পরীক্ষা বর্জন করে ময়মনসিংহে সড়ক অবরোধে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 19th, March 2025 GMT
পরীক্ষা বর্জন করে ময়মনসিংহে সড়ক অবরোধে বিক্ষোভ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের দীঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জনসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছেন। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে চলমান মিড টার্ম পরীক্ষা বর্জন করে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন তাঁরা। বেলা ১১টার দিকে ইনস্টিটিউট থেকে মিছিল নিয়ে নগরের দীঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে দুপুর ১২টায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো.
শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে জানান, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে অবিলম্বে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ‘ডিপ্লোমা প্রকৌশল’ থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরগুলোয় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।
শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করে। ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শওকত হোসেন বলেন, এ–সংক্রান্ত রিটের রায় হয়েছে কি না, তা সঠিকভাবে না জেনেই সারা দেশে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে সড়ক অবরোধ করেন। বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মামুনুর রহমান বলেন, ‘আজ সন্ধ্যার মধ্যে আমাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে, এমন আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে গেছি৷ দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ ব ক ষ ভ কর ইনস ট র ক সড়ক থ ক পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ঈশ্বরগঞ্জের সাবেক ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ
প্রধান আসামির নাম না দিয়ে মামলা নথিভুক্ত করায় ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে করা মামলাটি জুডিশিয়াল তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক একেএম ছিফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৭ এপ্রিল আদালতে মামলার আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন নাামে এক ব্যক্তি। ওইদিনই বিচারক একেএম ছিফাতুল্লাহ আবেদনটি আমলে নেওয়ায় রেজিস্ট্রার খাতায় মামলা (২৭৭/২৫) হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়।
আসামিরা হলেন- তৎকালীন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান, তিনি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। সাবেক এসআই মো. মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক (ওসি) হয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি কোথায় কর্মরত তা জানা যায়নি।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, “মামলাটি তদন্ত করবেন ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন। কতদিন তদন্ত চলবে তা বিচারকের ওপর নির্ভর করবে।”
মামলা সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের পূর্ব বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান কুপিয়ে জখম করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরার কিছুদিন পর আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েন শফিকুল। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে আবারও বাসায় নিয়ে আসা হয়। বাসায় কয়েক বছর স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা চলছিল তার। ২০১৫ সালে গুরুতর অসুস্থ হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় শফিকুলকে। কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বসায় নিয়ে আসার পরদিন (একই বছরের ২ জানুয়ারি) মারা যান শফিকুল ইসলাম।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে ঈশ্বরগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা নেননি। এমতাবস্থায় ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ওই দিনই অভিযোগ থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক। ওসি মো. মিজানুর রহমান এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ না করে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে জানান মামলাটি থানায় এসেছে। আপনার (বাদীর) টিপসই লাগবে। বাদী সরল মনে ওসি ও এসআইয়ের কথা বিশ্বাস করে টিপসই দেন।
পরবর্তীতে আদালত থেকে বাদী মামলার কপি তুলে দেখেন, অন্য একটি মামলা লিখে বাদীর স্বাক্ষর নেওয়া, যে মামলাটি এজহার হিসেবে নথিবদ্ধ করেন তাতে বাদীর নালিশি মামলার ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা মো. আবদুর রশিদের নাম লিখে রাখা হয়েছে।