‘পরিকল্পিতভাবে তৈরি পোশাক কারখানায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে’
Published: 20th, March 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়ক, প্রযোজক ও ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল অভিযোগ করে বলেছেন, ‘‘দেশকে অচল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে একশ্রেণির শ্রমিক সংগঠন ছাড়াও বিজিএমইএর একাংশ দায়ী।’’
বুধবার (১৯ মার্চ) সাভারের হেমায়েতপুরে অনন্ত জলিলের মালিকানাধীন এজে আই এবং এবি গ্রুপে সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিক অসন্তোষ, কারখানা ভাঙচুর এবং কর্মকর্তাদের মারধরের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
অনন্ত জলিল অভিযোগ করে বলেন, ‘‘২৪০টি গ্রুপ অব কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। যে কারণে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী এবং ডাকাতি বেড়ে গেছে।’’
এর আগে, কারখানায় হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে মিছিল করেন অনন্ত জলিলের মালিকানাধীন দুই গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
ঢাকা/সাব্বির/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নান্নু মার্কেট: যেখানে কম দামে কেনা যায় নামী ‘ব্র্যান্ডের’ পোশাক
দোকানটিতে পাশাপাশি দুটি টি-শার্ট ঝুলিয়ে রাখা। কলারওয়ালা আর হাফহাতা টি-শার্ট দুটির একটিতে দাম লেখা ১ হাজার ৫০ টাকা, আরেকটিতে ৬৫০ টাকা। আরও রয়েছে নামী একটি ব্র্যান্ডের ট্যাগ। ঘেঁটেঘুঁটে দেখে একজন ক্রেতা টি-শার্ট দুটি পছন্দ করলেন। দোকানির কাছে জানতে চাইলেন, ‘দাম কি ফিক্সড?’ দোকানি ডানে-বাঁয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে জানালেন, না, দরদাম করা যাবে। ব্যাপক দরদামের পর ওই ক্রেতা টি-শার্ট দুটি কিনে নিলেন। প্রথমটির দাম পড়ল ৫৫০ টাকা। অন্যটি ৪০০ টাকা।
কেনাবেচার এই দৃশ্য দেখা গেল রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনের পল্লবী এ ব্লক এলাকার একটি মার্কেটে। এটা স্থানীয় লোকজনের কাছে ‘নান্নু মার্কেট’ নামে পরিচিত। মার্কেটের র্যাপিড ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে দোকানটির বিক্রয়কর্মী সিফাত রহমানের কাছে জানতে চাই, একদরে বিক্রি না করলে টি-শার্টের গায়ে দাম লেখা রয়েছে কেন?
জবাবে সিফাত বললেন, নামীদামি অনেক বিপণিবিতান বা বিক্রয়কেন্দ্রে (শোরুম) এসব টি-শার্ট একদরে বিক্রি হয়। তাই ওগুলোতে দাম উল্লেখ রয়েছে। কারখানা থেকেই সরাসরি এসব টি-শার্ট তাঁদের কাছে আসে। তাই তাঁরা কম দামে বিক্রি করতে পারেন।
শুধু মিরপুরের মানুষ নন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই কেনাকাটার জন্য নান্নু মার্কেটে আসেন। এমনকি ঢাকার বাইরে থেকেও অনেকে সময় করে এখানে আসেন, কেনাকাটা করেন। নান্নু মার্কেট মূলত বিদেশি ক্রেতাদের কাছে রপ্তানির জন্য দেশের বিভিন্ন কারখানায় তৈরি পোশাক সাশ্রয়ী দামে বিক্রির জন্য বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয় বাজারের জন্য তৈরি পোশাকও এখন দোকানে দোকানে বিক্রি হয়। এখানে প্রায় ১৭০টি দোকান রয়েছে।
যেভাবে গোড়াপত্তন
নাম নান্নু মার্কেট হলেও এই বিপণিবিতানের যাত্রা কোনো পরিকল্পিত বাণিজ্যিক প্রকল্প হিসেবে শুরু হয়নি। ধাপে ধাপে একটি উন্মুক্ত পার্কের জায়গায় এই মার্কেট গড়ে উঠেছে। জায়গাটি একসময় স্থানীয় শিশু-কিশোরদের খেলার জায়গা এবং খোলা স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পরে ওই জায়গায় ছোটখাটো দোকান গড়ে উঠতে শুরু করে।
১৯৯৮ সালের দিকে এই জায়গায় ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী দোকান বসাতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে এটি একটি স্থায়ী মার্কেটে রূপ নেয়। মার্কেটটি নিয়ন্ত্রণ করতেন তৎকালীন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রউফ নান্নু। তাঁর নামেই ওই মার্কেট ‘নান্নু মার্কেট’ নামে পরিচিতি পায়। পরে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় লোকজনের অনেকে পার্ক দখলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও শেষ পর্যন্ত মার্কেটটি থেকে যায়। ক্রমেই ব্যবসায়িক কার্যক্রম জমে ওঠে।
নান্নু মার্কেটে নারী, পুরুষ ও শিশুদের জন্য জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, টি-শার্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, পালাজ্জো, টপস, লেগিংসসহ বিভিন্ন পোশাক পাওয়া যায়। গাজীপুর, আশুলিয়া বা সাভার এলাকায় বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা থেকে এসব পোশাক আনা হয়।
মিরপুরের নান্নু মার্কেটে শিশুদের পোশাক দেখছেন একজন ক্রেতা