সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম পর্যায়ে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বেলা ৩টায় এলডিপির সঙ্গে আলোচনার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনার সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৬ মার্চ ৩৭টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি ও ‘স্প্রেডশিট’ পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। ১৩ মার্চের মধ্যে তাদের মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ১৫টি দল তাদের মতামত জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল তাদের পূর্ণাঙ্গ মতামত আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জানাবে বলে কমিশনকে জানিয়েছে।

কমিশন আগেই জানিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাথমিক মতামত পাওয়ার পর দলগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা আলোচনা করা হবে। যারা ইতিমধ্যে মতামত দিয়েছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। এরপর যারা মতামত দেবেন, ক্রমান্বয়ে তাদের আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই ছয়টি কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব কমিশনের প্রধানদের নিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে সরকার। ঐকমত্য কমিশন বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশে একমত হবে, সেগুলোর ভিত্তিতে তৈরি হবে ‘জুলাই চার্টার’ বা জুলাই সনদ।

সূত্র জানায়, প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা কম। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন। সব দলের সঙ্গে আলাদা আলোচনা শেষে সব দলকে একসঙ্গে নিয়ে আরেক দফা আলোচনা হবে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন।

পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল। প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। প্রথমটি হলো সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে একমত কি না। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো ‘একমত’, ‘একমত নই’ এবং ‘আংশিকভাবে একমত’। এ তিনটি বিকল্পের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে বলা হয়।

দ্বিতীয়তটি হলো প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ছয়টি ঘর রয়েছে। সেগুলো হলো সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়ন-‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এসব ঘরের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর ‘মন্তব্য’ দেওয়ার একটি জায়গা রাখা হয়েছে।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ঐকমত য মত মত চ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে রোববার মত জানাবে বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়া পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে নিজেদের মতামত দেবে বিএনপি। গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, মতামত জমা দেওয়ার পর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

এর আগে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু ও বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। নির্বাচনের সময়সূচি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন সবাই ধরেই নিয়েছে ডিসেম্বর নির্বাচন হচ্ছে। এর পরে যাওয়ার সুযোগ নাই। নির্বাচনের জন্য অনেকের মতে ডিসেম্বর অনেক দেরি হয়ে গেলেও কাট অফ টাইম হিসেবে ধরে নিয়েছে ডিসেম্বর। সবার ধারণা, ডিসেম্বর মধ্যে নির্বাচন হলে আমরা সঠিক পথে থাকব।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবস্থা, বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেসব সংস্কার প্রসঙ্গে ঐকমত্য হবে সেগুলো বাস্তবায়ন হবে। আর যেসব সংস্কার প্রসঙ্গে ঐকমত্য হবে না সেগুলো জনগণের মতামত নিয়ে জাতীয় নির্বাচনের পর সংসদে আলোচনা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে রোববার মত জানাবে বিএনপি
  • নির্বাচন বিলম্বিত হয় এমন সংস্কারকে ‘না’ বলবে বিএনপি
  • সংস্কারের মত এখনও জানায়নি বিএনপি জামায়াত এনসিপি
  • ইউক্রেনে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধে পুতিনের সম্মতি
  • ট্রাম্প-পুতিন দু’জনই স্থায়ী শান্তিতে সমাধান খুঁজলেন
  • জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধে পুতিনের সম্মতি
  • রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শুরু বৃহস্পতিবার
  • পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের আগে ট্রাম্প বললেন, ‘অনেক বিষয়ে’ আমরা একমত হয়েছি
  • সংস্কারের ১০৮টি সুপারিশের সঙ্গে একমত এবি পার্টি, দ্বিমত ৩২টিতে