আদালতের আদেশে ২৫ হাজার কর্মী পুনর্বহাল
Published: 20th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২৫ হাজার নতুন সরকারি কর্মীকে ছাঁটাই করার কথা আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের পুনর্বহাল করার প্রক্রিয়া চলমান আছে বলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কর্মীদের ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় কিছু ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে, আদালতের এমন রায়ের পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
সোমবার রাতে বাল্টিমোর অঙ্গরাজ্যের আদালতে দাখিল করা নথিতে ১৮টি সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুনর্বহাল হওয়া এসব কর্মীকে আপাতত প্রশাসনিক ছুটিতে রাখা হয়েছে। সরকারি কলেবর ছোট করতে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই নিয়ে আগেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এবার আদালতে দাখিল করা নথিপত্রে প্রথমবারের মতো পুরো বিষয়টি স্বীকার করেছে সরকার।
ছাঁটাই কর্মসূচি নিয়ে গত ১৩ মার্চ মার্কিন বিচারক জেমস ব্রেডার এক রায়ে বলেন, শিক্ষানবিশ কর্মীদের ছাঁটাই করায় আইনের লঙ্ঘন হয়েছে। তাদের যত দ্রুত সম্ভব পুনর্বহাল করার আদেশ দেন তিনি। ওই রায়ে ছাঁটাই করার বিরুদ্ধে ব্রেডার অবস্থান নেননি। বরং ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় তিনি আপত্তি জানিয়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তির পর ব্রেডার বলেছেন, আদালতের রায় অনুসরণ করতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। কর্মীদের পুনর্বহালের বিষয়ে তাঁকে নিয়মিত অবগত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আদেশ দিয়েছেন তিনি। মার্কিন কৃষি বিভাগ, স্বাস্থ্য ও জনসেবা বিভাগ, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ, সাধারণ সেবা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা ইতোমধ্যে মেইলে পুনর্বহালের নোটিশ পেয়েছেন।
এদিকে সরকারি ব্যয় কমানোর অজুহাতে এবার সহস্রাধিক বিজ্ঞানী ও গবেষককে চাকরিচ্যুত করার উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের বিজ্ঞান, মহাকাশ ও প্রযুক্তিবিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিটি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স ও সিএনএনের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কেন আমাদের দ্বিতীয় রিপাবলিকের প্রস্তাব
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন দলের আবির্ভাব ঘটেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র ও তরুণ নেতাদের উদ্যোগে এ দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সমাবেশে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম পাঠ করেন ঘোষণাপত্র। ঘোষণাপত্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাষ্ট্রকল্প ফুটে ওঠে। তবে সেকেন্ড রিপাবলিক ও গণপরিষদের দাবিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার জন্যই গণপরিষদের দাবি সামনে আনা হয়েছে। এর মধ্যে দলটির কোনো কোনো নেতা ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পেতে চেয়েছেন।
যেকোনো নতুন দলের নতুন দাবি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কিছু পাল্টাপাল্টি বাক্যবিনিময় হওয়া স্বাভাবিক। তবে যে ভাষায় বিএনপির অনেক নেতাকে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেল, তা দুঃখজনক।
গণপরিষদের দাবির ব্যাপারে বিএনপির ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু গণপরিষদের দাবি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার দুরভিসন্ধি কীভাবে হয়, তা অস্পষ্ট। আসলে নতুন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, রাষ্ট্রকাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কার না করে শুধু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। নির্বাচনী ব্যবস্থা বাংলাদেশে অতীতেও ছিল। কিন্তু কোনো দলকেই বাধ্য করা ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত করা যায়নি। নির্বাচিত সরকারগুলোর হাত ধরেই এ দেশে অনির্বাচিত সরকার এসেছে। এ কারণে অনেক বিশেষজ্ঞ এই প্রক্রিয়াকে ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’ বলেন।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্টতই ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ বলতে কেবল সংসদ নির্বাচন বোঝেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোকে তাঁরা হয় আমলে নিতে চান না, অথবা এর সুবিধা ভোগ করতে চান। এ কারণে এমনকি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান অথবা নিদেনপক্ষে সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিও তাঁদের কাছে ‘ষড়যন্ত্র’ ঠেকে।
সম্প্রতি সম্পাদক নূরুল কবীর এক সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, নির্বাচিত গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন ও গণভোটের মাধ্যমে জনগণ কর্তৃক সেই খসড়া সংবিধানের অনুমোদনই রাজনৈতিকভাবে সঠিক পন্থা। এ প্রক্রিয়ায় যদি প্রকৃত অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন ও রাষ্ট্র সংস্কার করা সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ হবে বলে নূরুল কবীর মনে করেন। সেকেন্ড রিপাবলিকের দাবির মধ্যে ‘ষড়যন্ত্র’ আবিষ্কার করা রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ঘাটতি বলেও তিনি মত রাখেন। (সম্পাদকীয়, নিউ এজ, ২ মার্চ ২০২৫)
এ পর্যায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন দল এনসিপির সেকেন্ড রিপাবলিকের রূপকল্প আসলে কেমন?
প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান আন্দোলনে পূর্ব বাংলা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেও পাকিস্তান রাষ্ট্রে তারা শোষণ ও জুলুমের শিকার হয়। ফলে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশের জনগণ একদলীয় বাকশাল, সামরিক শাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে।
গত ১৫ বছর বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ান্ত ধ্বংস নিশ্চিত করেছেন গণহত্যাকারী হাসিনা। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র, আমলাতন্ত্র, মিডিয়া, সাংস্কৃতিক জগৎ ও অলিগার্ক ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল অপরাধীদের সিন্ডিকেট। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির রূপ লাভ করে। সব ক্ষেত্রেই মেগা দুর্নীতির রেকর্ড গড়ে তোলে এই সিন্ডিকেট।আশির দশকে সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রক্ত ঝরিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে ছাত্র-জনতা। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ঘোষিত তিন জোটের রূপরেখাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দলগুলো। সাময়িকভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থা হাসিল করা গেছে। কিন্তু প্রতিশ্রুত স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অধরাই থেকে গেছে। এর বড় কারণ, ১৯৭২ সালে প্রণীত একদলীয় ও স্বৈরতান্ত্রিক সংবিধান পরিবর্তনের কথা রাজনৈতিক দলগুলো কখনো বিবেচনা করেনি। বরং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনেই নির্বাচনী রাজনীতি এগিয়ে নিয়েছে।
এই ভুলের কারণে এমনকি নির্বাচনী ব্যবস্থাটুকুও নিরঙ্কুশ ও নিরবচ্ছিন্ন থাকেনি। নির্বাচিত সরকারের হাত ধরেই অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকার দেশ শাসন করেছে। এক-এগারোর বিরাজনৈতিকীরণ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক-এগারোর সম্প্রসারণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার আলোকেই বোঝা দরকার।
গত ১৫ বছর বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ান্ত ধ্বংস নিশ্চিত করেছেন গণহত্যাকারী হাসিনা। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র, আমলাতন্ত্র, মিডিয়া, সাংস্কৃতিক জগৎ ও অলিগার্ক ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল অপরাধীদের সিন্ডিকেট। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির রূপ লাভ করে। সব ক্ষেত্রেই মেগা দুর্নীতির রেকর্ড গড়ে তোলে এই সিন্ডিকেট।
আরও পড়ুনগণপরিষদ ও সেকেন্ড রিপাবলিক কেন০৮ মার্চ ২০২৫এই দীর্ঘ সময় জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ সঠিক নেতৃত্ব ও রাজনীতির অপেক্ষায় ছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি। তবে জনগণ ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণ জানে যে ভোটের দাবিতে আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। তাই ভোটের দাবিতে আন্দোলন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজের শক্তিতেই করতে হবে। তারা সফল হতে পারলে জনগণ অবশ্যই ভোট দেবে। কিন্তু এ দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকে জনগণ রাস্তায় নেমে জীবন দেবে না।
সম্পূর্ণ অপরিচিত ছাত্রনেতাদের ডাকে গত জুলাই মাসে কেন জনগণ রাস্তায় নেমে এল! এ সত্য আন্তরিকতার সঙ্গে অনুধাবন করা দরকার। এই ছাত্রনেতারা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অধীন নির্বাচনের দাবিতে জনগণকে রাজপথ দখল করতে বলেননি। তাঁরা ফ্যাসিবাদী সরকার ও ব্যবস্থার বিলোপের ডাক দিয়েছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে লাখো তরুণ রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের সমর্থনে আপামর জনতা তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ায়। এক দফা আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগ পরিণত হয় গুপ্ত দলে। ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
দেয়ালে দেয়ালে তরুণেরা লিখেছেন—‘বাংলাদেশ ২.০’, ‘স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনব’। তরুণদের এই আকুতি ও রূপকল্পগত দৃঢ়তাকে অবজ্ঞা করে নতুন বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি দাঁড়াবে না।
জনগণের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি নির্বাচিত গণপরিষদ গঠন করা প্রয়োজন। এর দায়িত্ব হবে রাষ্ট্রের পুনর্গঠন এবং নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন। নব্বইয়ে প্রতিশ্রুত স্থায়ী গণতান্ত্রিক ধারা চব্বিশে বাস্তবায়ন করতে হবে, যেখানে রাষ্ট্রের নাগরিকদের ভোটাধিকার অবাধ ও সুরক্ষিত থাকবে। প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীই একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হবেন না। সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটবে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হবে দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও জনসেবামুখী। আইনের দ্বারা বেআইনি শাসন নয়, বরং প্রকৃত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে সব নাগরিক সমান অধিকার ও মর্যাদা ভোগ করবে। লুটপাট ও বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ জনকল্যাণ নিশ্চিত করা হবে। সমাজ হবে দায় ও দরদের, যেখানে জনগোষ্ঠীর কোনো অংশকেই অপরায়ণের শিকার হতে হবে না। রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিককে সমান গুরুত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
এই পুনর্গঠিত রাষ্ট্রই হবে দ্বিতীয় রিপাবলিক। এর মানে অতীতে সব গৌরবজনক ইতিহাস ও লড়াই-সংগ্রামকে অস্বীকার করা নয়। সাতচল্লিশ, একাত্তর ও নব্বইয়ের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ঐতিহাসিক দায় চব্বিশের ওপর বর্তায়। একে স্রেফ ক্ষমতার হাতবদলে নামিয়ে আনলে তা হবে শহীদের রক্তের সঙ্গে চরম বেইমানি।
যাঁরা সংসদ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন, তাঁরা কেন গণপরিষদ নির্বাচনের প্রস্তাবে ‘ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পাচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়। এনসিপি এমন নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্য দিয়ে নির্বাচিতরা প্রথমে সংবিধান প্রণয়ন অথবা সংস্কার করবেন। তারপর সেই প্রণীত বা সংস্কারকৃত সংবিধানের অধীন দেশ পরিচালনা করবে তথা সংসদ হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকবে। বিদ্যমান বাস্তবতায় এনসিপির এ প্রস্তাব ঐতিহাসিক। এর মাধ্যমে ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবিও পূরণ করা সম্ভব হবে। সংস্কার ও নির্বাচন উভয়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের এর চেয়ে বাস্তবসম্মত ফর্মুলা আর হয় না। নতুন দাবি ও প্রস্তাবের মধ্যে ষড়যন্ত্র না খুঁজে নতুন দলের উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে হাজির থাকা মধ্যস্থতার সূত্র ধরে ঐক্যের পরিবেশ সৃষ্টিতে রাজনৈতিক দলগুলো এগিয়ে আসবে, এমন প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।
● সারোয়ার তুষার লেখক, গবেষক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি