হবিগঞ্জে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
Published: 19th, March 2025 GMT
হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে সেনা সদস্যরা। বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাসেল মিয়া গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা রয়েছে। তিনি চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো.
চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
বরগুনায় থানায় ঢুকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, মহিলা দলের নেত্রী গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার আরাকান আর্মির ৪ সদস্যসহ ১০ জনের নামে দুই মামলা
এসআই স্বপন কুমার জানান, গ্রেপ্তার রাসেল মিয়া চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বৃন্দাবন সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছিলেন। এ সময় তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসুচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তার বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা রয়েছে। সেই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাসেল মিয়া। এ ছাড়া তার বাবা রজব আলীর বিরুদ্ধে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা রয়েছে।
৫ আগস্টের পর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে শায়েস্তাগঞ্জ ভূমি থেকে আজমিরীগঞ্জ জলসুখা ভূমি অফিসের বদলী হন রাসেল মিয়া। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আরাফি তাজওয়ার আমিনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে চুনারুঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/আজহারুল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, এসআই প্রত্যাহার
মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার না করতে কয়েক দফায় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ থানার এসআই মো. আলীম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে বিশ্বনাথ থানা থেকে সিলেট পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
জানা গেছে, অভিযুক্ত এসআই আলীম উদ্দিন ঘুষ নিয়েও কথামতো কাজ করেননি। যে কারণে ঘুষের টাকা ফেরত চান ভুক্তভোগী। কিন্তু বিষয়টি বারবার অস্বীকার করেন এসআই আলীম। এর আগে, ঘুষ লেনদেনের পরপর দুই দফার ভিডিও গোপনে ধারণ করে রাখেন ফয়সল নামের ওই ভুক্তভোগী। সেই ভিডিওটি মঙ্গলবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, থানার বৈঠকখানায় বসে গুনে দেওয়া ঘুষের কিস্তি হাসিমুখে পকেটে রাখছেন এসআই আলীম। ভিডিওতে তিনি বলছেন, চার্জ শিটের জন্য লাগবে পুরো ২০ হাজারই। অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার এমসির জন্য অন্য কিস্তির পুরো ২০ হাজারের জন্য দেন-দরবারও করছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আনরপুর গ্রামের মকবুল আলী ও তার প্রতিপক্ষ জুনেদ হোসেন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ২০ আগস্ট মকবুল আলী মামলা করেন। আর ওই মামলার তদন্তভার পান এসআই আলীম। এরপর আসামি জুনেদ মামলার বিষয়টি দেখভালের জন্য দাউদপুর গ্রামের ফয়সল আহমদকে দায়িত্ব দেন। এর সুবাধে তিনি মামলার বিষয়ে এসআই আলীমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে মামলার বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেন এসআই আলীম। পরবর্তীতে একাধিক সময়ে ২০ হাজার করে ৪ দফা ও ১০ হাজার করে ২ দফা মোট এক লাখ টাকা কৌশলে আদায় করেন তিনি। কিন্তু টাকা নিয়ে কথা মতো কাজ না করে উল্টো ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাকেও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন এসআই আলীম। এরপর ভুক্তভোগী ফয়সল আহমদ ঘুষের ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দেন এবং সিলেট জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
ভুক্তভোগী ফয়সল আহমদের অভিযোগ, সরলতার সুযোগ নিয়ে হীন উদ্দেশ্যে মামা-ভাগ্নে সম্পর্ক পেতে দারোগা আলীম তাকে বোকা বানিয়ে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার তিনি সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এসআই আলীম উদ্দিন। তবে, বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগের সত্যতা এবং ভিডিও ভাইরালের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এসআই আলীম উদ্দিনকে ক্লোজড করা হয়েছে।