শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে একটি নতুন সমাজ পেয়েছি। আমাদের দায় ও দরদ থেকে এ দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে। আমরা সুযোগ পেয়েছি নতুন চিন্তা করার, ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ গড়ার, যে সমাজের প্রতে৵কটি নাগরিক সমান।

আজ বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে শিক্ষা উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

সি আর আবরার বলেন, দেশে তিনটি ধারায় শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা একটি অন্যতম ধারা। এ শিক্ষার সঙ্গে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ ছাত্রছাত্রী ও দুই লাখ শিক্ষক সম্পৃক্ত। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও অসচ্ছল পরিবার থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের দেখভালের দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষকদের। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মেধা, যোগ্যতা, সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে তাদের কর্মক্ষম করে তোলার দায়িত্ব শিক্ষকদের।

বাংলাদেশ গঠন হওয়ার পর থেকে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যাঁরা শহীদ হয়েছেন এবং ’২৪–এর গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র, শ্রমিক, জনতা যাঁরা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমাদের গর্বের সঙ্গে মনে রাখতে হবে ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ থেকে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ’২৪–এর গণ-অভ্যুত্থানে মাদ্রাসা ছাত্রদেরও ভূমিকা ছিল।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম সিদ্দিকুর রহমান নিজামী, মিরপুরের মাদ্রাসা দারুর রাশাদের শিক্ষা পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ লিয়াকত আলী। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সমুদ্রসীমায় মাছ ধরায় কমলো নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ

প্রজনন মৌসুমে বাংলাদেশের জলসীমায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৬৫ থেকে কমিয়ে ৫৮ দিন করেছে সরকার। সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে মৎস্য গবেষক, জেলে ও ব্যবসায়ীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এতদিন ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হতো। তবে ভারতে প্রতিবছর মাছ ধরা বন্ধ থাকে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত। মিয়ানমারে নিষেধাজ্ঞার এই সময় ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। বাংলাদেশের জেলেরা যখন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ রাখেন, তখন প্রতিবেশী দেশের জেলেরা এ দেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ ধরেন। এ কারণে মৎস্যজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে নিষেধাজ্ঞার সময় সমন্বয়ের দাবি করে আসছিলেন। তাছাড়া ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন রয়েছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে আসছিলেন জেলে, মাছ ব্যবসায়ী ও গবেষকরা। তাদের দাবি মেনে এবার সেই নিয়ম প্রত্যাহারের কথা বলা হলো নতুন প্রজ্ঞাপনে।

ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের জলসীমায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিন্যাস করার বিষয়টিকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক মৎস্য গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের সাবেক গবেষক ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, এটা দেশের সামুদ্রিক মৎস্য খাতের জন্য সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এমন দাবি করে আসছিলাম। কারণ, আগে সরকার যে উদ্দেশ্যে এই নিষেধাজ্ঞা দিত, তা দু’দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় প্রতিবেশী দেশকে লাভবান করত। এটা আমাদের মৎস্য সম্পদের জন্য একটি বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ