ধর্ষণের দায়ে গৃহশিক্ষকের মৃত্যুদণ্ড
Published: 19th, March 2025 GMT
চার বছর আগে রাজধানীর বনশ্রীতে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে গৃহশিক্ষক জাহিদুল ইসলামকে (৩০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এর পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থ অনাদায়ে তাকে আরো ছয় মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোসাম্মৎ রোকশানা বেগম হ্যাপী এ রায় ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো.
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মো. সাজ্জাদ হোসেন (সবুজ) বলেছেন, “ধর্ষকদের ছাড় নেই। সকল ধর্ষকের আরো কঠিন সাজা হওয়া উচিত, যেন কেউ আর ধর্ষণ করার সাহস না পায়।”
রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ইমরান হোসেন। তিনি বলেছেন, “রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। আশা করছি, উচ্চ আদালত তাকে খালাস দেবেন।”
রায় ঘোষণা সময় জাহিদুলকে কারাগারে থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবারো কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
দণ্ডিত জাহিদুল ইসলাম বরগুনা সদরের পরীখাল গ্রামের মো. ফজলুল হকের ছেলে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২১ সালের ২৩ মার্চ ওই শিশুকে আরবি বিষয়ে পড়াতে বাসায় আসেন জাহিদুল ইসলাম। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা-মা বাসার কাছে গ্যারেজে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ গৃহশিক্ষক জাহিদুলকে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে যেতে দেখেন তারা। শিশুটির কান্নার আওয়াজ শুনে তারা ঘরে যান। পরে শিশুটি জানায়, শিক্ষক তাকে ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা খিলগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা তদন্ত করে জাহিদুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ২৪ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক মোসা. রাশিদা জাহান রুনা তালুকদার। পরের বছরের ২০ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বিচার চলাকালে আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ হ দ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আদালতপাড়ায় এক হয়ে যুবককে পেটালেন সাবেক দুই স্ত্রী
সাবেক দুই স্ত্রী এক হয়েছে জুতা দিয়ে পিটিয়েছেন নুর মোহাম্মদ নামে এক যুবককে। রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শাহনাজ আক্তার নুর মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী, হ্যাপী দ্বিতীয়। এদিন একটি মামলার ধার্য তারিখ ছিল। তারা তিনজনই আদালতে হাজির হন। হাজিরা শেষে মারামারির ঘটনা ঘটে। শাহনাজ আক্তার ও হ্যাপী আক্তার পায়ের জুতা খুলে নুর মোহাম্মদকে পেটান। এ সময় নুর মোহাম্মদ সাহায্যের আকুতি জানান। উপস্থিত জনতা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। তবে তারা তা মানেননি। মাঝেমধ্যে নুর মোহাম্মদ সুযোগ খুঁজে দৌড়ে পালানোরও চেষ্টা করেন। তাতেও সফল হননি। তারা দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে আবার মেরেছেন। এতে কিছুটা আহত হন নুর মোহাম্মদ। তার পরনের শার্ট, গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলেন তারা। যেভাবে পেরেছেন কিল, ঘুষি, জুতাপেটা করেছেন সাবেক এই দুই স্ত্রী। কিছুটা সময় পরে তাদের আইনজীবী তাদের নিয়ে যান।
শাহনাজ আক্তার ও হ্যাপী আক্তারের আইনজীবী পাপিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘আজ একটা মামলার ধার্য তারিখ ছিল। আসামি নুর মোহাম্মদ আদালতে হাজির হন। তার সাবেক দুই স্ত্রীও আদালতে হাজির হন। শুনানি শেষে শাহনাজ আক্তার ও হ্যাপী আক্তার মিডিয়ার সাথে কথা বলছিলেন। তখন নুর মোহাম্মদ দুইজনকেই তলপেটে লাথি মারেন। এরপরের ঘটনা তো আপনারা দেখলেন।’’
হ্যাপী আক্তার বলেন, ‘‘বিয়ের কয়েক মাস পর সে আমাকে জোর করে তালাক দেওয়ায়। এরপর লুকিয়ে বেড়ায়। এরওর কাছে বলে বেড়ায় আমি খারাপ। আমি যদি এত খারাপ হয়, বিয়ের আগে দেখোস নাই? আমি বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। কোনো অন্যায় ছিল না আমার। ধুমধাম করে, ওর চাহিদা পূরণ করে বিয়ের ব্যবস্থা করেছে। ও একটা ফ্রট। ওর সুষ্ঠু বিচার চাই। ও যেন আর কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করতে না পারে।’’
শাহনাজ আক্তার বলেন, ‘‘২০১৫ সালে আমাদের বিয়ে হয়। ২০১৭ সালে আমার প্রথম বেবি (মেয়ে) হয়। ২০২২ সালে দ্বিতীয় মেয়ে হয়। মেয়ে হওয়ায় ও আমাকে ডিভোর্স দেয়। পরে জানতে পারি ও দ্বিতীয় বিয়ে করছে। আকুতি-মিনতি করে বলেছি, ছোট একটা বাসা নিয়ে মেয়েসহ আমাকে রাখ। আমাকে কোনোভাবে রাখে নাই। মেয়ে দুইটাকেও দেখতে দেয় না। আমাকে শেষ করে ফেলছে। ওর এ ধরনের ক্রাইমের সাথে ওর পরিবারও জড়িত। ওদের ফাঁসি চাই। ওরে আমি আমার জীবনের চেয়ে বেশি পছন্দ করছি। ওর ফাঁসি চাই।’’
নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘‘হ্যাপী আক্তার প্রতারণা করে আমাকে বিয়ে করছে। তাকে বলছি, আমার স্ত্রীকে ছাড়তে পারবো না। সে এত খারাপ মানুষ না। হুমকি দেয়, প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দিলে থানায় নিয়ে যাব। বাধ্য করে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিই।’’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রথম স্ত্রীর পরিবার আর্থিকভাবে চাপ দেয়। এ নিয়ে তাদের সাথে মনোমালিন্য হয়। এ কারণে তাকে তালাক দিই। দ্বিতীয় ফ্রট এসে বলে বাচ্চার দায়িত্ব নেবে। প্রথম স্ত্রীর ভাই কয়েকদিন পর পর শুধু টাকা চায়। না দিলে বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ দেয়। মিথ্যা রটনা রটায়। হেয় প্রতিপন্ন করে। আমার মেয়ে বলে, আব্বু বিভিন্ন লোকজন বাসায় আসে, তারা থাকে। আমার মারধর করে অন্য রুমে রেখে দেয়। পরে তাকে তালাক দিই। হ্যাপী আমাকে প্রতারণা করে বিয়ে করে। সে আমার প্রথম স্ত্রীকেও মিসগাইড করছে। আজ কোর্টে আসছি। আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমার কী অবস্থা করছে দেখেন।’’
ঢাকা/মামুন/এনএইচ