হঠাৎ রেগে যাওয়া ও বেফাঁস মন্তব্য করার জন্য মাঝে মাঝেই খবরের শিরোনাম হন অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। সম্প্রতি বেশ কয়েকবার মেজাজ হারাতে দেখা গেছে তাঁকে। কিন্তু এবার তিনি যা করলেন তা রীতিমতো অবাক করে দিয়েছে সবাইকে। অক্ষয় কুমারের সিনেমার নাম উল্লেখ করেই নিজের সমস্ত ক্ষোভ উগরে দিলেন অমিতাভঘরনী।

২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘টয়লেট- এক প্রেম কথা’ সিনেমা। এটি ছিল মূলত সচেতনতামূলক সিনেমা। গ্রামের মহিলাদের শৌচাগার তৈরি করার বিষয়কে ঘিরে এই সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছিল।  শুধু এই সিনেমা নয়, ‘প্যাডম্যান’ সিনেমার মতো মেয়েদের শারীরিক বিষয় নিয়ে সচেতনতামূলক সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যায় অক্ষয় কুমারকে।

বুধবার আলোচনা সভায় ‘টয়লেট’ সিনেমার নাম নিয়ে আপত্তি জানান জয়া। অভিনেত্রী বলেন, ‘ছবির নামটা একবার দেখুন। ছবির যদি এরকম নাম হয়, সেই ছবি কোনও দিন আমি দেখতে যাব না। এটা কোনও নাম হল? এই ছবি হয়তো এত লোকের মাঝে চারজন দেখবে, তা সত্যি খুব দুঃখজনক। একদম ফ্লপ ছবি এটি।’

অক্ষয়ের ‘টয়লেট’ সিনেমা নিয়ে জয়া বচ্চনের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলেও অক্ষয় কুমার এখনও এই বিষয় নিয়ে কোনও কথা বলেননি। অমিতাভ বা অভিষেকের পক্ষ থেকেও এ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা যায়নি।

‘টয়লেট’ সিনেমার অক্ষয় কুমার ছাড়াও অভিনয় করেছেন ভূমি পেড়নেকর, অনুপম খের, সুধীর পাণ্ডে, দিব্যেন্দু শর্মাসহ আরও অনেকে। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘মা, আমি মরতে চাই’

ব্রাশ দিয়ে চুল আঁচড়ানোর অভিনয় করে সামা তুবাইল আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলে।

মাথায় হাত রেখে সিএনএনকে সামা বলেন, “আমি খুবই দুঃখিত যে আমার ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ানোর জন্য একটি চুলও নেই। আমি আয়না ধরে থাকি। কারণ আমি আমার চুল আঁচড়াতে চাই: আমি সত্যিই আবার আমার চুল আঁচড়াতে চাই।”

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আগে সামা এর চুল এমন ছিল না। তার লম্বা চুল ছিল এবং উত্তর গাজার জাবালিয়ায় তার বন্ধুদের সাথে বাইরে খেলাধুলা করত। কিন্তু তারপর থেকে, সামা এবং তার পরিবার সেই ১৯ লাখ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে রয়েছেন যাদের জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, যারা ইসরায়েলি সামরিক আদেশে প্রথমে ছিটমহলের দক্ষিণ রাফাহ অঞ্চলে পালিয়ে যায়। সহিংসতা বৃদ্ধি পেলে, সামা গাজার মধ্যাঞ্চলের খান ইউনিসের একটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে চলে যান। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী,ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ৪৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ গত জুনে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, গাজার প্রায় ১২ লাখ শিশুর মানসিক সহায়তা প্রয়োজন, বিশেষ করে যারা বারবার আঘাতমূলক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে।

জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার এক সপ্তাহ পরে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার প্রধান টম ফ্লেচার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, “একটি প্রজন্ম মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। শিশুদের হত্যা করা হয়েছে, অনাহারে রাখা হয়েছে এবং হিমায়িত অবস্থায় মারা গেছে। কিছু শিশু তাদের প্রথম নিঃশ্বাসের আগেই মারা গেছে - প্রসবের সময় তাদের মায়েদের সাথে মারা যাচ্ছে।”

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েল নতুন করে বিমান হামলা শুরু করেছে, যার ফলে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেছে এবং শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। 

একজন চিকিৎসক সিএনএনকে বলেন, গাজা সিটির একটি হাসপাতালের দৃশ্য ‘আমি আগে যা দেখেছি তা আগের মতো নয়।’ হাসপাতালে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশু দেখেছেন তিনি।

গত বছর চিকিৎসকরা নির্ণয় করেছিলেন যে সামা’র চুল পড়া ‘নার্ভাস শক’ এর ফলে হয়েছে, বিশেষ করে আগস্টে রাফায় তার প্রতিবেশীর বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর। তারা বলেছে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে তার দৈনন্দিন জীবনের বেদনাদায়ক পরিবর্তন সম্ভবত তার অ্যালোপেসিয়ায় অবদান রেখেছে, যা চুল পড়ার কারণ।

গত বছরের শেষের দিকে ওয়ার চাইল্ড অ্যালায়েন্স এবং গাজাভিত্তিক কমিউনিটি ট্রেনিং সেন্টার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের একটি প্রতিবেদনে গত বছর গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে শিশুদের উপর যে মারাত্মক মানসিক আঘাত নেমে এসেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। পাঁচ শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ শিশুর যত্নশীলদের উপর করা জরিপের উপর ভিত্তি করে তৈরি এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, সেই পরিস্থিতিতে ৯৬ শতাংশ শিশু মনে করে যে ,মৃত্যু আসন্ন এবং প্রায় অর্ধেক- ৪৯ শতাংশ ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে ‘মরে যাওয়ার ইচ্ছা’ প্রকাশ করেছে।

চুল পড়ার জন্য অন্যান্য শিশুদের নেতিবাচক কথাবার্তায় সামা’র মানসিক যন্ত্রণা আরো তীব্র হয়। এর ফলে সে ঘরের ভেতরেই থেকে যায়। বাইরে, সে তার মাথার ত্বক ঢাকতে গোলাপী রঙের একটি ব্যান্ডানা পরে থাকতো।

মাকে সামা বলেছিল,“মা, আমি ক্লান্ত-আমি মরতে চাই। আমার চুল কেন গজাচ্ছে না? আমি মরতে চাই এবং আল্লাহর ইচ্ছায় জান্নাতে আমার চুল গজাতে চাই।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ