Risingbd:
2025-04-18@08:26:29 GMT

বগুড়ায় বাস চলাচল স্বাভা‌বিক

Published: 19th, March 2025 GMT

বগুড়ায় বাস চলাচল স্বাভা‌বিক

বগুড়ার দুই মোটর শ্রমিক নেতা‌র উপর হামলায় জ‌ড়িত‌দের তিন‌ দি‌নের মধ্যে গ্রেপ্তা‌রের আল্টি‌মেটাম দেওয়ার পর শ্রমিক‌দের কর্মবির‌তি উঠি‌য়ে নি‌য়ে‌ছে সংগঠন‌টি। 

বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুর ১টা থে‌কে কর্মবির‌তি উঠি‌য়ে নেওয়া হয়। এরপর থে‌কে প্রত্যেক‌টি রু‌টে যান চলাচল স্বাভা‌বিক হ‌য়ে‌ছে। 

বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির দায়িত্ব প্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল বারী এরশাদ।

প‌রিবহন মালিক স‌মি‌তির এই নেতা ব‌লেন, “বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা এবং সদস্য হযরত আলীর উপর হামলার ঘটনার সা‌থে জ‌ড়িত সকল‌কে আগামী তিন‌দিনের ম‌ধ্যে গ্রেপ্তা‌রের আল্টি‌মেটাম দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। সকল রু‌টে বাস চলাচল স্বাভা‌বিক হ‌য়ে‌ছে। ত‌বে বে‌ধে দেয়া সময়সীমার ম‌ধ্যে জ‌ড়িত‌দের গ্রেপ্তার কর‌তে না পার‌লে পরবর্তী কর্মসূচী দেয়ার কথা জানানো হ‌য়ে‌ছে।”

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শহরের স্টেশন রোডে নারিকেল ব্যবসায়ীদের সাথে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের উদ্ভুত প‌রি‌স্থি‌তির সৃ‌ষ্টি হয়। তা‌দের থামাতে গিয়ে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা এবং সদস্য হযরত আলী আহত হন। প‌রে স্থানীয়রা তা‌দের চি‌কিৎসার জন‌্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভ‌র্তি করান। বর্তমা‌নে তার সেখা‌নে চি‌কিৎসাধীন র‌য়ে‌ছেন।

এই হামলার জের ধরে বুধবার সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের চারমাথা, ঠনঠনিয়া, হাড্ডিপট্টি, স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় লাঠি-সোটা নিয়ে সড়কে নেমে বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেন। আকস্মিকভাবে পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ভোগা‌ন্তি‌তে প‌ড়েন যাত্রীরা।

এছাড়া ঐ ঘটনার জে‌রে বুধবার বেলা ১১টার দিকে পরিবহন শ্রমিকরা স্টেশন রোডে বন্ধ রাখা নারিকেলের দুইটি আড়তে ভাঙচুর চালি‌য়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ঢাকা/এনাম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর বহন র বহন

এছাড়াও পড়ুন:

বৈশাখের প্রথম প্রহরে কবিতা–হানিফের প্রথম সন্তান

‘স্বামী বিদেশ’ এই কথা নিয়ে যতটা হাসাহাসি করি আমরা; ঠিক ততটাই কষ্টের হয়ে কানে বাজে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী আবু হানিফের স্ত্রী কবিতা আক্তারের। কেননা, তিনি খুব ভালো করেই জানেন একজন প্রবাসী কতটা কষ্ট করেন তাঁর পরিবারের সুখের জন্য। অন্যদিকে প্রবাসীর স্ত্রীকে কতটা কষ্ট করতে হয় সংসারের জন্য, তাও এতদিনি বুঝে গিয়েছেন বিয়ের আগে অনেকটা গা বাঁচিয়ে থাকা মেয়েটি। 

২০২১ সালে পারিবারিক সিদ্ধান্তে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার সিঁদুলী ইউনিয়নের চরভাটিআনি গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী আবু হানিফের সঙ্গে সংসার পাতেন গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো কবিতা আক্তার। তাঁর জীবনটা তখন কবিতার মতোই ছিল ছন্দময়! সব কিছুই দেখতেন ইতিবাচক চোখে। স্বামী আবু হানিফ বিয়ের প্রথম রাতে যেন ছন্দপতন ঘটান কবিতার জীবনের। নিজের প্রবাস জীবনের কষ্টের কথা স্ত্রীকে বলার পর কবিতা নতুন করে ভাবনায় পড়েন। মানুষের এমনও জীবন হতে পারে? নিজেকে প্রশ্ন করতে থাকেন বার বার। এরই মধ্যে ভালোবেসে ফেলেন আবু হানিফকে। স্বামীকে কথাও দেন, সংসারের জন্য সব ধরনের কষ্ট সহ্য করে যাবেন; যদি থাকে স্বামীর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। 

দেখতে দেখতে ছুটি শেষ হয়ে যায় হানিফের। প্রিয় কবিতাকে রেখে উড়াল দেন দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশে। তবে প্রিয় স্ত্রী কবিতার ছন্দ যেন খেলা করতে থাকে তার মনে। চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল হয় না কিংবা আসল দেখাটা যে চোখের আড়াল থেকে দেখতে হয় তা বেশ ভালো উপলব্ধি করতে থাকেন হানিফ। এরই মধ্যে লাজুক মুখে কবিতা স্বামীকে শোনায় নতুন অতিথির কথা। এমন খবরে হানিফ যেন শূন্যে ভাসতে থাকে কিছুক্ষণ! পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে স্ত্রীর প্রতি আরও মনোযোগী হন। 

নিয়মিত ডাক্তার-চেকআপ, খাবার রুটিন থেকে শুরু করে সবকিছুর তদারকি করতে থাকেন হানিফ। 

দিন এগোতে থাকে। দেশে আসার জন্য মনও আকুল হতে থাকে হানিফের। এরই মধ্যে দিন গড়িয়ে নির্দিষ্ট মাসে এসে ঠেকে। ডাক্তার তারিখ ঠিক করে দেন। আরও ব্যাকুল হয়ে ওঠে হানিফের মন। এ সময়টা স্ত্রীকে দেওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু যেন নেই তাঁর কাছে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। তারা যে প্রবাসী; তাদের যে অনেক কিছুই দূর থেকে মেন নিতে হয়!

ছুটি না পেয়ে এই যাত্রায়ও হানিফ দূর থেকে মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। এরই মধ্যে শেষ হয়ে যায় চৈত্র। রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ এসে ধরা দেবে বাংলায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত এগোতে থাকে গভীরের দিকে। ঘড়ির কাঁটা ২টায় ঠেকতে প্রসব ব্যথা ওঠে কবিতার। কোনো উপায় না পেয়ে তড়িঘড়ি ভ্যানে করে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে ডাক্তার না পেয়ে বদল হয় সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে বদলে যায় বাহনও। সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেও মেলে না গাইনি ডাক্তারের দেখা। দ্রুত শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়ে হযরত শাহ জামাল (রা.) জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। এবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পরিবার। ভর্তি করানো হয় কবিতাকে। ভয়ে কুঁকরে যাচ্ছিলেন তিনি। কবিতার ছোট বোন সুবর্ণা আক্তার বলেন, ‘আমার বোনের প্রসব ব্যথা শুরু হয়েছিল রাত ১টার দিকে। মা ও আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তার না পেয়ে এখানে আসার পর এখানকার ডাক্তার ও নার্সরা খুব আন্তরিকতা দেখান। তারা বারবার সাহস জুগিয়ে বলেন, আজ পহেলা বৈশাখ, ভালো কিছু হবে ইনশাআল্লাহ!’

কবিতার পরিবারের যাচ্ছে নির্ঘুম রাত। ওদিকে কাজ শেষে বাসায় ফিরে নামাজের বিছানায় হানিফ। স্ত্রীর জন্য দোয়া করা ছাড়া এ মুহূর্তে যে তাঁর কিছু করার নেই। সময় বিবেচনায় দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশ থেকে চার ঘণ্টা পেছানো। তাই হানিফ কাজ থেকে ফিরে সেখানে সন্ধ্যা থেকে সময় কাটাচ্ছেন নামাজের বিছানায়। 

সময় ছুটছে তার আপন গতিতে। কেবল গতি হারাচ্ছে হযরত শাহ জামাল (রা.) জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগে! তবু ভোরের দিকে গড়ালো রাত। বাংলা বছরের প্রথম সূর্য উঠেছে নতুন আশার আলো নিয়ে; এই বাংলায় একই সঙ্গে কবিতা-হানিফের পৃথিবীতেও! নবজাতকের আগমনে দক্ষিণ আফ্রিকায় হানিফের ছোট্ট রুম আর হযরত শাহ জামাল (রা.) জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগে বইলো বৈশাখী ঝড়োহাওয়া!

নতুন অতিথির আগমনের পরক্ষণে ভিডিও কল দেন আবু হানিফ। সন্তানের মুখ দেখার আগে তিনি স্ত্রী কবিতা আক্তারের মুখ দেখতে চাইলেন। তারপর প্রথম এবং একমাত্র পুত্র সন্তানের মুখ দেখেন প্রবাসী হানিফ।

জামালপুর হযরত শাহ জামাল (রা.) জেনারেল হাসপাতালের ৫০৮ নম্বর কক্ষে নতুন অতিথিকে নিয়ে এসেছেন কবিতা আক্তারের বাবা-মা। অর্থাৎ সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানের নানা-নানি। তারা আদর করে নাতির নাম রেখেছেন আয়মান। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈশাখের প্রথম প্রহরে কবিতা–হানিফের প্রথম সন্তান