শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকায় জাবিতে পথশিশুদের ঈদ উপহার
Published: 19th, March 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পার্শ্ববর্তী এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে একদিনের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের নতুন জামা উপহার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.
আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দেশজুড়ে বিভিন্নস্থানে এ কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ও সংগঠনের উপদেষ্টামন্ডলীসহ অতিথিদের উপস্থিতিতে সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুদের হাতে ঈদের নতুন জামা উপহার দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানে ‘হামলায় জড়িত’ জাবির ২৯৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাসপেন্ড
ক্যাম্পাসে সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি ট্যাগিংয়ের শিকার হয়: জাবি উপাচার্য
লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘের ঢাকা জেলা শাখার সভাপতি এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, “লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ সংগঠনটির সকল সদস্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের একদিনের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে শিশুদের মুখে হাঁসি ফুটাতে ঈদের এ নতুন জামা উপহার দিচ্ছেন। আগামী সাতদিনে ধারাবাহিক এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ১ হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে ঈদের নতুন জামা উপহার দেবেন তারা।”
লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল জানান, গত ১৪ বছর ধরে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাঠদান, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও ঈদের নতুন পোশাক উপহার বিতরণ করে আসছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী বা সংগঠন মানবতার কল্যাণে যে উদ্যোগই গ্রহক করুক, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবসময়ই পাশে থাকার চেষ্টা করি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘ এদিক দিয়ে এগিয়ে আছে। আশা করি, সংঘের কাজগুলো দেশব্যাপী দ্রুতই ছড়িয়ে পড়বে।”
সমাপনী বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “সবার যদি ইচ্ছা থাকে, তাহলে সমাজের কল্যাণে অনেক ভালো কাজ করা সম্ভব। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে সব সমস্যা হয়তো আমরা দূরীকরণ করতে পারব না। তবে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করতে হবে। সেই জায়গা থেকে লালসবুজ উন্নয়ন সংঘ নানাবিধ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং অন্যান্য সামাজিক সংগঠন গুলোও সকল ভালো কাজে এগিয়ে আসবে, সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করছি।”
এ সময় আরও বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক শামসুল আলম, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমির হোসেন ভূইয়া, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসরীন সুলতানা ও সহযোগী অধ্যাপক তমালিকা সুলতানা।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নত ন জ ম উপ চ র য স গঠন উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানের দারফুরে আধা সামরিক বাহিনীর হামলায় অন্তত ১০০ জন নিহত: জাতিসংঘ
সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দারফুর অঞ্চলের দুর্ভিক্ষকবলিত শরণার্থীশিবিরে টানা দুই দিন হামলা চালিয়েছে। এতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জন শিশু ও ৯ জন ত্রাণকর্মী।
জাতিসংঘের সুদানে নিযুক্ত মানবিক সমন্বয়কারী ক্লেমেনটাইন এনকুয়েটা-সালামি জানান, আরএসএফ এবং তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা উত্তর দারফুরের প্রাদেশিক রাজধানী এল-ফাশের এবং তার আশপাশের জমজম ও আবু শোরুক শিবিরে হামলা চালায়।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শরণার্থীশিবির দুটিতে সাত লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের বসবাস। ওই অঞ্চলে অতীতের সংঘাতগুলোতে বাস্তুচ্যুত হয়ে তারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
এনকুয়েতা-সালামি বলেন, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার দুই দিন এই হামলা চলে। জমজম শিবিরে হাতে গোনা কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটিতে কাজ করার সময় ৯ জন ত্রাণকর্মী নিহত হন। তাঁদের মধ্যে রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার কর্মীরাও আছেন।
‘যাঁরা এ ধরনের কাজ করছেন, আমি তাঁদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাই—অবিলম্বে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করুন’, বলেন এনকুয়েতা-সালামি।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা নিহত ত্রাণকর্মীদের নাম উল্লেখ করেননি। তবে সুদানের ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানায়, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার ছয় চিকিৎসাকর্মী শুক্রবার জমজমে তাঁদের হাসপাতালে আরএসএফের হামলায় নিহত হন।
সংগঠনটি জানায়, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক মাহমুদ বাবাকার ইদরিস এবং সংস্থাটির আঞ্চলিক প্রধান আদম বাবাকার আবদুল্লাহ। সংগঠনটি এই হামলাকে ‘অপরাধমূলক ও বর্বর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং এর জন্য আরএসএফকে দায়ী করেছে।
রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল নিশ্চিত করেছে যে তাদের ৯ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। এই হামলা ছিল ‘সার্বিক স্বাস্থ্য অবকাঠামোর ওপর পরিকল্পিত হামলা’। সংস্থাটি জানায়, জমজম শিবিরের মূল বাজার ও শত শত অস্থায়ী ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে।
বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসি সুদানের যে পাঁচ এলাকায় দুর্ভিক্ষ শনাক্ত করেছে, তার মধ্যে অন্যতম জমজম ও আবু শোক। চলমান যুদ্ধ সুদানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট তৈরি করেছে। সেখানে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ-অর্থাৎ দেশের অর্ধেক জনগণ-চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে।
সেনাবাহিনী গত মাসে জাতীয় রাজধানী খার্তুম পুনর্দখল করার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরএসএফ এল-ফাশের শহরে হামলা জোরদার করেছে। এটি দারফুরে একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী, যা এখনো আরএসএফের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
এই মাসের শুরুতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আরএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে তারা নারী ও কিশোরীদের ওপর ‘ভয়াবহ’ যৌন সহিংসতা ও গণধর্ষণ চালিয়েছে, যা সুদানের গৃহযুদ্ধে তাদের কৌশলের অংশ।