বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার বিদ্যানন্দপুর ইউনিয়নসংলগ্ন কালাবদর নদীতে মৎস্য অধিদপ্তরের অভিযানকারী দল জেলেদের হামলার শিকার হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

অভয়াশ্রমগুলোতে ১ মার্চ থেকে দুই মাস ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা চলছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ধরা থেকে বিরত রাখতে গিয়ে অভিযানকারী দল হামলার শিকার হলো। 
অধিদপ্তরের অভিযানকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন ইলিশসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্লাহ। তিনি এ ঘটনায় বিদ্যানন্দপুর ইউনিয়নের ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৮০ থেকে ৮৫ জনকে আসামি করে কাজীরহাট থানায় মামলা করেছেন। 

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ইলিশের অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞার কার্যকরিতা পর্যবেক্ষণে  প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্লাহ গতকাল মেহেন্দীগঞ্জে যান। স্থানীয় নদীগুলোতে নিষেধাজ্ঞা অমান্যের অভিযোগ শুনে তিনি কোস্টগার্ডসহ হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জের মৎস্য কর্মকর্তাদের নিয়ে দুটি স্পিডবোটে অভিযানে নামেন। কালাবদর নদীর তীরে বিদ্যানন্দপুর ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝে একটি খালের মধ্যে ঢুকলে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে অভিযানকারী দল কথা বলছিল। ইলিশ নিধন বন্ধ রাখার সুফল সম্পর্কে জেলেদের অবহিত করছিলেন তারা। এ সময় একদল জেলে খালের দুই তীর থেকে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। জেলে পরিবারের বিপুল সংখ্যক নারীও এ হামলায় অংশ নেন। 

হামলারীদের ইটপাটকেলে অভিযানকারী দলে থাকা শ্রমিক নবীন দেওয়ান (২৪) ও রুবেল সরদার (২৬) আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে অভিযানকারী দল দ্রুত স্পিডবোটে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। গুরুতর আহত নবীনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

প্রতিবছর ইলিশ আহরণে একাধিক সময়ের নিষেধাজ্ঞায় ওই এলাকায় অভিযানে গেলে হামলা চালানো হয়। এর আগে গত অক্টোবরে হামলার ঘটনার মামলার আসামি ইমরান, ইলিয়াসসহ অন্যরা এবারও হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।

কাজীরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মৌসুমের আগেই চুরি হচ্ছে সুন্দরবনের মধু

সুন্দরবনে এখন ফুল ফোটার মৌসুম। বনের খলিশা, গরানসহ বহু গাছে শোভা পাচ্ছে ফুল। আর ফুল থেকে চাকে মধু জমা করতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে মৌমাছির। মধুর চাকগুলো পরিণত হওয়ার পর আগামী ১ এপ্রিল থেকে মৌয়ালদের মধু আহরণে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেবে বন বিভাগ। বৈধ অনুমতির আগেই জেলের বেশে কিছু অসাধু ব্যক্তি বনে ঢুকে অপরিণত চাক কেটে মধু সংগ্রহ করছেন। এতে পূর্ণ মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত মধু না পাওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন মৌয়ালরা।

গতকাল সোমবার সরেজমিনে সুন্দরবনসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, সুন্দরবন থেকে চুরি করে সংগ্রহ করা খলিশা ফুলের মধু চড়া মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। মৌয়ালদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে সুন্দরবনে খলিশা ও গরান ফুলের মধু আসে। এরপর আসে কেওড়া ফুলের মধু। এর মধ্যে সবচেয়ে দামি হচ্ছে খলিশার মধু।

কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ গ্রামের মৌয়াল আবুল কালাম জানান, মধু সংগ্রহ করতে মৌয়ালরা আগামী এপ্রিলের ১ তারিখে সুন্দরবনে ঢুকতে বন বিভাগের অনুমতি পাবেন। অথচ মার্চ মাসেই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় প্রতি কেজি সুন্দরবনের মধু বিক্রি হচ্ছে। মূলত বেশি দামের আশায় মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেরা এসব মধু সংগ্রহ করছেন। এর ফলে কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ে বনে ঢুকে প্রত্যাশিত পরিমাণ মধু সংগ্রহ নিয়ে তারা চিন্তায় পড়েছেন।

সম্প্রতি সুন্দরবনে মাছ ধরার অনুমতি (পাস) নিয়ে চুরি করে মধু আহরণের অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে বন বিভাগ। সুন্দরবনের আন্দারমানিক টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল হাছান বলেন, ‘আমরা সুন্দরবনের চামটার খাল ধরে টহল দিচ্ছিলাম। সেখানে জেলেদের তিনটি নৌকা তল্লাশি করে অবৈধভাবে আহরণ করা মধু, মোমসহ আনুসঙ্গিক মালামাল জব্দ করেছি। সেই সঙ্গে নৌকায় থাকা ছয় জেলেকে গ্রেপ্তার করে বন আইনে মামলা দিয়েছি।’

সুন্দরবনে মাছ ধরার অনুমতি (পাস) নিয়ে চুরি করে মধু আহরণের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে বন বিভাগ। সম্প্রতি সুন্দরবনের আন্দারমানিক টহল ফাঁড়ির কার্যালয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫৮ দিন সাগ‌রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
  • মৌসুমের আগেই চুরি হচ্ছে সুন্দরবনের মধু