‘মা, আমি ক্লান্ত, মরে যেতে চাই’: ইসরায়েলি আগ্রাসনে মানসিক বিপর্যয়ে শিশুরা
Published: 20th, March 2025 GMT
আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে চুল আঁচড়ানোর মতো করে মাথায় একটি ব্রাশ বোলাতে বোলাতে কাঁদতে শুরু করল শামা তুবাইলি।
মাথায় হাত রেখে শামা সিএনএনকে বলল, ‘ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ানোর জন্য আমার এক চিলতে চুলও অবশিষ্ট নেই। এ জন্য আমার মন ভীষণ খারাপ। আমি আয়না ধরে থাকি। কারণ, আমি আমার চুল আঁচড়াতে চাই। আমি সত্যিই আবার আমার চুল আঁচড়াতে চাই।’
মাথায় চিরুনি বোলালে আট বছরের এ শিশুর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগের স্মৃতি মনে পড়ে যায়। সে পরিবারের সঙ্গে উত্তর গাজার জাবালিয়ায় থাকত। তখন তার মাথায় লম্বা চুল ছিল। বাড়ির বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যেত। কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর থেকে শামা ও তার পরিবার প্রায় ১৯ লাখ মানুষের কাতারে শামিল হয়েছেন, যাঁরা তাঁদের বাড়ি এক বা একাধিকবার ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
(শিশুটি বলেছে) আমার বন্ধুরা এখন স্বর্গে। তবে তাদের মধ্যে একজনের মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল মস্তকবিহীন। তার মাথা যদি না থাকে, সে কীভাবে স্বর্গে যাবে? বলতে বলতে (শিশুটি) কেঁদে ফেলে।ডা.ইয়াসের আবু জামেই, গাজা কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রামের পরিচালক
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে শামার পরিবার প্রথমবারের মতো জাবালিয়া ছেড়ে দক্ষিণে রাফায় চলে যায়। সহিংসতা বাড়তে থাকলে তারা সেখান থেকে আবার তল্পিতল্পা গুঁটিয়ে মধ্য গাজার খান ইউনিসে একটি শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন বলে দাবি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের। এ ছাড়া জিম্মি করা হয় ২৫০ জনের বেশি মানুষকে। প্রতিশোধ নিতে সেদিনই গাজায় তাণ্ডব শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তাদের বেপরোয়া বোমা হামলা ও স্থল অভিযানে সেখানে ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ যুদ্ধ বন্ধে সম্প্রতি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীন প্রায় দুই মাসের জন্য ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ ছিল।
রাফার একটি আশ্রয়শিবিরের তাঁবুতে থাকা দুই ফিলিস্তিনি শিশুউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিটিবির কমিটি থেকে রাখাল রাহারঅপসারণ দাবি
সাজ্জাদুর রহমান ওরফে রাখাল রাহাকে এনসিটিবির পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটির সদস্য থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর।
আট দাবি তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলের গণবিরোধী নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলে আমাদের লড়াই ছিল আপসহীন। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে রাখাল রাহা শুধুই লিখিত বক্তব্য পড়েন। অথচ পরে কমিটিতে রাখতে চাপ দেন তিনি। এক পর্যায়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের তোপে স্থগিত হয়।
জাহাঙ্গীর বলেন, ২০২৩ সালে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবীর, কাজী সাইফুল হক পনিরসহ চারজন এনসিটিবির মামলায় গ্রেপ্তার হলেও রাখাল রাহার কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। অথচ সংগঠন ব্যবহার করে তিনি এনসিটিবিতে ঢুকে পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী গ্রাফিতি, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা বইয়ের পেছনে ছাপা, দরপত্র কেলেঙ্কারি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতসহ না বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করছেন।
‘রাখাল রাহার নেতৃত্বে অভিভাবকদের আন্দোলনের কারণেই শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন’– এনসিটিবি চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসানের এ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের সভাপতি কাজী সাইফুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, জেসমিন, ডা. রিপা প্রমুখ।