সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে সরকারি জায়গা দখলে অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনকে দলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

সাহাব উদ্দিন জুলাই বিপ্লব তথা ৫ আগস্টের পর দেড়শত একর সরকারি জমি দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এমন খবর গণমাধ্যমে আসার পর সিলেট জেলা বিএনপি সাহাব উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। অভিযোগ তদন্তে জেলা বিএনপি তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করেছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে শোকজের তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি গণমাধ্যমে সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে, যা বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি বলে বিবেচিত হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ, দলের নীতি ও আদর্শের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ আচরণ পরিলক্ষিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

১৭ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস বাবর

নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত না করে, দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন: রিপন

সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এর সুস্পষ্ট লিখিত ব্যাখ্যা আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার জন্য শোকজে উল্লেখ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য জবাব দিতে না পারলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে বলা হয়।

দেশের সবচেয়ে বড় পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জে। কোয়ারীর পাশে সরকারের অন্তত ২৭৫ একর উন্মুক্ত জায়গা আছে। ২০০১ সালের দিকে এসব জায়গার দখল নেন স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন। এর মধ্যে সাহাব উদ্দিনের দখলে চলে যায় অর্ধেকের বেশি জমি। পাশে কোয়ারি থাকায় দখলকারীরা জায়গাগুলো পাথর ভাঙার মেশিনের মালিকদের কাছে ভাড়া দেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মিলেমিশে সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দিয়েছেনে সাহাব উদ্দিন। বিগত সরকারের শেষের দিকে দুই বছর আগে প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে। গত ৫ আগস্ট পরবর্তিত পরিস্থিতিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে ১০ নম্বর সাইট এলাকায় সরকারি প্রায় ১৫০ একর জমি দখলের অভিযোগ ওঠে সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। সেখান থেকে লাখ লাখ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর টনক নড়ে দলের।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাহাব উদ্দিনকেও এ ঘটনায় লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন ও কারণ দর্শানোর জবাব পাওয়ার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি জানান, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বিএনপি জিরো টলারেন্সে রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে সাহাব উদ্দিনকে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/নুর/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র ব যবস থ সরক র গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

ব্লেডের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত শিশু রাব্বীর শরীর

এগারো বছর বয়সী শিশু রাব্বীর পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে ব্লেডের আঘাতে। হাসপাতালে শুয়ে কাতরাচ্ছে শিশুটি। তার এ নির্মম ক্ষতচিহ্ন দেখে বাকরুদ্ধ অনেকে। তার চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। এ ঘটনায় এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে ওই কিশোরকে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

মর্মস্পর্শী ঘটনাটি ময়মনসিংহের। সোমবার বিকেলে নগরের আকুয়া দারুস সালাম মসজিদ এলাকায় শিশুটিকে আটকে রেখে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে ওই কিশোর। সে নগরের আকুয়া চৌরঙ্গীর মোড় এলাকায় নানা নানির সঙ্গে থাকত। 

রাব্বীকে ডেকে আকুয়া দারুস সালাম মসজিদ এলাকায় নিয়ে শিশুটির চোখ বাঁধে ওই কিশোর। ব্লেড দিয়ে তার বুক, পিঠ, মাথা ও ঠোঁট কেটে দেয় সে। এক পর্যায়ে রক্তাক্ত শিশুটি সেখান থেকে পালিয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ওই বাড়ির সদস্যরা শিশুটিকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাব্বীকে চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সোমবার রাত ১২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তৃতীয় তলায় ৩০৩ নম্বর শয্যায় চিকিৎসা চলছে তার। 

শিশুটির খালা লাকি আক্তার বলেন, চোখ, হাত পা বেঁধে মাথা, চোখ, বুক ও ঠোঁটে ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে রাব্বীর। ক্ষতস্থান দিয়ে এখনও রক্ত ঝরছে। কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সানকিপাড়া বাজারে শ্রমিকের কাজ করত অভিযুক্ত ওই কিশোর। দুই মাস আগে তার সঙ্গে রাব্বীর কথাকাটাকাটি হয়। ওই সময় থেকে শিশুটিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় কিশোরটি। 
এ ঘটনায় সোমবার রাতেই কিশোরকে আসামি করে থানায় মামলা করেন রাব্বীর নানা নায়েব আলী। এতে অজ্ঞাতপরিচয় আরও দু’জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার পরপর কিশোরকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান বলেন, গ্রেপ্তার শিশুটি একাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ