ভুক্তভোগীর চরিত্রগত সাক্ষ্য নিষিদ্ধের দাবি
Published: 20th, March 2025 GMT
ধর্ষণ মামলায় ভুক্তভোগীর চরিত্রগত সাক্ষ্যের ব্যবহার, দুই আঙুলি পরীক্ষা নিষিদ্ধ করাসহ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ১০ দফা দাবি জানিয়েছে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট। গতকাল বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ধর্ষণ ও নির্যাতন: আইনগত সুরক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানানো হয়। এতে ১৭টি সংগঠনের সদস্যসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজ্ঞ ও গবেষক উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ধর্ষণের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে স্বল্পমেয়াদি আটটি ও দীর্ঘমেয়াদি দুই দফা দাবি জানানো হয়। স্বল্পমেয়াদি দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধর্ষণ আইনের সংস্কার করা। ধর্ষণের সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করে বৈষম্যহীন করা এবং ধর্ষণের আইনে ‘পেনিট্রেশনকে’ সংজ্ঞায়িত করা। ধর্ষণ অপরাধে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা। বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জেন্ডার সংবেদনশীলতাবিষয়ক প্রশিক্ষণের আওতায় আনা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠক্রম সম্মতি সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা।
দীর্ঘমেয়াদি দাবিগুলো হলো শাস্তি অনুপাতে সাজা প্রদানের নির্দেশিকা প্রবর্তন করা এবং ধর্ষণ অপরাধে ভুক্তভোগী ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্র পরিচালিত ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠন করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়াবিষয়ক সুপারিশমালা তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ব্লাস্টের লিগ্যাল স্পেশালিস্ট আয়েশা আক্তার ও ব্লাস্টের সিনিয়র গবেষণা কর্মকর্তা ফাহাদ বিন সিদ্দিক।
আলোচনায় অংশ নেন ব্লাস্টের প্যানেল আইনজীবী ড.
বক্তারা বলেন, সম্প্রতি আশঙ্কাজনক হারে যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বেড়েছে। এসব প্রতিরোধ ও ধর্ষণ অপরাধে ভুক্তভোগী ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ধর্ষণ আইন সংস্কার প্রয়োজন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘বেশি কথা বলায় রিমান্ড বাড়ছে’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে মো. সায়েম হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৯ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
পরে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন তার আইনজীবীর ওপর বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছেন, “বেশি কথা বলতে নেই। বেশি কথা বলায় রিমান্ড বাড়ছে।”
গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানী থেকে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর পর দফায় দফায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর আগে বিভিন্ন মামলায় তার ৮৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। আজ আরো চার দিনের রিমান্ড দেওয়া হলো।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী মো. আব্বাস রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে মো. আব্বাস বলেন, “চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন পুলিশের সর্বোচ্চ দায়িত্বে ছিলেন। তিনি নির্দেশমতো দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি ৮৫ দিন রিমান্ডে ছিলেন। বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষ। তার রিমান্ড বাতিলেন প্রার্থনা করছি।” পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিকে, বুধবার চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে যাত্রাবাড়ী থানার আরো চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজার সামনে আন্দোলনে অংশ নেন মো. সায়েম হোসেন। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় তার মা শিউলি আক্তার গত ২৭ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/মামুন/রফিক