ইসরায়েলি গণহত্যা ও ভারতী হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে শেকৃবিতে বিক্ষোভ
Published: 19th, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি গণহত্যা এবং ভারতে মুসলিমদের ওপর কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) মাগরিবের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে আবার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ফিরে সমাবেশ করেন।
এ সময় তারা ‘ফিলিস্তিনের শিশুরা, আমাদের সন্তান’, ‘দুনিয়ার মুসলিম, এক হও এক হও’, ‘গণহত্যার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘ইসরাইলের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের দালালের, হুঁশিয়ার সাবধান’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
মিছিল শেষে শেকৃবি শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ বলেন, “যুদ্ধবিরতির পরেও ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের উপর হামলা করেছে এবং অন্তত ৪১৩ জনকে শহীদ করেছে। এ হামলায় দেড় শতাধিক শিশু এবং অনেক নারী মারা গেছে। এ পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় তাদের হামলার উদ্দেশ্য কি।”
ভারতীয় মুসলিম নির্যাতনের ব্যাপারে তিনি বলেন, “হলির নামে ভারতে আমার মুসলিম ভাইদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে, এমনকি একজনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অন্যতম মাধ্যম, তাদের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করে দেওয়া। আমাদের একটি টাকাও যেন ইসরায়েল ও ভারত আমাদের ভাইয়ের ওপর ব্যবহার করতে না পারে।”
শেকৃবি ইসলামিক সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত এ মিছিলে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী, সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/মামুন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাইব্যুনালে ৩৩৯ অভিযোগ, ২২ মামলায় গ্রেপ্তার ৫৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ৩৩৯টি অভিযোগ জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৪১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭০ বেসামরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬২ ও ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন। ইতোমধ্যে ৫৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা, আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ড ও রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ব্যক্তিকে গুলি করা মামলায় তদন্ত শেষ পর্যায়ে। শিগগির এগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এক হাজারের বেশি মানুষের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। পরোয়ানা জারির পরও ৮৭ আসামি পলাতক।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড, সুপিরিয়র কমান্ড, সরাসরি সম্পৃক্ত এবং যাদের কারণে রাষ্ট্র এমন হয়েছে, তাদের আগে বিচার করতে চাই। আমরা ভুক্তভোগীদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার কার্যক্রমে গতি আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটি হতে পারে। যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। কবে নাগাদ বিচার শুরু করা যাবে– প্রশ্নে তিনি বলেন, সময় বেঁধে দিয়ে বিচার করা যাবে না। সেটি যুক্তিযুক্তও নয়।
মতবিনিময়ের শুরুতে তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড়-দুই হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। ২৫ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। সব ঘটনার জলজ্যান্ত প্রমাণ রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে আমরা সেটি প্রমাণ করতে সক্ষম হবো এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোপন বন্দিশালা থেকে টাইম বোমা উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমিসহ গুমের মামলার তদন্তে যাওয়া দলের সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে টাইমার বোমা রাখা হয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত যেন ফাঁস না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, গুমের বিষয়ে আমরা উত্তরায় একটা বড় বন্দিশালায় তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক কিছু আমরা আবিষ্কার করেছি। টাইমার বোমা দেখেছি। হয়তো এ বোমা রাখা হয়েছিল তদন্তকারী দলকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে। আমাদের পরিদর্শনের ঠিক দু’দিন পর সেখানে প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শন করার কথা ছিল। তিনি অন্য জায়গায় গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।