রংপুরের বেনারসি শাড়িকে সম্ভাব্য ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে বিবেচনায় নিতে গত বছরের ২৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয় পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর। চিঠিতে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেলে রংপুরের বেনারসি শাড়ির বাণিজ্যিক গুরুত্ব বৃদ্ধি ও উৎপাদনকারীদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কথা জানানো হয়।

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বেনারসিপল্লিতে গিয়ে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। লোকসান দিতে দিতে বেনারসি শাড়ির উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁতযন্ত্রের মালিকেরা। বেশির ভাগ মালিক ঘর থেকে তাঁতযন্ত্র সরিয়েও ফেলেছেন। যে দু-একটি বাড়িতে তাঁতযন্ত্র আছে, সেগুলোতেও দুই থেকে তিন বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ।

তাঁতযন্ত্রের মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর বিয়ের মৌসুম। এ সময় রংপুরের বেনারসি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা থাকত। তখন তাঁতযন্ত্রের খটখট শব্দে মুখর থাকত পুরো এলাকা। কিন্তু আগের চিত্র এখন নেই। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, ভারতীয় শাড়ির আধিপত্য ও পুঁজির সংকট রংপুরের বেনারসিশিল্প বিলুপ্ত হওয়ার অন্যতম কারণ।

রংপুর শহর থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তরে গঙ্গাচড়ার গজঘণ্টা ইউনিয়নের তালুক হাবু গ্রাম। এই গ্রামের আবদুর রহমান ১৯৯৭ সালে প্রথম দুটি তাঁতযন্ত্র বসিয়ে বেনারসি শাড়ি বুননের কাজ শুরু করেন। তাঁর দেখাদেখি এক বছরেই ৬৭টি তাঁতযন্ত্র বসে। কয়েক বছরের মধ্যে গ্রামটিতে তাঁতযন্ত্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩৫০টি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রংপুর অঞ্চলের অভাবপীড়িত ও পিছিয়ে পড়া একটি গ্রামে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে বেনারসি শাড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায়। নারী-পুরুষ সবাই মিলে কর্মমুখী হয়ে ওঠেন। মানুষের মুখে মুখে তালুক হাবু গ্রামের নাম পাল্টে ‘বেনারসিপল্লি’ হয়ে যায়।

রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেনারসিপল্লি একসময় তাঁতযন্ত্রের খটখট শব্দে মুখর থাকত। এখন সবই অতীত.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য সারওয়ার দিনাজপুরে গ্রেপ্তার

দিনাজপুরে আত্মগোপনে থাকা গাইবান্ধা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ সারোয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে জেলা শহরের ঈদগাহ আবাসিক এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফাত হুসাইন বলেন, শাহ সারোয়ার কবিরের আত্মগোপনে থাকার তথ্য পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি ১ মার্চ থেকে দিনাজপুরে তার বোনের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় দুটি মামলা আছে। তাকে গাইবান্ধা জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করাত প্রক্রিয়াধীন। 

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, গত ৪ আগস্ট গাইবান্ধা জেলা বিএনপি ও যুবদলের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলার পলাতক আসামি সাবেক এমপি শাহ সরোয়ার কবির। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিনাজপুর গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাইবান্ধায় আনার পর সদর থানার মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।

শাহ সারোয়ার কবির গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ