সাভারে ভুয়া সন্দেহে এসআই অবরুদ্ধ, মোটরসাইকেল ভাঙচুর
Published: 20th, March 2025 GMT
ভুয়া পুলিশ সন্দেহে সাভার থানার উপপরিদর্শককে (এসআই) অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়িয়া শোভাপুর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে সাভার মডেল থানার অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে এসআইকে উদ্ধার করে।
পুলিশের কাছে আটক নাসির উদ্দিনের ছেলে নাহিদ হোসেন জানান, রাজফুলবাড়িয়া শোভাপুর মহল্লায় তাদের ১৩টি ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন পরপর পুলিশ পরিচয়ে এসে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি বলে ভাড়াটিয়াদের কাছে টাকা দাবি করে। এর আগেও একদিন পুলিশ পরিচয়ে দু’জন লোক সাদা পোশাকে এসে এক ভাড়াটিয়াকে আটক করে ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে ভাড়াটিয়ারা মালিকদের বিষয়টি জানান। বাড়ি ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে চান। তখন মালিকরা বলেন, এর পর কেউ এলে খবর দিতে। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার আবার পুলিশ পরিচয়ে বাসায় কয়েকজন লোক এলে ভাড়াটিয়ারা জানান। মালিকরা পুলিশ পরিচয়ে আসা ব্যক্তিদের একটি ঘরে বসিয়ে রেখে বিষয়টি পাশের ট্যানারি ফাঁড়ির পুলিশকে জানান।
অবরুদ্ধ থাকা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান বলেন, ‘গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলার আসামি সাভারে অবস্থান করছে। পরে তথ্য অনুযায়ী গিয়ে দেখি সেখানে ওই মামলার আসামি কেউ নেই। ফিরে আসার সময় স্থানীয়রা আমাকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে ট্যানারি ফাঁড়ি ও সাভার থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে দুই গাড়ি পুলিশ গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে। পরে কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখি আমার মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেছে।’
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ফেসবুকে, থানা থেকে প্রত্যাহার
সিলেটের বিশ্বনাথ থানার এক উপপরিদর্শকের (এসআই) ঘুষের টাকা নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যাহার হওয়া ওই এসআইয়ের নাম আলীম উদ্দিন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে সিলেট পুলিশ সুপারের আদেশে আলীম উদ্দিনকে সিলেট পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এর আগে গতকাল দুপুরের দিকে ফেসবুকে আলীম উদ্দিনের ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি টিনের চালার ঘরে বসে আছেন দুই ব্যক্তি, সামনে টেবিল। দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন পোশাকধারী পুলিশ সদস্য। তবে অন্যজনকে দেখা যাচ্ছে না। তবে তাঁর কথা শোনা যাচ্ছে। এ সময় একজনকে টাকা গুনে পুলিশ সদস্যের হাতে দিতে দেখা যায়।
পুলিশ সদস্যকে টাকা দেওয়ার সময় ভিডিও করা ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘বিশ হাজার আছে রাখুক্কা এখন। আর ইয়ো...খিতা...না কই বিশ রাখুক্কা।’ এ সময় পুলিশ সদস্যকে বলতে শোনা যায়, ‘বিশই লাগব।’ টাকা দেওয়া ব্যক্তি বলেন, ‘ইয়ো করতা ওইবা আমারে ছাড়া চার্জশিটর...আমি হিনো গিয়া নকল তুলতে পারতাম না, আপনে ইনো দিলাইতা ওইবা।’ এ সময় ওই পুলিশ সদস্য এতে সায় না দিলে ভিডিওতে তৃতীয় এক ব্যক্তিকেও পুলিশ সদস্যকে অনুরোধ করতে শোনা যায়। ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘সোনা মামানু রেবা।’ টাকা দেওয়া ব্যক্তি বলেন, ‘আপনে ইনো দিলাইবা আমি কইমু কোর্ট তনে তুলছি।’ পুলিশ সদস্য বলেন, ‘আমি ইনো দিলে তুমারে সই ছাড়া দিমু।’ এ সময় টাকা দেওয়া ব্যক্তি বলেন, ‘এমনেই তো ওয়...অন্যখানতনে তুলতাম টাকা দি। তে মামু-ভাগনা খাই না কেনে, খাইয়া ইয়ো করি না কেনে, ইগু কিজাতের মাত।’ এ সময় পুলিশ সদস্য বলেন, ‘সই ছাড়া...সই ছাড়া। টাকা দেওয়া ব্যক্তি বলেন, আমি কোর্ট তাকি তুললে...কোর্ট তাকি তো তুলমু সইসহ।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর ২৮ আগস্ট বিশ্বনাথ থানায় দায়ের করা একটি মামলার আসামিদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এসআই আলীম উদ্দিন আসামিপক্ষের কাছ থেকে চার কিস্তিতে লাখ টাকা ঘুষ নেন। ওই টাকা দেন উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের ফয়সল আহমদ (৩২)। ঘুষ নেওয়ার পরও আসামি গ্রেপ্তার করেন আলিম উদ্দিন। টাকা দিয়েও কাজ না হওয়ায় ফয়সল আহমদ ঘুষের টাকা ফেরত চাইলে তাঁকে বিভিন্ন মামলায় হাজতে ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান এসআই। এ ঘটনায় ফয়সল আহমদ গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর আলীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
সিলেটের বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, অভিযুক্ত এসআই আলীম উদ্দিনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।