আলঝেইমার রোগের চিকিৎসায় নতুন আশা
Published: 19th, March 2025 GMT
আলঝেইমার রোগের উপশমে কার্যকর নতুন এক উপাদানের খোঁজ পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, রোজমেরি ও সেজ নামের মসলায় কার্নোসিক অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যের। আর তাই এসব মসলার মধ্যে থাকা একটি যৌগ আলঝেইমার রোগের উপশমে কাজ করতে পারে।
ইঁদুরের মস্তিষ্কে রোজমেরি ও সেজ মসলায় থাকা যৌগ ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় দেখা গেছে, ইঁদুরের মস্তিষ্কে যৌগটি ব্যবহারের পরে প্রদাহ কমে গেছে। আর তাই এখন আলঝেইমার রোগের চিকিৎসায় মানুষের শরীরে যৌগটি ব্যবহার করতে চান বিজ্ঞানীরা। এ জন্য কার্নোসিক অ্যাসিড ব্যবহার করে একটি ওষুধও তৈরি করেছেন তাঁরা। ওষুধটি কেবল প্রদাহ কমায় না; বরং মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষের সংযোগ পুনরুদ্ধার করতে পারে। এতে শেখার আগ্রহ ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
আরও পড়ুনশহরের আলোর কারণে বাড়তে পারে আলঝেইমারের ঝুঁকি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, কার্নোসিক অ্যাসিড ইতিমধ্যেই মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন নিরাপদ বলে বিবেচনা করেছে। এ জন্য নতুন ওষুধ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য দ্রুত ব্যবহার করতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা। আলঝেইমার রোগ ডিমেনশিয়ার সাধারণ একটি রূপ। এই রোগের কারণে এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়, যা সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের মন ও স্মৃতিতে প্রভাবের জন্য পরিচিত। নতুন ওষুধটি জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে না।
ইঁদুরের ওপর পরিচালিত পরীক্ষায় নতুন ওষুধটি নিউরোনাল সিন্যাপ্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। বিজ্ঞানী স্টুয়ার্ট লিপটন বলেন, ‘আমরা স্মৃতিশক্তি নিয়ে একাধিক পরীক্ষা করেছি। এই ওষুধের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি উন্নত হতে দেখা গেছে।’
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তানকে পেয়ে আনন্দাশ্রু বাধ মানছে না তুষার-শান্তা দম্পতির
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপনে তখন ব্যস্ত সারাদেশ। চলছে শোভাযাত্রা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। কিন্তু এ দিনে একটি নবজাত শিশুকে ঘিরে আরও আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে কুমিল্লায় আহসান হাবিব তুষার ও শামীমা আক্তার শান্তা দম্পতির ঘরে, তার কাছে যেন বাইরের সব আয়োজন ফিকে। পহেলা বৈশাখের সকালেই তাদের কোলজুড়ে এসেছে দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। শিশুটিকে ঘিরে আনন্দাশ্রু যেন বাঁধ মানছে না বাবা-মার। দাদার দেওয়া নামে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে সুফিয়া আহসান রোয়া। তুষার ও শান্তার চাওয়া, তাদের দুই মেয়ে প্রথমে হোক ভালো মানুষ, পরে একজন চিকিৎসক।
গত সোমবার ভোর সাড়ে ৬টায় দেবিদ্বার উপজেলা সদরের সেন্ট্রাল হসপিটালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শান্তা। এ হাসপাতালটি তুষারের পারিবারিক যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। এ দম্পতির ৯ বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তান আছে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স শেষ করা তুষার পেশায় একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় পরিবেশক। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা তাঁর স্ত্রী শান্তা প্যাথলজি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। তুষার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী মো. সেলিমের ছেলে। শান্তা একই উপজেলার বাঙ্গুরী এলাকার বাসিন্দা। তাদের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণতি পায় ২০১৪ সালে। বিয়ের পর ২০১৬ সালে দেবিদ্বার সেন্ট্রাল হসপিটালেই তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম। এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে ঘর আলো করে এসেছে দ্বিতীয় সন্তান রোয়া।
তুষার বলেন, নববর্ষের কাছাকাছি সময়ে আমার স্ত্রীর প্রসবের সময় ছিল। কিন্তু পহেলা বৈশাখের বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিনেই সিজার করতে আমরা চিকিৎসকের মতামত নিয়েছিলাম। চিকিৎসকও সিজারিয়ানের জন্য নববর্ষকেই বেছে নেন। এ দিনে সন্তানের জন্ম হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ওর জন্মদিন উদযাপনে কাউকে আর তারিখ মনে করিয়ে দিতে হবে না।
তুষার আরও বলেন, আমাদের প্রথম বাচ্চা হয়েছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে। তাই দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রেও চিকিৎসক স্বাভাবিক প্রসবের ঝুঁকি নেননি। শান্তার গাইনি সার্জন ছিলেন আমার চাচি ডা. হনুফা আক্তার। হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আমাদের বাসা হওয়ায় নিয়মিত ডা. হনুফার তত্ত্বাবধানে আমার স্ত্রী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতেন। তবু মনে শঙ্কা তো ছিলই। অপারেশন থিয়েটারের সামনে মা-বাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে মনে আল্লাহকে ডেকেছি, যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আমার মা যখন বাচ্চা কোলে নিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হন, তখন সব দুশ্চিন্তা দূর হয়। বাচ্চার জন্য নতুন কাপড়, তোয়ালে উপহার দিয়েছে আমার বোনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শান্তা বলেন, স্থানীয় রীতি অনুসারে আমি সন্তান সম্ভবা হওয়ার ৯ মাসের মাথায় আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে বিশেষ খাবার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখন বাচ্চার জন্য দোয়া কামনায় সাত দিন বয়সের সময় আবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
হাসপাতালের আবাসিক গাইনি সার্জন হনুফা আক্তার বলেন, প্রসূতি শান্তা আমার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। যেন কোনো ঝুঁকিতে না পড়তে হয় এবং গর্ভের সন্তান যেন ভালো থাকে এ বিষয়ে শান্তা ও তুষার আগে থেকেই চেম্বারে এসে নিয়মিত ফলোআপ করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীদের যতটুকু সচেতন থাকা দরকার, তুষার তার শতভাগ ছিলেন। নবজাতকের ওজন সাধারণত আড়াই কেজি হলেও সমস্যা নেই। শান্তা ও তুষারের মেয়ের ওজন হয়েছে ২ কেজি ৯০০ গ্রাম; যা একজন সুস্থ নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ আছে।