গাজায় এবার স্থল অভিযান শুরু করলো ইসরায়েল
Published: 20th, March 2025 GMT
গাজায় বিমান হামলায় দুই দিনে ৪৩০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানির পর এবার স্থল অভিযান শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সেনারা এখন গাজাকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোরে চলে গেছে। তারা গাজায় উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে আংশিক বাফার তৈরির জন্য স্থল অভিযান শুরু করেছে।
আরো পড়ুন:
গাজায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি, নিহত ৩০০ ছাড়াল
ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় হামলা: হোয়াইট হাউজ
গত মাসে যুদ্ধবিরতির চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল এই এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছিল।
বিবিসি বলছে, ইসরায়েল গাজার বাসিন্দাদের স্থল সীমান্তের তিন পাশের বিশাল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য নতুন নির্দেশ জারি করেছে। এর ফলে শিগগিরই আরো বড় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।
এই নির্দেশ ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, যাদের অনেকেই যুদ্ধের কারণে বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন এবং যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ি ফিরে এসেছেন।
পরিবারগুলোকে যা সম্ভব তা বহন করতে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দ্বারা চিহ্নিত এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য হেঁটে, গাড়িতে বা যানবাহনে করে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে সংঘাত শুরুর পর থেকে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে গত মঙ্গলবার থেকে চলমান বিমান হামলা। এই হামলা কার্যত জানুয়ারি থেকে কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতি চূর্ণ করেছে।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের নতুন বিমান হামলা এবং নেটজারিম করিডোরে প্রবেশকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে। এক বিবৃতিতে হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছেন এবং যেকোনো যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন ‘আগুনের মুখেই’ হবে।
গতকাল বুধবার এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করে সেখানে আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস এখনও ৫৯ জন জিম্মিকে ধরে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাটজ আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, যদি কোনো দাবিই পূরণ না হয়, তাহলে বিকল্প হবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ধ্বংসযজ্ঞ’।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এরপর ইসরায়েল এবং হামাস প্রথম পর্যায়ের পরে যুদ্ধবিরতি কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে। হামাস ও ইসরায়েল এ নিয়ে পরষ্পরকে দুষছে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য মার্চের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় প্রবেশকারী সমস্ত খাদ্য, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ইসরায়েল সেনা এবং কঠোর সামরিক শক্তি ব্যবহার করে হামাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে আক্রমণে প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। ইতিমধ্যেই বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল র জন য ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিটিবির কমিটি থেকে রাখাল রাহারঅপসারণ দাবি
সাজ্জাদুর রহমান ওরফে রাখাল রাহাকে এনসিটিবির পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটির সদস্য থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর।
আট দাবি তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলের গণবিরোধী নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলে আমাদের লড়াই ছিল আপসহীন। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে রাখাল রাহা শুধুই লিখিত বক্তব্য পড়েন। অথচ পরে কমিটিতে রাখতে চাপ দেন তিনি। এক পর্যায়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের তোপে স্থগিত হয়।
জাহাঙ্গীর বলেন, ২০২৩ সালে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবীর, কাজী সাইফুল হক পনিরসহ চারজন এনসিটিবির মামলায় গ্রেপ্তার হলেও রাখাল রাহার কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। অথচ সংগঠন ব্যবহার করে তিনি এনসিটিবিতে ঢুকে পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী গ্রাফিতি, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা বইয়ের পেছনে ছাপা, দরপত্র কেলেঙ্কারি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতসহ না বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করছেন।
‘রাখাল রাহার নেতৃত্বে অভিভাবকদের আন্দোলনের কারণেই শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন’– এনসিটিবি চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসানের এ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের সভাপতি কাজী সাইফুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, জেসমিন, ডা. রিপা প্রমুখ।