খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় সুবি ত্রিপুরা (৩৫) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফের (প্রসীত) সদস্য। আজ বুধবার সকালে মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী তাইন্দং ইউনিয়নের হেডম্যানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সুবি ত্রিপুরা দলে অন্তিন ত্রিপুরা নামে পরিচিত। তাঁর বাড়ি হেডম্যানপাড়া এলাকাতেই। একই সময়ে তাঁর বোন তারাপাতি ত্রিপুরা (২১) গুলিতে আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপিডিএফ সূত্রে জানা গেছে। তবে বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি।

ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক অংগ্য মারমা প্রথম আলোকে বলেন, সকালে সাংগঠনিক কাজে গিয়ে সুবি ত্রিপুরা তাঁর বোনের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ১০ থেকে ১৫ জন সশস্ত্র ব্যক্তি তাঁকে উদ্দেশ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। এতে ঘটনাস্থলে সুবি ত্রিপুরার মৃত্যু হয়। একই সময়ে গুলিতে সুবি ত্রিপুরার ছোট বোন আহত হয়েছেন। হামলাকারী ব্যক্তিরা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-জেএসএসের (সন্তু) নেতা-কর্মী বলে অভিযোগ করেন অংগ্য মারমা।

অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জেএসএস নেতাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বেলা দেড়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল দুর্গম এলাকায় হওয়ায় এখনো লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।

এর আগে গত রোববার রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের খামারপাড়ায় নির্মল খীসা নামের ইউপিডিএফের এক সদস্য গুলিতে নিহত হন। ৩ মার্চ পানছড়ি লোগাং সীমান্তবর্তী হাতিমারা এলাকায় ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে রূপসী চাকমা নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে কারফিউ জারি

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত জেলাটিতে জনসাধারণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে গতকাল রোববার কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন।

কয়েক দিন ধরে উত্তর ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। কারফিউ জারির মাত্র তিন দিন আগে একটি তল্লাশিচৌকিতে সশস্ত্র হামলাকারীদের আক্রমণ নস্যাৎ করে দিয়েছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ওই ঘটনায় ১০ হামলাকারী নিহত হয়েছিল। এর আগে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জানদোলা এলাকায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে।

এর এক দিন পর দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছিল, ওই বিস্ফোরণে রাজনৈতিক দল জামিয়াত উলেমা ইসলাম–ফজলের (জেইউআই–এফ) জেলা আমিরসহ অন্তত চারজন আহত হন।

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র হামলা বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (পিআইসিএসএস) তথ্য অনুযায়ী, ওই মাসে হামলার সংখ্যা আগের মাসের চেয়ে ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

পিআইসিএসএসের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানজুড়ে অন্তত ৭৪টি সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ২০ জন বেসামরিক মানুষ ও ৩৬ জন সশস্ত্র হামলাকারী ছিলেন। এ ছাড়া ৫৩ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ৫৪ বেসামরিক লোকজন ও ১০ জন সশস্ত্র হামলাকারী আহত হন।

জানুয়ারিতে পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। এরপরই রয়েছে বেলুচিস্তান। পিআইসিএসএসের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ওই মাসে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে বিভিন্ন জেলায় ৪৬টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর বেলুচিস্তানে অন্তত ২৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে কারফিউ জারি