নৌকার চেয়ারম্যান জাকির প্রকাশ্যে হলেও অধরা, গ্রেপ্তার দাবি
Published: 19th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলায় হত্যা মামলার আসামী নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠজন শিল্পপতি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
শুধু তাইনয় তার সহযোগী আওয়ামী লীগের পদধারীরাও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন আলীরটেক ইউনিয়নেরর স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বৈরশাসক এমপি শামীম ওসমান ও সেলীম ওসমান এর ছোট ভাই খ্যাত আলীরটেক ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে ওসমান পরিবারের দুই ভাইকে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের সন্ত্রাসী পাঠিয়ে ও অর্থ যোগানদাতা জাকির চেয়ারম্যানসহ তার সকল সহযোগীকে গ্রেফতারের দাবী করেছেন আলীরটেক ইউনিয়নবাসী।
সূত্রে আরও জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার অনেক চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হলেও আওয়ামী লীগ এর দোসর একাধিক ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হয়েও সে বিএনপির কিছু নেতাদের ম্যানেজ করে এলাকায় প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। এলাকাবাসীর দাবি সে নৌকার চেয়ারম্যান হিসেবে সুপরিচিত দোসর হয়ে কেনো গ্রেপ্তার হচ্ছে না! এর রহস্য কি? প্রশাসনের কাছে তা জানতে চেয়েছেন সাধারণ জনগণ।
চেয়ারম্যানের জাকিরের শেল্টারে আলীরটেক ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সহ আওয়ামী লীগ এর নেতারা জাকির চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে দেশ বিরোধী চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও সূত্রে জানা যায়।
একটি সূত্রে জানা যায় জাকির চেয়ারম্যান এখনও তার গুরুজন ওসমান পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছেন এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন। তাই তার বাহিনী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বৈচ্ছাসেবক লীগের ডেভিলরা সক্রিয়ভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে ভেড়াচ্ছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির ত্যাগী একাধিক নেতারা ও স্থানীয়রা জানান, জাকির চেয়ারম্যান নাকি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কোন এক নেতার ফ্ল্যাট ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন।
প্রশাসনের নিকট বিএনপি'র হাজারোও নেতা কর্মীদের দাবি এই সরকার বিরোধী চক্রান্তের মূল নায়ক আওয়ামী লীগ এর দোসর ও অর্থদাতা জাকির চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানিয়েছেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ওসম ন আওয় ম ল গ
এছাড়াও পড়ুন:
আরসাপ্রধান আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের স্বস্তি-উল্লাস
রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ বা আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ ওরফে আবু আম্মার জুনুনীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করার খবরে কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ওই খবর শোনার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁরা উল্লাস প্রকাশ করেন। তারাবিহর নামাজ শেষে আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন মসজিদে রোহিঙ্গারা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে গোপন বৈঠকের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরসার ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৃথক দুই মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
রোহিঙ্গারা নেতারা জানান, গ্রেপ্তার আতাউল্লাহকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আশ্রয়শিবিরে মজুত রাখা বিপুল ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদের সন্ধান মিলবে। শনাক্ত হবে অস্ত্র ও অর্থের জোগানদাতা। আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে লুকিয়ে থাকা আরসার কয়েক শ সদস্য আত্মগোপনে চলে গেছেন। আরসাকে ঠেকাতে এত দিন মিয়ানমারের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশনসহ (আরআরএসও) ১০টির বেশি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী একাট্টা ছিল। এখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। আশ্রয়শিবিরে খুনখারাবি বেড়ে যেতে পারে। আশ্রয়শিবির থেকে সন্ত্রাসীরা যেন পালাতে না পারেন, সে জন্য তল্লাশিচৌকিতে তৎপরতা বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, দুই বছর আগেও আরসাপ্রধান আতাউল্লাহর অবস্থান ছিল পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখায়। সেখান থেকে মাঝেমধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসে খুনখারাবিতে লিপ্ত থাকতেন। এক বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাত-লড়াই শুরু হলে তিনি দলবল নিয়ে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে আস্তানা গাড়েন। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে জোট বেঁধে আরসার সদস্যরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়তে থাকেন। দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই সংঘাতের পর ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপসহ ৮০ শতাংশ এলাকা (২৭০ কিলোমিটার) দখলে নেয় আরাকান আর্মি। কিন্তু আরসার সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই বন্ধ হয়নি। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বর থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
আরও পড়ুনরোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার প্রধানসহ ১০ জন নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার১৪ ঘণ্টা আগেরোহিঙ্গা নেতারা জানান, ২০১৮ সালের দিকে পুরো আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ছিল আরসার হাতে। সাধারণ রোহিঙ্গারাও আরসাকে নানাভাবে সহযোগিতা দিত। কিন্তু রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে বিপাকে পড়ে আরসা। এর ফলে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সমর্থন হারাতে থাকে তারা। এখন আরসা আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছিল। আতাউল্লাহসহ আরসার কয়েকজন শীর্ষনেতা গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে থাকা আরসা সন্ত্রাসীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে আরএসওসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা আরসার সন্ত্রাসীদের পালানো ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। তাতে আশ্রয়শিবিরে নতুন করে সংঘাত-হানাহানি দেখা দিতে পারে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আতাউল্লাহসহ আরসার ছয়জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে কক্সবাজারে করা মামলায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনআরসার প্রধান কমান্ডারসহ ৪৯ জনের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা০৫ ডিসেম্বর ২০২৩কক্সবাজারের টেকনাফের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আগুনের কুন্ডলী। গতকাল মঙ্গলবার রাতে