অস্ত্র আইনে করা এক মামলায় দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ বছর আগে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের করা আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে বাবরের ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। ফলে বাবর এ মামলা থেকে খালাস পেলেন।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২৮ মে বাবরের গুলশানের বাসার শোবার ঘর থেকে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় ওই বছরের ৩ জুন মামলাটি করা হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল–৯ এ মামলায় ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর রায় দেন। রায়ে দুটি ধারায় লুৎফুজ্জামান বাবরের ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন লুৎফুজ্জামান। শুনানি শেষে এ আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

আসিফ ইমরান জিসান।

পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরের সাজা খাটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। আপিল মঞ্জুর হওয়ায় তিনি নির্দোষ প্রামাণিত হলেন ও খালাস পেলেন।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে লুৎফুজ্জামান বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে কারাগারে ছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মামলায় তাঁর দণ্ড হয়। সেসব মামলায় খালাস ও জামিনের পর ১৬ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

রায়ের পর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ১/১১ সরকারের আমলে লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছিল। এ মামলায় ২০ দিনে অভিযোগপত্র এবং তিন মাসের মধ্যে তাঁকে ১৭ বছরের সাজা দেওয়া হয়। এর সাজার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন। আপিল শুনানি শেষে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তারপর তাঁর বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়েছিল। যেদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় তারও ছয় দিন পর মামলাটি করা হয়। এ মামলা করার যে প্রক্রিয়া ছিল, সেটিকে অবৈধ বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১৭ বছর বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

দুদকের মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ ইউনূসের আপিলের ওপর শুনানি শেষ, রায় ২৩ এপ্রিল

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের রায়ের বিরুদ্ধে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ সাত ব্যক্তির করা আপিলের ওপর রায়ের জন্য আগামী ২৩ এপ্রিল তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

আপিলের ওপর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার রায়ের এই তারিখ ধার্য করেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। আদালতে আপিলকারীদের পক্ষ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আসিফ হাসান শুনানি করেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়।

মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলাটির কার্যধারা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তৎকালীন শীর্ষ ছয় কর্মকর্তা গত বছরের ৮ জুলাই আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত ২৪ জুলাই হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে আদেশ দেন। অন্য ছয় আবেদনকারী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানা, শাহজাহান, নূরজাহান বেগম (বর্তমানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা) ও এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এদিকে এরই মধ্যে রাষ্ট্র বা দুদকের পক্ষে পিপি মামলাটি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। গত বছরের ১১ আগস্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক।

লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে গত বছরের ২১ অক্টোবর আপিল বিভাগ আদেশ দেন। পাশাপাশি কনসাইজ স্টেটমেন্ট (আপিলের সারসংক্ষেপ) জমা দিতে সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আপিলের ওপর শুনানি হয়।

আপিলকারীদের আইনজীবীর ভাষ্য, মামলাটি শুনানির জন্য বিচারিক আদালতে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য থাকা অবস্থায় এর আগেই তাদের (আপিলকারীদের) না জানিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়, যাতে আইনের লঙ্ঘন হয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ মে মামলাটি করেছিলেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ‘মিথ্যা’, বললেন টিউলিপ
  • জামায়াত আমিরের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
  • ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ স্থগিত
  • কক্সবাজারে সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যার বিচার শুরু
  • ড. ইউনূসের দুর্নীতির মামলা বাতিল ঠিক ছিল কি না, রায় ২৩ এপ্রিল
  • দুদকের মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ ইউনূসের আপিলের ওপর শুনানি শেষ, রায় ২৩ এপ্রিল
  • ১৭ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস বাবর
  • ১৭ বছরের দণ্ড থেকে লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিলেন হাইকোর্ট
  • বব উলমারের মৃত্যু এখনো চোখ ভিজিয়ে দেয়