নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসিব নামের এক যুবদলের কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

আজ বুধবার ভোর সাড়ে চারটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবদলের কর্মী হাসিব চনপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। 

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবদলের শামীম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের রব্বানীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই জেরে আজ ভোর রাত সাতে চারটার দিকে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদলের কর্মী হাসিব নিহত হন। আহত হন উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে গুলিবিদ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় চনপাড়া এলাকাজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। 

নিহতের বড় ভাই যুবদল কর্মী বাবু বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাতে মাদক ব্যবসায়ী রবিনকে এলাকার কয়েকজন আটক করে। এ সময় কায়েতপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী রব্বানী ও তার লোকজন এসে তাকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে তারা লোকজন নিয়ে সকালে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার ছোট ভাই হাসিব গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’ 

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম বলেন, ‘আমি এলাকায় নেই। শুনেছি রবিন নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা নিয়ে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী রব্বানীর লোকজন আমার যুবদল কর্মী হাসিবকে গুলি করে। এতে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় তার পরিবার আইনি ব্যবস্থা নেবে।’ 

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা শুনেছি। রব্বানী আমার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দল করে। দোষীদের ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নারায়ণগঞ্জ ‘গ’ সার্কেলের এএসপি মেহেদী হাসান বলেন, চনপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শামীম ও রব্বানী দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে ওই এলাকায় অভিযান চলছে। দোষী ব্যক্তি যেই হোক না কেন কেউ ছাড় পাবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন হত য বদল ক ব যবস র পগঞ জ য বদল র এল ক য় রব ব ন স ঘর ষ চনপ ড় উপজ ল এ ঘটন এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ-ঘুষের বয়ানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, থানা ঘেরাও

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জুম্মার নামাজের আগে সুদ ও ঘুষ নেওয়া হারাম হুজুরের এমন বয়ানকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের চিকিৎসার জন্য গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন প্রিন্স প্রতিপক্ষকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে প্রতিপক্ষকে মারধর, ভাঙচুর, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ কালীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তবে হাসপাতালে ত্রাস সৃষ্টির ঘটনায় এসআই মিলন মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার ইফতারের আগে কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড বালীগাঁও উত্তরপাড়া এলাকায় সুদ ও ঘুষ নেওয়া হারাম বলে মসজিদে হুজুরের বয়ান দেন। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু হয়। পরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।

এই ঘটনায় বিএনপি নেতা হরমুজ আলীর তিন ছেলে জাহাঙ্গীর আলম খোকন, মোহাম্মদ সোহেল ও মোহাম্মদ সুমন গুরুতর আহত হলে আত্মীয়-স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রতিপক্ষ আহত ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মো. গোলজার হোসেন, তার ভাই মোক্তার হোসেন, হাবিবুল্লাহ, বাদু মিয়া ও মো. শামীমদেরও হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন বিএনপির নেতা গোলজার হোসেন হাসপাতালে প্রতিপক্ষের মোহাম্মদ সুমনকে মারধর করেন। 

এদিকে ছাত্রদলের কর্মী রিয়াদ হোসেন তার বাবা মোহাম্মদ সোহেলকে প্রতিপক্ষের লোকজন মারধর করেছে বলে কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবুল হোসেন প্রিন্সকে জানান। তখন ছাত্রনেতা প্রিন্স তার দলবল নিয়ে হাসপাতাল গিয়ে প্রতিপক্ষকে মারধর করেন। এ ঘটনায় রাতে বিএনপি নেতা গোলজার হোসেন সাতজনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এছাড়া অপরপক্ষের জাহাঙ্গীর আলম খোকন বাদী হয়ে ১১ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

এদিকে রোববার ভোররাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের মারধরের ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই ছাত্রদল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে সকালে থানা ঘেরাও করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা থানার ফটকে অবস্থান করেন।

আটক হওয়ারা হলেন- কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন প্রিন্স (২২), ছাত্রদলের কর্মী রিয়াদ (২৪),  চয়ন (১৬) আরাফাত (২০), সিহান (১৮) ও তারিকুল ইসলাম।

ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মো. গোলজার হোসেন বলেন, পূর্ব শক্রতার জেরে জাহাঙ্গীর ও তার স্বজনরা আমাকে একা পেয়ে মারধর করে। পরে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে সেখানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আবারও মারধর করেন।

অপরপক্ষের আহত জাহাঙ্গীর আলম খোকন বলেন, গোলজার হোসেন, তার ভাই ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা মিলে আমাকে মারধর করে। এই খবর পেয়ে বাড়ি থেকে আমার দুই ভাই এলে তাদেরও মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। 
কালীগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম প্রধান বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রদল নেতা হাসপাতালে তার বন্ধুর বাবাকে দেখতে গিয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের ভেতরে সংঘর্ষে তার জড়িত নন। প্রশাসনের পাশাপাশি আমরাও দলীয়ভাবে বিষয়টি তদন্ত করছি। হাসপাতালে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন  বলেন, ‘সুদ ও ঘুষ নেওয়া হারাম সংক্রান্ত বয়ানকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১৪-১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দুপুরে গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১
  • গোপালগঞ্জে ধানের জমিতে পানি দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষে নারী নিহত
  • সুদ-ঘুষের বয়ানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, থানা ঘেরাও