ন্যায্য দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পাঁচ ধরনের পণ্য নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে ‘জনতা বাজার’।

বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেলে মোহাম্মদপুরে জনতার বাজার-১ উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ। 

এ বাজারে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) থেকে পেঁয়াজ, আলু, রসুন, চাল ও আদা বিক্রি করা হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সবজি, মাছ ও মাংস পাওয়া যাবে।

ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেছেন, “ঢাকা শহরে এ ধরনের বাজার করা চ্যালেঞ্জিং। দেশের যে স্থানে পণ্যের দাম কম থাকবে, সেখান থেকে এনে কম দামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। এখন আলাদা কোনো দোকান হবে না। আগামীকাল বিক্রি শুরু হবে। বাজারমূল্যের চেয়ে উল্লেখযোগ্য কম দামে এখানে পণ্য বিক্রি করা হবে। এখানে পাইকারি না, খুচরা বিক্রি হবে। ভোক্তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য নিতে পারবেন। ঢাকা শহরে ৬-৭টি জনতার বাজার করার পরিকল্পনা আছে। ঈদের পর সব ধরনের পণ্য নিয়ে পুরোদমে চালু হবে জনতার বাজার।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড.

শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, “কোনো পণ্য আমাদের রান্নাঘরে ঢোকার আগে কয়েক বার হাতবদল হয়। এটার কারণে আমাদের ভোক্তা পর্যায়ে চাপ বাড়ে। এ উদ্যোগ সফল হলে অন্যান্য জায়গায় একই উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে। সুতরাং, এটা আমাদের জন্য পরীক্ষা।”

তিনি বলেন,“জনগণের খাদ্য নিরাপত্তায় স্বস্তি আনা প্রয়োজন। আমাদের বেঁচে থাকতে হলে ক্রয় ও বিক্রয় করতে হবে। যদি নিয়ম মেনে চলি, তাহলে আমরা সকলে লাভবান হব।”

শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, “আমাদের দেশে বড় সমস্যা হলো—ক্রেতা ও বিক্রেতা পরস্পরকে ঠকানোর চেষ্টা করে। এটা পুঁজিবাদী নীতি। রাসুল (সা.) বলেছেন, প্রতারকের সঙ্গে আমি কখনো থাকব না।”

ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে জনতার বাজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, বসিলা আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর তৌফিক ইমাম, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. জুয়েল রানা প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জনত র ব জ র আম দ র ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির অপবাদ দেওয়ায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে

কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার এক চালক শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মো. সবুজ নামের ওই চালককে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, আগুনে সুবজের শরীরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনা সদরের হাসপাতাল সড়কের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাঁদের অটোরিকশা রাখেন। পালাক্রমে তাঁরা তিনজন পাহারাও দেন। প্রায় চার মাস আগে এক রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিলেন সবুজ। ওই দিন রাত আনুমানিক দুইটার দিকে গ্যারেজে তালা দিয়ে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ওই সময় চোরচক্র দুটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ওই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। সেদিন রাতেই পুলিশ মানিককে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন মাতবর সবুজকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সবুজ জানান, তিনি ওই রায় মানেন না এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন মাতবরের প্ররোচনায় সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবুজকে আটক করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে প্রকাশ্যে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সুবজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, ‘মাতবররা চোর ধরে ছেড়ে দিছে আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করেছে। আমার স্বামী চোর আখ্যা দেওয়ার এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গরিবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গতকাল রাতে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির ঘটনায় সময় মানিক, সাইফুল ও নাজমুল নামের তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়। ওই চুরির ঘটনায় সবুজকে দায়ী করে চাপ সৃষ্টি করলে সে অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জেনেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ