ইফতারে মাহফিলে বাধা, জামায়াতের সঙ্গে ছাত্রদলের হাতাহাতি
Published: 19th, March 2025 GMT
টাঙ্গাইলে জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেলে শহরের কোদালিয়া এলাকার কেডি মসজিদের সামনের মাঠে ঘটনাটি ঘটে। টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, আজ টাঙ্গাইল পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কেডি মসজিদের সামনের মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে জামায়াতের শহর শাখা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের আমির আহসান হাবীব মাসুদ। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল বাতেনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল ইফতার মাহফিল বন্ধ করার জন্য আয়োজক কমিটিকে চাপ দেয়।
আরো পড়ুন:
ফেসবুকে পোস্ট নিয়ে কুমিল্লায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ১৫
নিহত সেলিম তালুকদারের মেয়ের দায়িত্ব নিল জামায়াত
জামায়াত নেতারা ইফতার আয়োজনে অনড় থাকলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। জামায়াতের জেলা আমির আহসান হাবীব মাসুদ ও পুলিশের একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে জামায়াতের নেতাকর্মীরা সেখানেই ইফতার করেন।
টাঙ্গাইল শহর জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, “ছাত্রদলের টাঙ্গাইল জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব এম এ বাতেন তার সঙ্গীদের নিয়ে আমাদের ইফতার মাহফিলে বাধা দেন। তিনি মাইক বন্ধ করে দেন।”
টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব এম এ বাতেন বলেন, “ইফতার অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের হট্টগোল হয়নি। তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। এলাকায় কে বা কারা ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সেটা জানার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম।”
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহমেদ বলেন, “তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সদস্যদের পাঠিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেষ্টা করা হয়। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে সবাই মিলেমিশে সেখানে ইফতার করেন।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র ন ত কর সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
দুটি মামলার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে ২০২০ সালের দলবদ্ধ ধর্ষণকাণ্ড এবং চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে। উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সোমবার শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন জানান, বিগত দিনে উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার লিভ টু আপিল করেছিল। তিন বছর ধরে বিচার কাজ বন্ধ রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে আপিল প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে মামলা দুটি বিচার ট্রাইব্যুনালে চলতে কোনো বাধা নেই।
দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা মনিটরিং কমিটি। পরে সেই সিদ্ধান্তের অগ্রগতি না হওয়ায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন নির্যাতিতার স্বামী। ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির কথা থাকলেও তা হয়নি। উল্টো উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়।
উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের লিভ টু আপিলকে সরকারের বিচার না চাওয়ার পরিচয় বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। দীর্ঘদিন পর সরকার লিভ টু আপিল প্রত্যাহার করে নেওয়ার ফলে মামলা দুটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে এক সঙ্গে চলতে আপত্তি থাকল না। ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জৈনপুর এলাকার এক যুবক তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাঁদা দাবি ও ছাত্রাবাসের ভেতরে নিয়ে যায়। স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় সারাদেশে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলো– বালাগঞ্জের চান্দাইপাড়ার সাইফুর রহমান, হবিগঞ্জের বাগুনীপাড়ার শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, শান্তিগঞ্জের তারেকুল ইসলাম তারেক, জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর, দিরাই বড়নগদীপুরের রবিউল ইসলাম, কানাইঘাটের লামা দলইকান্দির (গাছবাড়ী) মাহফুজুর রহমান মাসুম, নগরীর গোলাপবাগ এলাকার আইনুদ্দিন ও বিয়ানীবাজারের নটেশ্বর গ্রামের মিজবাউল ইসলাম রাজন।
এদের মধ্যে বিএ কোর্সের (অনিয়মিত) ছাত্র সাইফুর রহমান, ইংরেজি স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত বর্ষের শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, বিএসএস স্নাতক পাস কোর্সের রবিউল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত বর্ষের মাহফুজুর রহমানের ছাত্রত্ব বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। অন্যরা বহিরাগত এবং সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারের পর সবাই আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
একই বছরের ৩ ডিসেম্বর আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন শাহপরাণ থানার পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। চার্জশিটে তিনি উল্লেখ করেন, আসামি সাইফুর, রনি, তারেক, অর্জুন, রাজন ও আইনুল ওই নারীকে ধর্ষণ করে। রবিউল ও মাসুম ধর্ষণকারীদের সহযোগিতা করে।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি বিভাগীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ মামলার বিচার শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি মামলা একসঙ্গে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করার নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত।