পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর অর্ধগলিত গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর সোনাখালী গ্রাম থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড চৌকিদার কবির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মঙ্গলবার রাতে থানায় হত্যা মামলা করেন। 

থানা সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর সোনাখালী গ্রামের মিরাজ মিয়ার বসতবাড়ির পাশে বাগান থেকে ২৫ থেকে ৩০ বয়সী এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে থানা পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ২৫ থেকে ৩০ দিন আগে ওই নারীকে ঘটনাস্থলে এনে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে। ইতোমধ্যে সিআইডির একটি দল লাশের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহ করেছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে। 

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন সমকালকে বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য পার্শ্ববর্তী থানায় যোগাযোগ করা হয়েছে এবং দেশের সব থানায় বেতার বার্তা পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মঠব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ