মির্জাপুরে এক মাস পর ‘অপহৃত’ স্কুলছাত্রী উদ্ধার
Published: 19th, March 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অপহরণের এক মাস পর এক স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার উপজেলার দেওহাটা বাজার থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
পরিবার সূত্র জানায়, মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের পাথালিয়াপাড়া গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রী (১৪) প্রতিদিনের মতো ১৭ ফ্রেরুয়ারি বিদ্যালয়ে যায়। বিকেলে বাড়িতে না ফেরায় বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন। এরমধ্যে একই গ্রামের খুশী মন্ডলের ছেলে খোকন সরকার (২৩) ওই ছাত্রীর সঙ্গে নিজের ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ছাত্রীর দাদা মির্জাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে অপহরণকারী খোকনের লোকজন ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে বাদী খুশী মোহন মন্ডল ও ছাত্রীর পিশা (ফুফা) গিরেনের ওপর খোকনের ভাই রিপন, প্রকাশ, গোপাল ও শম্ভুসহ ৫-৭ জন লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। রাতেই আহত দু’জনকেই কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মির্জাপুর থানায় মামলা হওয়ার পর অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য মির্জাপুর থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। বুধবার সকালে গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে হঠাৎ অপহৃত ওই স্কুলছাত্রীকে দেখতে পান এলাকার লোকজন। পরে দেওহাটা ফাঁড়ির পুলিশ এসে ছাত্রীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোহাম্মদ নূরুন্নবী বলেন, অনেক চেষ্টার পর ছাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার করানো হবে এবং জবানবন্দী রেকর্ডের জন্য আদালতে হাজির করা হবে বলে তিনি জানান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় পিতার ওপর প্রতিশোধ নিতে শিশু পুত্রকে অপহরণ করে হত্যা
ফতুল্লায় পিতা হাশিম মিয়ার ওপর প্রতিশোধ নিতে তার ৭ বছরের শিশু পুত্র মুস্তাকিনকে অপহরন করে হত্যা ও লাশ গুম করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- ফতুল্লা থানার লামাপাড়া দরগাহ বাড়ী মসজিদ সংলগ্ন সালাম মিয়ার ভাড়াটিয়া ওবায়েদউল্লাহ বাবুর পুত্র তানজীল (২৪) ও একই বাড়ীর ভাড়াটিয়া মৃত ফরজুল ইসলামের পুত্র নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলম (২০)।
বুধবার (১৯ মার্চ) জেলা ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
জানাগেছে, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ও নিহত শিশুর পরিবার পাশাপাশি ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। একটি মোবাইল নিয়ে তানজিলের সাথে নিহত শিশু মুস্তাকিনের বাবা হাশিম মিয়ার সাথে ঝগড়া হয়। এতে করে তানজিল তার একই বাসার ভাড়াটিয়া সহযোগী নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলমকে নিয়ে শিশুটিকে অপহরন সহ হত্যা করার পরিকল্পনা করে।
প্রথমে তারা ফতুল্লা ডিআইটি মাঠ থেকে ৪৫০ টাকা দিয়ে একটি সুইচ গিয়ার কিনে। তারপর পরিকল্পনানুযায়ী ৫ জানুয়ারী সন্ধ্যার দিকে প্রথমে শিশুটির হাতে ২০ টাকা দেয় তানজিল। পরে পায়ে হাঁটিয়ে রাস্তায় এনে দুটি চিপস কিনে হাতে দিয়ে অটোরিক্সায় করে ফতুল্লা গুদারাঘাট দিয়ে কেরানীগঞ্জের কাওটাইল এলাকায় যায়।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদের পেছনে ঝোপের ভিতরে নিয়ে গিয়ে শিশুটির মুখে কস্টটেপ পেচিয়ে মাটিতে শুইয়ে দেয় নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহালম। এ সময় তানজীল তার সাথে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়ে শিশুটিকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে লামাপাড়াস্থ বাসায় চলে আসে।
এদিকে, শিশুটিকে না পেয়ে তার পরিবার যখন সন্ধান চেয়ে মাইকিং করেছিলো ঘাতকরাও সে সময় মাইকিং করে। দুতিন দিন পর তারা তাদের নিজ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিং চলে যায়। ঘটনার ১৩ দিন পর ১৮ জানুয়ারী দুপুরে লোক মারফত জানতে পেরে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। কোন পরিচয় না পাওয়ায় লাশটি অজ্ঞাত নামা হিসেবে দাফন করা হয়।
পরবর্তীতে ২০ জানুয়ারী কেরানীগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। অপরদিকে শিশুটির বাবা ৬ জানুয়ারী ফতুল্লা মডেল থানায় একটি নিখোঁজ সাধারন ডায়েরী করেন। পরবর্তীতে নিখোঁজ শিশুটির সন্ধান না পেয়ে শিশুটির বাবা ১৪ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন।
সেই মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডের ৭২ দিন পর ১৮ মার্চ সকাল নয়টার দিকে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার নান্দাইল উপজেলার সামনে থেকে প্রথমে নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলমকে পরে দুপুর বারোটার দিকে একই জেলার ফুলবাড়িয়া থানার কাচিজোড়া থেকে তানজিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের দেখানো মতে পুলিশ রাত ৮ টার দিকে ফতুল্লা থানার লামাপাড়াস্থ তানজিদের বাসা থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ারটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) "ক" সার্কেল হাসিনুজ্জামান জানান, শিশুটির বাবার উপর প্রতিশোধ নিতেই ফতুল্লা থেকে শিশুটিকে অপহরন করে নদীর ওপারে কেরানীগঞ্জ থানার কাওটাইল এলাকায় নিয়ে হত্যা করা হয়। সেখানকার পুলিশ নিহত শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করে এবং পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা হয়।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্যমতে কেরানীগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করা হলে শিশুটির পরিবার থানায় গিয়ে পুলিশের নিকট রক্ষিত নিহত শিশুর জামা কাপড় থেকে পরিচয় সনাক্ত করা হয়।