খুলনায় গণধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সংঘর্ষ
Published: 19th, March 2025 GMT
খুলনা নগরীর শান্তিধাম মোড়ে অবস্থিত সরকারি একটি ভবনের দখল এবং দখলদার উচ্ছেদ নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে সংঘাতে জড়িয়েছে খুলনার গণঅধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এ সময় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত গণঅধিকার পরিষদের কয়েকজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সরকারি ওই ভবনে পঞ্চবিথী ক্রীড়া চক্র নামে একটি ক্লাব ছিল। সেখানে জুয়া, মাদক বিক্রিসহ নানা অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়- এমন অভিযোগে গত ২৭ জানুয়ারি পঞ্চবীথির সাইনবোর্ড ফেলে দিয়ে সেখানে গণঅধিকার পরিষদের ব্যানার টানান নেতাকর্মীরা। এর নেতৃত্বে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশিদুল ইসলাম রাশেদ। তিনি এস কে রাশেদ নামে পরিচিত। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে রাতেই এস কে রাশেদকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু অব্যাহতির পরও এস কে রাশেদ ওই ভবনে বসে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।
মঙ্গলবার রাতে ওই ভবনের দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে বার্তা ছড়ান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির খুলনার নেতাকর্মীরা। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা ভবনে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বালুমহাল ইজারার দরপত্র দাখিল নিয়ে সংঘর্ষ
গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি জানান, খুলনার ঐতিহ্যবাহী পঞ্চবিথী ক্লাব, যা ছিল এলাকার সংস্কৃতি ও সামাজিক উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে গণঅধিকার পরিষদের নামে কিছু চাঁদাবাজ ও দখলদার গোষ্ঠী এটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিল। তারা ক্লাবকে নিজেদের আস্তানায় পরিণত করে স্থানীয় দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছিল। এলাকাবাসী বারবার প্রতিবাদ জানালেও চাঁদাবাজ চক্রের দৌরাত্ম্য থামেনি। কিন্তু অবশেষে সাহসী ছাত্রজনতা দখলদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাব দখলমুক্ত করতে গেলে তারা স্থান ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এমনকি প্রশাসন সেখানে যাওয়ার পরও পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের ভাড়াটে গুন্ডাদের ডেকে এনে ছাত্রজনতার ওপর কাপুরুষোচিত হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০-১২ জন আহত হন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ফেসবুক পেজে এক বার্তায় বলেন, ‘‘খুলনায় গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর দুর্বৃত্তদের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমাদের পরিষ্কার কথা, প্রশাসন দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা এর সমুচিত জবাব দিবে।’’
এ বিষয়ে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। ফলে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে পঞ্চবিথি ভবন নামে পরিচিত সরকারি বাড়িটি গণপূর্ত বিভাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কোনো পক্ষই ওই ভবনে অবস্থান করতে পারবে না। ভবনটি পুলিশের হেফাজতে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ র ন ত কর ম র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আদালত চলতো আর মামলার রায় গণভবন থেকে আসতো বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ ঢাকা বার ইউনিটের পক্ষ থেকে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
নুর বলেন, “আওয়ামী লীগের আমলে আদালত চলতো শেখ হাসিনার নির্দেশে। মামলার রায় আসতো গণভবন থেকে। আদালতগুলোতে আওয়ামী লীগ পন্থীরা দখলদারি চালাতো। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এমন চলতে পারে না। এখানে সব দলের আইনজীবী সমান অধিকার থাকবে। শেখ হাসিনার আমলের মতো এখন আদালতগুলোতে আর দখলদারিত্ব চলতে দেওয়া হবে না।”
আরো পড়ুন:
উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনসহ চার দফা দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পাগলেও ‘মুজিব কোট’ নিতে চায় না: নুর
তিনি বলেন, “ঢাকা বারে অ্যাডহক কমিটি রয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণে দ্রুত সময়ের ভেতর ঢাকা বারের নির্বাচনের দাবি জানাই। বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ কিছুদিন হলো যাত্রা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বারে বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের কমিটি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ, আইনজীবীদের সুরক্ষা ও জনগণের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য কাজ করে যাবে।”
বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য অ্যাডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী বলেন, “ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন দ্রুত দিতে হবে। অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে ঢাকা বারের নির্বাচন প্রলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই। আইনজীবী অধিকার পরিষদ সারাদেশের সাধারণ আইনজীবীদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে।”
বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ ঢাকা বারের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলামে সভাপতিত্বে সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শওকত হোসেন, অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট সাজেদুল ইসলাম রুবেল, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/মামুন/এসবি