দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ করলেও রিকশাচালকদের কথা বলে না। রিকশাচালকেরা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না।

বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে এমন অভিযোগ করেন একদল রিকশাচালক। এ সময় তাঁরা উচ্চ সুদের কিস্তির জাল থেকে মুক্ত করে তাঁদের সরকারি ঋণের আওতায় আনার দাবি তোলেন।

রিকশাচালকদের ভাষ্য, তাঁরা সমাজের সর্বোচ্চ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, অথচ কেউ তাঁদের কথা শোনার প্রয়োজন মনে করছে না।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন রিকশাচালক বলেন, ‘আমরা দিন-রাত রাস্তায় থাকি। শহরের সব কষ্ট আমরা দেখি, কিন্তু আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। নেতা-মন্ত্রীদের গাড়ির পাশে আমরা থাকি, কিন্তু আমাদের জন্য কোনো জায়গা নেই।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বেগুন নিয়ে মাথায় হাত সুন্দরগঞ্জের কৃষকের

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ বাজার। গতকাল বুধবার সকাল থেকে সেখানে বেগুন নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও যেন কেনার লোক নেই। কয়েকদিন আগেই প্রতি কেজি বেগুন ৮ টাকা বিক্রি করেছেন তারা।

এখন সেটা কমিয়ে ৫ টাকা কেজি দরে ছেড়ে দিচ্ছেন, তবু কেনার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ৫ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করলে লাভ তো দূরের কথা, ক্ষেত থেকে নিয়ে আসার পরিবহন খরচও উঠছে না। সব মিলে এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হলেও বিক্রি করতে গিয়ে মাথায় হাত সুন্দরগঞ্জের কৃষকদের। 

কথা হচ্ছিল উপজেলার বেলকা চরের বেগুন চাষি হাসেন আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, যে দরে বেগুন বিক্রি করছেন, তাতে পরিবহন এবং ক্ষেত থেকে বেগুন ওঠানোর দিনমজুর খরচ উঠবে না। অথচ শীতকালে দাম ভালো হওয়ায় পাঁচ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছিলেন। এতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এ পরিস্থিতি হবে, তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। পাঁচ বিঘা জমির বেগুন নিয়ে তাঁকে অন্তত লাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে। 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে পনেরোটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে, যার বেশির ভাগ চাষ হয়েছে তিস্তার চরে। ফলন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। 

কাপাসিয়ার বাদামের চরের আরেক চাষি আনছার আলী বলেন, শীতে বেগুনের ভালো দাম পাওয়া গেছে। বর্তমানে দাম অনেক কম। দেড় মাস আগেও ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন খরচই উঠেছে না। কাঁচাবাজারে বেগুন মজুতও করে রাখা যায় না। ফলে অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে। 

সুন্দরগঞ্জ বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শামীম মিয়া বলেন, বর্তমানে চরের বেগুনের ব্যাপক আমদানি হয়েছে। মান অনুসারে প্রতি কেজি বেগুন ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষিদের যে খরচ, তাতে ৫ টাকা দরে কেজি বিক্রি করলে লাভ করতে পারবে না। সংরক্ষণাগার না থাকায় এক দিনের বেশি কাঁচামাল মজুত রাখা যায় না। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশিদুল কবির বলেন, শীতকালে সবজির বাজারদর অনেক বেশি হওয়ায় চরের কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তিস্তার চরাঞ্চল এখন কৃষিতে সম্ভাবনাময় স্থানে পরিনত হয়েছে। ধান, গম, আলু থেকে শুরু করে সব ধরনের ফসল ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে চরে বেগুনের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে দরপতন হওয়ায় চাষিদের একটু কষ্ট হচ্ছে। মৌসুমভিত্তিক এসব ফসল সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষণাগার থাকলে কৃষকরা আরও ভালো দাম পেতেন। সংরক্ষাণার নির্মাণের জন্য সরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং এনজিওর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ