুদ্ধবিরতির প্রভাব শস্যের বাজারেও পড়েছে। এরই মধ্যে কমেছে গম ও ভুট্টার দাম। শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের (সিবিওটি) সর্বাধিক সক্রিয় চুক্তি অনুসারে, গমের দাম বুশেলপ্রতি শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৫ ডলার ৬০ সেন্ট হয়েছে। ভুট্টার দাম শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে ৪ দশমিক ৫৭৫ ডলার হয়েছে। এ ছাড়া শীর্ষ শস্য রপ্তানিকারক রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরে যাওয়ার সম্ভাবনায় বাড়তে পারে সরবরাহ। এতে শস্যের বাজার ভবিষ্যতে নিম্নমুখী হবে বলেই পূর্বাভাস বিশ্লেষকদের।

পণ্যবাজার বিশ্লেষক সংস্থা আইজির বাজার কৌশলবিদ ইয়েপ জুন রঙে রয়টার্সকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন সমস্যার চূড়ান্ত সমাধানের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেনীয় জ্বালানি স্থাপনাগুলোয় আক্রমণ বন্ধ হলে জ্বালানি তেল সরবরাহ বাড়বে। ফলে দামও কমবে।

কিন্তু অন্য বিশ্লেষকেরা বলছেন, হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। ফলে তেলের দাম যতটা কমার কথা, ততটা কমছে না।

বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল সরবরাহকারী দেশের একটি হচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু যুদ্ধের শুরু থেকে দেশটির জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিশ্ববাজারে তাদের সরবরাহ কমে যায়। বিশ্লেষকেরা বলেছেন, সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির ফলে মস্কোর জ্বালানিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে পারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সরবরাহ বাড়বে।

এদিকে কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপের ঘটনায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা। এতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদায় প্রভাব পড়বে। এই পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা।

মার্কিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুতের তথ্যে মিশ্র চিত্র দেখা যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৪ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুত ৪০ লাখ ৫৯ হাজার ব্যারেল বেড়েছে। অন্যদিকে পেট্রলের মজুত ১ লাখ ৭১ হাজার ব্যারেল ও ডিস্টিলেট মজুত ২০ লাখ ১৫ হাজার ব্যারেল কমেছে। এতে আবার বাজার ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন সরবর হ দশম ক র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ইলিশ: দাম স্বাভাবিক, ক্রেতা কম

বাংলা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা ইলিশের একটি রেওয়াজ আছে। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ এলে বাজারে ইলিশের চাহিদা ও দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবার বাজারে বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতা কম বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক কেজি বা একটু বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং  ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সুইটি রানী রাইজিংবিডিকে বলেন, “পয়লা বৈশাখে পান্তা ইলিশ না খেলে নববর্ষ উদযাপন হবে কী করে? তাই স্বামীকে নিয়ে ইলিশ নিতে এসেছি। এখানে ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যায়। আমি এক কেজি ওজনের দুটি ইলিশ নিয়েছি। আমার কাছ থেকে চার হাজার টাকা রেখেছে। গত সপ্তাহেও এই দামে নিয়েছি।”

আরো পড়ুন:

কড়া নাড়ছে ঈদ, চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা

শেষ মুহূর্তে জমজমাট ঈদের কেনাকাটা

সাজ্জাদুল ইসলাম নামের আরেকজন ক্রেতা রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের অফিসের জন্য ১৫ কেজি ইলিশ নিয়েছি। অফিসের সবাই ইলিশ দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করব। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম রেখেছে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে। অন্য সময় হয়তো ১ হাজার ৫০০ তে পেতাম। তবে এখানকার মাছগুলো টাটকা।”

পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে অন্য বছরের তুলনায় ইলিশের দাম কম দেখলাম। বড় ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মধ্যে। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত রয়েছে তাদের পক্ষে এই দামেও ইলিশ কেনা সম্ভব না।”

কারওয়ান বাজারে সুজন মৎস্য আড়ৎ এর স্বত্বাধিকারী মো. সুজন সিকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ থাকার কারণে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশের দাম বাড়েনি। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। নদীর ইলিশের চাহিদা বেশি। এখন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে আগে যেমন পয়লা বৈশাখে বাজারে ভিড় থাকত। এ বছর ভিড় দেখছি না, বিক্রিও কম।”

বাবুল মৎস্য আড়ৎ এর ইলিশ বিক্রেতা বাবুল মোল্লা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে ইলিশের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এর অন্যতম কারণ বড় ইলিশ মাছের সরবরাহ ঠিক আছে।” 

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শক্তিশালী সৌরঝড়ের আশঙ্কা
  • নতুন বিনিয়োগ ‘পড়বে অসম প্রতিযোগিতায়’ 
  • যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ রপ্তানি করবে না চীন
  • ইলিশ: দাম স্বাভাবিক, ক্রেতা কম
  • ইউক্রেনে গ্যাস পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
  • ধরা পড়ছে না ইলিশ, জেলেদের দিন কাটছে অর্থকষ্টে
  • আদানির সরবরাহ কমে লোডশেডিং বেড়েছে
  • পানি নেই ঝিরি-ঝরনায় সংকটে দুর্গম গ্রামবাসী
  • টেসলা কতটা ‘মেড ইন আমেরিকা’
  • আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা পর চালু