যে কারণে স্ত্রীর সঙ্গে ১০ ঘণ্টা শপিংয়েও আপত্তি নেই রজার ফেদেরারের
Published: 20th, March 2025 GMT
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজগঞ্জে তারাবিহর নামাজে ভুল ধরা নিয়ে ইমামকে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় তারাবিহর নামাজে ভুল ধরাকে কেন্দ্র করে মসজিদের ইমামকে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক তরুণের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার রাতে তারাবিহর নামাজের পর উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের চৌবাড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামের বায়তুল আমান জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় মসজিদের ইমাম মো. আবদুল্লাহসহ (৫০) পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় মুসল্লি দেলোয়ার হোসেন (৬০) ও জাহিদ হাসানকে (২২) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে ইমাম মো. আবদুল্লাহকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চৌবাড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামের বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মো. আবদুল্লাহ। তবে পবিত্র রমজানে তারাবিহর নামাজ পড়ানোর জন্য আলাদা দুজন হাফেজ নিয়োগ করা হয়। গতকাল তারাবিহর নামাজের সময় ওই হাফেজদের একজন কিরাতে ভুল করলে তৎক্ষণাৎ সংশোধন করে তাঁরা নামাজ শেষ করেন। নামাজ শেষে মসজিদের ইমাম আবদুল্লাহ মোনাজাত করবেন, এমন সময় হাফেজ মোহাম্মদ তালহা নামের স্থানীয় এক মুসল্লি মাইকে কিছু বলবেন জানিয়ে সামনে এগিয়ে যান এবং ইমামের কাছ থেকে মাইক্রোফোনটি চান। ইমাম মাইক্রোফোনটি দিতে অস্বীকৃতি জানালে তালহা উত্তেজিত হয়ে তাঁকে (ইমামের) থাপ্পড় ও ঘুষি মারেন। স্থানীয় মুসল্লিরা থামাতে গেলে মসজিদে থাকা কাঠের ছুতরা বা বাটাম তুলে নিয়ে তিনি তাঁদের এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করেন। এ সময় মসজিদের মেঝেতে পড়ে যাওয়া ইমামকে আবার পেটান।
স্থানীয় মুসল্লিরা ইমামসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে ইমাম মো. আবদুল্লাহকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শিমুল তালুকদার বলেন, মো. আবদুল্লাহ গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর এক্স–রে করে দেখা যায়, তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে ওপরের অংশের হাড় ভেঙে গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে।
কয়েকজন মুসল্লি বলেন, মোহাম্মদ তালহা নিজেও একজন হাফেজ। তাঁর বাড়ি মসজিদের পাশে। তিনি ওই মসজিদে ইমামতি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয় লোকজন তাঁকে ইমাম হিসেবে গ্রহণ করেননি। এর জেরে বেশ কয়েক দিন ধরে তিনি মসজিদে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছিলেন। ওই ক্ষোভ থেকেই তিনি মসজিদের ইমামকে মারধর করেন।
অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ তালহা কোনো কথা বলতে রাজি হননি। মসজিদ কমিটির সভাপতি মীর মুসতাহীদ আলী বলেন, মসজিদের ইমামকে পেটানোর বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ছেলেটিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আবদুল মান্নান, হাবিব আকন্দ, আবদুস সালামসহ বেশ কয়েকজন মুরব্বি থানায় গিয়ে ঘটনার চূড়ান্ত বিচার করে দেওয়ার লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে ছেলেটিকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন।
ভুক্তভোগী ইমাম মো. আবদুল্লাহ বলেন, স্থানীয় মুরব্বিরা এ ব্যাপারে বিচার করার আশ্বাস দেওয়ায় তিনি থানায় কোনো অভিযোগ দেননি। এমন ঘটনা ঘটবে, তা তিনি কখনো ভাবতে পারেননি। এ ঘটনায় তিনি চরমভাবে লজ্জিত।
কামারখন্দ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রূপ কর প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে রাতেই অভিযুক্ত ছেলেটিকে আটক করে থানায় এনে রাখা হয়েছিল। তবে স্থানীয় মুরব্বিদের অনুরোধে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার অঙ্গীকারে মুচলেকা দিলে আজ দুপুরে ছেলেটিকে তাঁদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।