রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণের সুদ পরিশোধে জটিলতার অবসান হচ্ছে না। রাশিয়ার ব্যাংকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা সুইফট সিস্টেমের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরাসরি অর্থ পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তবে বিকল্প কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা কাজে আসেনি।

সর্বশেষ সোনালী ব্যাংকে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট কোম্পানির বৈদেশিক মুদ্রা (এফসি)  হিসাবে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সোনালী ব্যাংক শেষ পর্যন্ত রাজি হয়নি। সোনালী ব্যাংক জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানের হিসাবে অর্থ পরিশোধ করলে বিদেশি করেসপন্ডিং ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা সার্বিক ব্যাংকিং তথা দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ সরকার এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে ২০১১ সালের নভেম্বরে ঋণ চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী মোট ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার প্রকল্প ব্যয়ের ১০ শতাংশ, অর্থাৎ ১ দশমিক ২৬৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ অগ্রিম হিসেবে দেবে। বাকি ৯০ শতাংশ, অর্থাৎ ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে রাশিয়া সরকার। ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদনে বাংলাদেশের পক্ষে সোনালী ব্যাংক এবং রাশিয়ার পক্ষে ভনেশইকোনোম ব্যাংকের (নতুন নাম ভিইবিআরএফ) মধ্যে গত ২০১৬ সালের জুলাইয়ে একটি আন্তঃব্যাংক চুক্তি হয়।

এর পর ২২ কিস্তিতে অগ্রিমের ১ দশমিক শূন্য ৭৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে সোনালী ব্যাংক। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ভিইবিআরএফের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে অগ্রিমের বাকি অর্থ এবং ঋণের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়। মূলত ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্তত ১০টি রুশ ব্যাংক সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন (সুইফট) সিস্টেম ব্যবহারে নিষিদ্ধ হয়। সুইফট মূলত মেসেজিং নেটওয়ার্ক সরবরাহ করে, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেন করা হয়।

এমন পরিস্থিতিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণের সুদ ও অগ্রিম পরিশোধ করতে না পারায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এসক্রো অ্যাকাউন্টে এ বাবদ প্রায় ৮০৯ মিলিয়ন ডলার জমা হয়। কিন্তু রাশিয়া যে কোনো উপায়ে এই অর্থ নিজেদের জিম্মায় নিতে চায়। গত কয়েক মাসে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি। এসব বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুর পাশাপাশি বাংলাদেশে রাশিয়ার ব্যাংক শাখা খোলার অনুমতি চাওয়া হয়। তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে এটি সম্ভব হয়নি।

এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বিকল্প পদ্ধতিতে বকেয়া পরিশোধের তাগিদ অব্যাহত রয়েছে। গত  ডিসেম্বরে ঢাকায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো.

শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত অক্টোবরে উভয় দেশের মধ্যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ব্যাংক অব চায়নায় একটি এসক্রো হিসাব খোলার প্রস্তাব পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসক্রো হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে তৃতীয় পক্ষ অস্থায়ীভাবে লেনদেনের অর্থ জমা রাখে। লেনদেনের অর্থ তৃতীয় পক্ষের অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়। তার পর চুক্তির সব শর্ত পূরণ হলেই তা সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছে পাঠানো হয়। ডিসেম্বরের বৈঠকে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি জানান, ব্যাংক অব চায়না জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক এ হিসাব খুলতেই পারে। তবে সে হিসাবের মাধ্যমে রাশিয়াকে অর্থ পরিশোধ করা যাবে না। 

বৈঠকে সচিব শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী জানান, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ ও সুদ পরিশোধ পেছানোর জন্য রাশিয়াকে প্রস্তাব পাঠায় বাংলাদেশ। কিন্তু এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি দেশটি। বরং বিকল্প পদ্ধতিতে সোনালী ব্যাংকে প্রকল্পের রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট কোম্পানির এফসি হিসাবে পরিশোধের প্রস্তাব দেয় রাশিয়া। এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট কোম্পানির অর্থ পরিচালক  সোনালী ব্যাংকের এফসি হিসাবের মাধ্যমে তাদের স্থানীয় ও বিদেশি সাব-কন্ট্রাক্টর প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিশোধের প্রস্তাব দেন। তবে বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি জানান, এ ধরনের অ্যাকাউন্ট থেকে ডলার বিনিময়ের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের স্টেটমেন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়, যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক মনিটর করে। ফলে এ ধরনের লেনদেন সম্ভব হলেও সুইফট নিষেধাজ্ঞা থাকায় তা নিরাপদ নয়। তার পরও বৈঠকে রাশিয়ার চাহিদা অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকের এফসি হিসাবের মাধ্যমেই পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। 

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,  বাংলাদেশ ব্যাংকের এসক্রো অ্যাকাউন্টে জমা থাকা ডলার থেকে সুদ পরিশোধ বাবদ ১০ মিলিয়ন ডলার সোনালী ব্যাংকে এফসি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। একই সঙ্গে সোনালী ব্যাংককে পরিশোধে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এ অর্থ পরিশোধের বিষয়ে  সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী সম্প্রতি ইআরডিকে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, স্থানীয় কিছু সাব-কন্ট্রাক্টর প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৪ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করা হয়। তবে বিদেশি সাব-কন্ট্রাক্টরকে ২ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ করার জন্য সোনালী ব্যাংক তাদের বিদেশি করেসপন্ডেন্ট  তিনটি ব্যাংকের  স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা আসন্ন ঝুঁকি বিবেচনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট লেনদেন তাদের মাধ্যমে করতে অস্বীকৃত জানান। 

সোনালী ব্যাংক আরও জানিয়েছে, সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ক্রস বর্ডার লেনদেন সোনালী ব্যাংকের জন্য অন্ত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া আলোচ্য বৈদেশিক লেনদেনটি কার্যকর হলে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে অন্যান্য করেসপন্ডিং ব্যাংকের সম্পর্ক বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা সার্বিক ব্যাংকিং তথা দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।   

এমন প্রেক্ষাপটে অন্য কোনো উপায়ে বকেয়া পরিশোধের পথ খুঁজতে ১১ মার্চ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। সে বৈঠকে যৌক্তিক সমাধান পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান সমকালকে বলেন, ঝুঁকি ও ঝামেলামুক্ত উপায় কীভাবে পরিশোধ করা যায়, তার উপায় খোঁজা হচ্ছে। 

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন সমকালকে বলেন, এ জটিলতা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো কারণে হয়নি। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই এর দায় রাশিয়ার দিকেই থাকা উচিত। বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে হবে, এ বকেয়া পরিশোধ করতে গিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য যেন না হয়। 
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ২০১৭ সালে রাশিয়ার এ ঋণের অর্থ আসা শুরু হয়। ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ড শেষে ২০২৭ সালের ১৫ মার্চ ঋণের মূল কিস্তি (আসল পরিশোধ) শুরু হওয়ার কথা। প্রতিবছর ছয় মাস পরপর দুই কিস্তিতে মোট ৩৮ কোটি ডলার আসল পরিশোধ করতে হবে। এর সঙ্গে ১১ কোটি ডলার সুদ। অবশ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুদ ও আসলের পরিমাণ কমবে বা বাড়বে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স দ পর শ ধ পর শ ধ র ঋণ র স দ অন য য় র জন য ল নদ ন দশম ক এসক র

এছাড়াও পড়ুন:

আমাকে হয়রানির জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: টিউলিপ

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগ করেছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ সিদ্দিক। দুদকের করা একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এ অভিযোগ করেছেন তিনি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনার শাসন আমলের নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ বড় পরিসরে তদন্ত শুরু করে দুদক। তার অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করছে সংস্থাটি।

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পর আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’–এর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগের মামলায় দুদকের অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গতকাল রোববার টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।

আজ সোমবার গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে লন্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা “মিডিয়া ট্রায়াল” চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনো এর জবাব দেয়নি।’

টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য এক দেশ আরেক দেশের কাছে আবেদন করতে পারে। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ‘২বি’ প্রত্যর্পণ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত। এর অর্থ প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্তের জন্য যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী ও বিচারকদের সামনে অবশ্যই স্পষ্ট প্রমাণ তুলে ধরতে হবে।

আরও পড়ুনতারিক সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক ও সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু১৫ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনপদত্যাগ করেছেন টিউলিপ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের একজন মুখপাত্র বলেন, তিনি একক ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করবেন না। আর গতকাল রোববার টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীরা বলেছেন, দুদক বিগত কয়েক মাসে ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে’ টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ‘বিভিন্ন অভিযোগ’ এনেছে।

বিবিসির নজরে আসা এক বিবৃতিতে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী স্টিফেনসন হারউড বলেছেন, ‘অভিযোগগুলো পুরোপুরি মিথ্যা এবং টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীরা সেগুলো লিখিতভাবে মোকাবিলা করছেন।’

শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৩৯০ কোটি পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুদক। এ তদন্ত করা হচ্ছে ববি হাজ্জাজ নামে একজনের ধারাবাহিক অভিযোগের ভিত্তিতে, যিনি শেখ হাসিনার বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সদস্য।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনা, রেহানা, টিউলিপ, রাদওয়ানসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা১৩ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনটিউলিপের বিরুদ্ধে জাল সই ব্যবহার করে বোনের নামে ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তরের অভিযোগ১৪ মার্চ ২০২৫

বিবিসির নজরে আসা আদালতের নথি অনুযায়ী, ববি হাজ্জাজ অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতায় সহায়তা করেন টিউলিপ সিদ্দিক। ওই চুক্তিতে বাংলাদেশে একটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যয় বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল।

দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন, অভিযোগগুলোয় কোনোভাবেই কাউকে ‘নিশানা’ করে করা হয়নি এবং সেগুলো ‘ভিত্তিহীন নয়’। ‘দুর্নীতির দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে’ তদন্ত করা হচ্ছে।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশের আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকা ঠিক হবে না। আমি টিউলিপ সিদ্দিককে (বাংলাদেশে) এসে সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো আইনি সহায়তা নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য স্বাগত জানাব।’

আরও পড়ুনগুলশানে বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দার তালিকায় ছিল টিউলিপের নাম০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনলন্ডনে টিউলিপের ব্যবহৃত সেই ফ্ল্যাট কেনা হয় অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে১২ জানুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ