ঢাকার বায়ু আজ অস্বাস্থ্যকর, সুরক্ষায় যা করতে হবে
Published: 20th, March 2025 GMT
বিশ্বের ১২৪টি নগরীর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বায়ুদূষণে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে রাজধানী ঢাকা। আজ সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার গড় বায়ুমান ১৫২। এ মানকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়।
ঢাকার মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় আজ বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি।আইকিউএয়ারের মানসূচকে সেখানকার গড় বায়ুমান ১৮০। এরপর রয়েছে সাভারের হেমায়েতপুর (১৭৯) এবং পুরান ঢাকার বেচারাম দেউরি (১৬৭)।
বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
আজ আইকিউএয়ারের দেওয়া সতর্কবার্তায় ঢাকাবাসীর উদ্দেশে পরামর্শ, বাইরে বের হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। আরও একটি পরামর্শ, ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
আজ সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে বায়ুদূষণে শীর্ষে আছে আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স শহরটি। সেখানকার বায়ুর মান ২০৬।
গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এক দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী। চলতি মাসেরও একই হাল।
রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে আছে কলকারখানা ও যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো। দূষণ রোধে হাঁকডাক এবং নানা ধরনের প্রকল্পও কম হয়নি সরকারি স্তরে, কিন্তু দূষণ কমছে না।
দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। আবার গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও দূষণের মান ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইক উএয় র
এছাড়াও পড়ুন:
'গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, মনটা ভরি গেইল'
‘বাহে, শনিবার রাইত ১০টার সময় ছাওয়াটার ব্যথা ওঠে। সে কি ব্যথা, আতালি পাতালি। গ্রামের দাই আসি অনেক চেষ্টা করিল। কই, কিছুই তো হইল না। এলা কি করং, অতো রাইতত হাসপাতাল যাইম কেমন করি! গাড়ি, ঘোড়া, রিকশা-কিছুই নাই। তারপর একখান অটোরিকশা জোগাড় করি ভোর ৫টার সময় ফুলবাড়ি থাকি লালমনিরহাট রওনা হইনো। শহরের সাপটানা বাজারের ক্লিনিকে হাজির হই হামরাগুলা। ক্লিনিকের লোকজন অপারেশন করি মোর ছোট নাতনিক দুনিয়ার মুখ দেখায়ছে।'
নববর্ষের প্রথম প্রহরে জন্ম নেওয়া নাতনির সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। বলতে থাকেন, ''বাহে, হামরা গরিব মানুষ, অতো কিছু বুঝি না, তোমরাগুলা এই গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, তাতে মনটা ভরি গেইল। হাউস করি নাতনির নাম রাখমো ‘বৈশাখি’।’’
লালমনিরহাট শহরের খোদেজা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সোমবার সকাল ৬টায় শাহ আলম ও হামিদা দম্পতির কোলজুড়ে আসে কন্যাশিশু। বাংলা বছরের প্রথম দিনে সন্তান উপহার পেয়ে তাদের পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। এটি তাদের দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। বড় মেয়ে শিমু নার্সারি শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা কুমারপাড়া গ্রামের শাহ আলম মিয়া বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুরোনো খাতাপত্র, পত্রিকা, ভাঙ্গা টিন কিনে শহরে তা বিক্রি করেন। দিনে তিন থেকে চারশ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। পাঁচ শতকের বসতভিটায় তিন ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে তিনি বসবাস করেন। বসতভিটার ওইটুকু জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই তার। তাই সন্তানকে ক্লিনিকে রেখে টাকার সন্ধানে ছুটছেন। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে হবে। শাহ আলম বলেন, ‘মুই বাহে হকার, দিন আনি দিন খাই। হামার নববর্ষ বলি কিছু নাই। দোয়া কইরবেন ছাওয়াক মুই নেখাপড়া শিখাইম। দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই। আল্লাহ সুস্থ রাখছে, তাতে হামরা খুশি।'
শাহ আলমের এসব কথা শুনে ক্লিনিকের বিছানায় শুয়ে থাকা নবজাতকের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করেছি। বাবা অটোরিকশা চালান। অভাবের সংসারে ইচ্ছা থাকার পরও লেখাপড়া করতে পারিনি। ২০১৪ বিয়ে হয়। পরের বছর প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।' দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বজিৎ জানান, বাড়িতে অনেক চেষ্টা করেও হামিদার নরমাল ডেলিভারি করাতে পারেনি পরিবার। সময় ক্ষেপণ করায় বেশ সমস্যা হয়েছিল। পরে অস্ত্রোপচার করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য। তাকে সহায়তা করেন ডা. হাবিব। ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য জানান, মা ও শিশু এখন সুস্থ রয়েছে।