পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের দেওয়া ২২৪ রানের লক্ষ‌্য ছুঁতে রূপগঞ্জ টাইগার্সের শেষ ৬ বলে দরকার ছিল ১০ রান। ওপেনিংয়ে নেমে দলকে শুরু থেকে লড়াইয়ে রাখা আব্দুল মজিদ ব‌্যাটিং করছিলেন ৯২ রানে। তার সেঞ্চুরির অপেক্ষা এবং রূপগঞ্জের জয়ের রোমাঞ্চ ছুঁয়ে যাচ্ছিল বিকেএসপির-৩ নম্বর মাঠে। পাশের ৪ নম্বর মাঠ থেকেও ম‌্যাচের খোঁজ নিচ্ছিলেন অনেকে।

শুরুর ৫ বলে কোনো বাউন্ডারি আসেনি। মজিদ কেবল একটি ডাবলস নিতে পেরেছিলেন। এছাড়া ফয়সাল স্ট্রাইক রোটেট করতে পারছিলেন। শেষ বলে রূপগঞ্জের জয়ের জন‌্য দরকার ছিল ৩ রান। মজিদের অপেক্ষা ৪ রানের।

পারটেক্সের পেসার তৌফিকের শর্ট বল উইকেট থেকে সরে ফাইন লেগের ফাঁকা জায়গা দিয়ে চার মেরে দুই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলেন মজিদ। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যা তার নবম সেঞ্চুরি। টানা পাঁচ হারের পর রূপগঞ্জ টাইগার্স পায় প্রথম জয়ের স্বাদ। পারটেক্সকে তারা হারিয়েছে ৪ উইকেটে।

আরো পড়ুন:

সাব্বির-জাকিরের ফিফটির পর শামীম-ইরফান ঝড়ে প্রাইমের দারুণ জয়

রানে ফিরে শান্তর সেঞ্চুরি, জিতে টেবিল টপার আবাহনী

তাদের জয়ের নায়ক মজিদ ১২৩ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন শতরানের ইনিংসটি। এছাড়া তিনে নামা আসাদুল্লাহ গালিব ৮০ বলে ৫০ করেন ৪ চার ও ১ ছক্কায়। শেষ দিকে আরিফুলের ৩০ বলে ৩৪ রানের ইনিংসে রূপগঞ্জের জয়ের কাজটা তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়। বাকি কাজটা সারেন সেঞ্চুরিয়ান মজিদ।

পারটেক্সের হয়ে বল হাতে ৩২ রানে ২ উইকেট নেন আহরার আমিন। ১ উইকেট পেয়েছেন আলাউদ্দিন বাবু, তানভীর হোসেন ও জাওয়াদ রোয়েন।

এর আগে পারটেক্সের ব‌্যাটিং শুরুটা বেশ ভালো ছিল। দুই উদ্বোধনী ব‌্যাটসম‌্যান ৯৮ রানের জুটি গড়েন ২৩ ওভারে। জয়রাজ শেখ ৫৪ ও রুবেল মিয়া ৫২ রান করেন। কিন্তু তারা সাজঘরে ফেরার পর আর কেউ দলের হাল ধরতে পারেনি। ১২৫ রান যোগ করতেই গুটিয়ে যায় তারা। রান পাননি অধিনায়ক সাব্বির রহমান। ৭ বলে করেন ২ রান। জাওয়াদ ২৩ ও রাকিব ২৬ রান যোগ করায় তাদের রান দুইশ পেরিয়ে যায়।

রূপগঞ্জের বোলিংয়ের সেরা ছিলেন স্পিনার আল-আমিন জুনিয়র। ২.

৫ ওভারে ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ৩ উইকেট পেয়েছেন আরেক স্পিনার মাহমুদুল হাসানও। ৪৬ রানে তিনি ৩ উইকেট পান।

লিগে প্রথম ম‌্যাচ জয়ের পর টাকা পাঁচ হারের তিক্ত স্বাদ পেল সাব্বির রহমানের পারটেক্স। অন‌্যদিকে পাঁচ হারের পর ষষ্ঠ রাউন্ডে জয়ের খাতা খুলল রূপগঞ্জ।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পগঞ জ র জয় র জয় র উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিমা মাত্র

বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।

একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)

আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫

এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।

লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’

ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’

এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’

আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)

মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।

আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।

আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ