কার্ড ভাগাভাগি বৈষম্যবিরোধী জামায়াত ও বিএনপির
Published: 20th, March 2025 GMT
জয়পুরহাটে দুস্থদের ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) বিশেষ সহায়তার কার্ড ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি, জামায়াত ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে। কার্ড বিতরণের আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
জয়পুরহাট পৌরসভায় এবার ভিজিএফ বরাদ্দ এসেছে ৪৬ দশমিক ২১ টন চাল। এ চাল ৪ হাজার ৬২১টি কার্ডের বিপরীতে জনপ্রতি ১০ কেজি হিসেবে বিতরণের সিদ্ধান্ত হয়। কার্ড বিতরণের কাজটি সরকারের কর্মকর্তারা তদারক করে থাকেন। তালিকাও করেন তারা। এবার এ কাজে বাদ সাধেন বিএনপি-জামায়াত ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা। পৌর পরিষদে উপস্থিত হয়ে এই তিন সংগঠনের নেতারা তাদের মধ্যে কার্ড বণ্টনের দাবি জানান। চাপের মুখে পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ দাবি মেনে নেন। পরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন ১ হাজার ৬০০টি, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ওহাব ৪৫০টি, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি হাসিবুল আলম লিটন ৪৫০টি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক হাসিবুল হক সানজিদ ৩৮০টি ভিজিএফ কার্ড পেয়েছেন।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানায়, কার্ড বিতরণে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক লায়লুন নাজমা বেগম দায়িত্বে রয়েছেন। ভিজিএফের চাল বিতরণের কথা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ তাদের মৌখিকভাবে জানালেও এ-সংক্রান্ত কোনো সভা হয়নি। দুস্থদের কোনো তালিকাও তাদের দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তাদের কয়েকজন জানান, বিএনপি, জামায়াত এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দলীয় কোটার ভিত্তিতে কার্ডগুলো হাতিয়ে নিয়েছেন।
সমাজসেবা কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান জানান, বিএনপি, জামায়াত ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কার্ডের তালিকা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ ওহাব জানান, তারা দুই হাজার কার্ড পেয়েছেন। সেগুলো দুস্থদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেছেন। জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি হাসিবুল আলম লিটন জানান, তাদের ৪৫০টি কার্ড দেওয়া হয়েছে। কার্ডগুলো পৌর জামায়াতের দায়িত্বশীলদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা সেগুলো বিতরণ করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক হাসিবুল হক সানজিদ জানান, তারা ৩৮০টি কার্ড পেয়েছেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, ভিজিএফের তালিকা প্রস্তুতের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তবে দলীয়ভাবে তালিকা করার সুযোগ নেই। ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব তরণ র ব এনপ র ভ জ এফ প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
হুমকি না থাকলেও বর্ষবরণে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। এ উৎসবকে ঘিরে কোনো ধরনের হুমকি না থাকলেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ পুরো ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রধান সড়ক থেকে অলি গলিতেও গোয়েন্দা নজরদারি করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও নববর্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশে র্যাবের সব সদস্য নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছেন।
সকালে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, র্যাব সারা দেশে ২২৪টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটরসাইকেল টহলসহ সর্বমোট ৩৪৬টি টহল ও সাদা পোশাকে ৪১৩ জন সহ সর্বমোট ২৪৪৯ জন র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন উগ্রবাদী গোষ্ঠী, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন এবং রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কুচক্রী মহল যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে নাশকতাকারীদের যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।”
ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের গুজব, উস্কানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম নজরদারি অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা/এমআর/ইভা