নারীর মুক্তি দরকার—কথাটা বললে এটা স্বীকার করে নেওয়া হয় যে ‘নারী বন্দী’। এরপর প্রশ্ন আসে, নারী বন্দী কার কাছে? নারী কি শুধুই পুরুষের কাছে বন্দী, নাকি সে নিজের কাছেও বন্দী? নারী নিজের কাছে কীভাবে বন্দী, তা আলোচনার আগে দেখা যাক, নারী পুরুষের কাছে কীভাবে বন্দী, অর্থাৎ নারীর বন্দিত্বের রূপ কী কী।

নারী যে কারাগারে বন্দী, তার নাম ‘পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের ভাবনা’। পুরুষের ধারণা, নারীর কর্মক্ষমতা বা শক্তি, এমনকি মেধাও তাঁর চেয়ে কম। নারীর কর্মক্ষমতা বা শক্তি ও মেধা পুরুষের চেয়ে কম—এমন ধারণা পোষণের ক্ষেত্রে পুরুষ দুই দলে বিভক্ত। একদল মনে করে, ঈশ্বরই নারীকে কম শক্তি ও মেধা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। নিরীশ্বরবাদী পুরুষদেরও অনেকে নারীকে পুরুষের চেয়ে কম শক্তি ও মেধার অধিকারী মনে করেন। তাঁরা মনে করেন, নারী জন্মগতভাবে এমন শারীরিক গঠনপ্রাপ্ত যে তা অপেক্ষাকৃত দুর্বল; নারীকে মাসে একবার ঋতুমতী হতে হয়, যখন তাঁর মন-মেজাজ, শরীর সব কাজের জন্য উপযুক্ত নয়, বিশেষ করে ঋতুকালে নারী যুদ্ধে যাওয়ার জন্য যোগ্য নন ইত্যাদি।

একজন নারী বা পুরুষ আদতে একজন ব্যক্তি—তিনি রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের একজন সদস্য। রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের বিবেচনায় সে একটি একক সত্ত্বা, একটা ইউনিট শুধু নয়, সে একটা লিগ্যাল এনটিটি তথা একটি আইনি সত্তাও বটে এবং এই একক সত্তার বা ইউনিটের বা লিগ্যাল এনটিটির ধারণাটা জেন্ডার-নিরপেক্ষ। এ বিষয়ে দার্শনিক জন স্টুয়ার্ট মিলের বক্তব্য পরিষ্কার। তিনি লিখেছেন, লৈঙ্গিক ভিন্নতার কারণে, জৈবিকভাবে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। নারী-পুরুষের মধ্যে যে প্রকৃতিগত পার্থক্যের কথা বলা হয়, তা–ও পুরুষতন্ত্রের সৃষ্টি এবং প্রথাভিত্তিক।

একজন ব্যক্তিকে বিবেচনা করতে হবে হোলিস্টিক ভিউ, তথা সামগ্রিক দৃষ্টিতে; অর্থাৎ কোন কোনো কাজে পুরুষ বেশি উপযোগী আবার কোনো কোনো কাজে নারী বেশি উপযোগী। কিছু গুণ নারীর মধ্যে বেশি মাত্রায় বিদ্যমান, যেমন সহ্যশক্তি, যা সন্তান ধারণ, প্রসব ও পালনের ক্ষেত্রে বেশি প্রয়োজন। অতএব দৈবচয়নের মাধ্যমে একজন পুরুষ ও একজন নারী এনে যদি সামগ্রিক দৃষ্টিতে দুজনকে তাঁদের সমস্ত গুণ যোগ করে পরিমাপ করা হয়, দেখা যাবে দুজনই ১০০ মার্কস পেয়েছেন। অতএব পুরুষের চেয়ে নারী হেয়—এ চিন্তা অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক।

‘পুরুষ নারীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ’—এ ধারণা পুরুষের মস্তিষ্কে স্থায়ীভাবে উপ্ত হয়ে আছে, যা নারীর বন্দিত্বের প্রধান কারণ। বস্তুত, নারী কীভাবে নিজের কাছেও বন্দী। ‘পুরুষ নারীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ’—এ ধারণা যখন নারী নিজেই পোষণ করেন, তখন তিনি নিজের কারাগারেই নিজে বন্দী। নারী নিজেও পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বকে মেনে নিয়েছেন। নারী ঘরসংসারের কাজ করবেন, তা স্বামী-স্ত্রী দুজনেও যদি ঘরের বাইরে একই রকম চাকরিও করেন, তবু। নারী পুরুষকে সেবা করবেন, চা বানিয়ে হাতে তুলে দেবেন, রান্না করবেন, খাবার পরিবেশন করবেন, খাবারের থালা ধৌত করবেন, তাঁর কাপড় ধুয়ে দেবেন, জ্বর হলে মাথা টিপে দেবেন, পা টিপে দেবেন; কিন্তু স্বামী এ কাজগুলো স্ত্রীর জন্য করবেন না। আবার কোনো স্বামী যদি করতেও চান, স্ত্রী তা করতে দেবেন না; কারণ, তাতে ‘পাপ’ হতে পারে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীর মধ্যেও যে মাইন্ডসেট তৈরি করেছে, তা তাঁকে বলছে, ‘ওই সব কাজ নারীকেই মানায়।’ এভাবেই নারী নিজের কাছে নিজে বন্দী।

নারীর নোবেল প্রাপ্তির গল্প পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের ধারণা নিশ্চিতভাবেই ভেঙে খানখান হয়ে পড়বে। ১৯০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নারীরা ৫৮ বার নোবেল পান। নোবেল পুরস্কারের সূচনা হয় ১৯০১ সালে আর মারি কুরি নোবেল পেয়ে যান ঠিক দুই বছর পর, অর্থাৎ ১৯০৩ সালেই। পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পাওয়ার পর তিনি আবার নোবেল পেলেন ১৯১১ সালে রসায়নে। মারি কুরি ছাড়া আর মাত্র তিনজন নোবেল পান দুবার করে। কিন্তু মারি কুরিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি গবেষণাভিত্তিক নোবেল পান দুটি ভিন্ন বিষয়ে এবং এত আগে।

নোবেল কমিটি ‘পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছেন যে নারীরা’ ও ‘ইন্সপাইরেশনাল উইমেন তথা প্রেরণদায়ী নারীরা’ শিরোনামে দুটি ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। প্রথমটিতে কানাডার ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড, পোল্যান্ডের মারি কুরি, প্রাগের গার্টি কোরি, মার্কিন ঔপন্যাসিক টনি মরিসন, ইরানের মানবাধিকারকর্মী শিরিন এবাদি ও ফ্রান্সের অর্থনীতিবিদ এশথার ডুফলোর নাম উল্লেখ করে।

‘ইন্সপাইরেশনাল উইমেন’ ক্রোড়পত্রেও ছয়জন নারীর যুগান্তকারী অবদানের কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তাঁর মধ্যে আছে মারিয়া গোপার্ট মেয়ের পদার্থবিদায় ১৯৬৩ সালে, জেনিফার আ ডোউডনা রসায়নে ২০২০ সালে, ক্যারোল ডব্লিউ গ্রেইডার ২০০৯ সালে মেডিসিনে, এলফ্রিয়েডে জেলিনেক ২০০৪ সালে সাহিত্যে, মেইরেড কোরিগান শান্তিতে ১৯৭৭ সালে এবং প্রথম নারী হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পান এলিনোর অসট্রম ২০০৯ সালে।

নারীর কর্মক্ষমতা বা শক্তি ও মেধা পুরুষের চেয়ে কম—এমন ভাবনা নারীর ক্ষমতায়নে সবচেয়ে বড় বাধা। ওপরের ওই ঔৎকর্ষের গল্প এমন ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করে। তারপরও আমরা নারীকে দেখি বন্দী হতে—বাবার কাছে, ভাইয়ের কাছে, স্বামীর কাছে, সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে। তবে সবচেয়ে ভয়কংর হবে, যদি তিনি নিজের কাছেই বন্দী হন আর নিজের কাছে বন্দী হওয়ার অর্থ হলো নারী যদি নিজেই নিজের চেয়ে পুরুষকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন। নিজের কাছে বন্দী হলে কেউ তাঁকে মুক্ত করতে পারবে না।

নারীর মুক্তি কীভাবে হবে, তা বলার আগে বলে নিই নারীর মুক্তির লক্ষণ কী, অর্থাৎ কীভাবে বুঝবেন নারীর মুক্তি ঘটেছে? প্রথমত পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর জন্য পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া মানে নারীর মুক্তি ঘটা। এই অধিকার দৃশ্যমান হতে পারে নারীর সম্পদে ও উৎপাদনযন্ত্রে মালিকনা লাভের মধ্যে, কাজে ও আয়–উপার্জনে নারীর জন্য পুরুষের সমান অধিকারের মধ্যে। সম্পদে ও উৎপাদনযন্ত্রে মালিকনা লাভের প্রক্রিয়াটাও হতে হবে জেন্ডার–নিরপেক্ষ। দ্বিতীয়টি হলো পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সিদ্ধান্ত তৈরিতে ও নীতি প্রণয়নে নারীর পুরুষের সমান অধিকার। এই অধিকার প্রাপ্তিই হলো নারীর ক্ষমতায়ন। স্থূলভাবে নারীর ক্ষমতায়নই নারীর মুক্তি। কিন্তু আদতে এই ক্ষমতায়নে কি নারীর পুরোপুরি মুক্তি ঘটে? ঘটে না। নারীর মুক্তি ঘটা মানে উল্লেখিত ‘পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের’ যে মাইন্ডসেট নারী ও পুরুষ উভয়ই ধারণ করে, তা থেকে মুক্তি। নারীর মুক্তির জন্য ওই মাইন্ডসেট থেকে শুধু নারী মুক্ত হলেই হবে না, মুক্ত হতে হবে পুরুষকেও। পুরুষের মুক্তি ছাড়া নারীর মুক্তি ঘটবে না।

এই মুক্তি কীভাবে ঘটবে? সংক্ষেপে উত্তর হলো বিজ্ঞানের ও মনস্তত্ত্বের শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে। বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি ও মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞানের অভাবে অর্থাৎ অজ্ঞতার কারণেই পুরুষ ও নারী উভয়েই পুরুষকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন। এ জন্য দরকার একটা বিজ্ঞান ও যুক্তিনির্ভর শিক্ষার ব্যবস্থা (লক্ষ করুন, এখানে ‘শিক্ষাব্যবস্থা’ বলা হয়নি, বলা হয়েছে ‘শিক্ষার ব্যবস্থা’) কারণ জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে পরিবার থেকে, পরিপার্শ্ব থেকে শিশু প্রথম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পেয়ে থাকে, যা তার মাইন্ডসেট তৈরি করে দেয়, যা থেকে বের হওয়া কঠিন। এমন একটা জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা ও সর্বক্ষেত্রে একটা শিক্ষার ব্যবস্থা, প্রক্রিয়া ও সুযোগের জন্য চাই প্রগতিবাদী রাজনীতি, কারণ বিজ্ঞান-প্রযুক্তির বা উদ্ভাবনের ও ভালো অর্থনৈতিক নীতি–সুফল মানুষের জীবনে পৌঁছাবে কি না, তা নির্ধারণ করে রাজনীতি। একটা প্রগতিবাদী রাজনীতিই সেটি করতে পারে। আর একটি প্রগতিবাদী রাষ্ট্রই পারে এমন একটা শিক্ষার ব্যবস্থা ও শিক্ষার প্রক্রিয়া চালু করতে। অতএব নারী যদি মুক্তি চান, তাঁকে ব্যাপকভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় হতে হবে, রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। ক্ষমতা কাঠামোয় ভূমিকা থাকতে হবে নারীবাদী নারী ও নারীবাদী পুরুষকে। সমতার দর্শনকে মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে একটা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে হবে, কারণ সর্বক্ষেত্রে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা ছাড়া নারীর জন্য পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব।

এন এন তরুণ অর্থনীতির অধ্যাপক, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ। সাউথ এশিয়া জার্নালের এডিটর অ্যাট লার্জ। [email protected]; nntarun.

com

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষ র ব যবস থ র র জন য র জন ত পর ব র করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারের মেয়েটি

কক্সবাজার ট্যুরে আমাদের খুবই অল্প সময় হাতে নিয়ে কিছু জায়গায় ঘোরা হয়েছিল। এর মধ্যে আমরা একটা জায়গায় শুধু ‘সিএনজি মামার’ অনুরোধে ঘুরতে যাই। সেখানে পৌঁছাই খুব ভোরে। তখনো পার্কের গেট খোলার সময় হয়নি।

আমরা ফিরে যাব ভাবছি, এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন ডাক দিলেন। তাকিয়ে দেখি, গেটের পাশেই কোনোমতে কয়েকটা ভাঙাচোরা কাঠ আর বাঁশের খুঁটির ওপর টিকে থাকা একটা চায়ের দোকান। সেখান থেকেই মাথা বের করে একজন ভদ্রমহিলা জানালেন, পার্কের দায়িত্বরত গাইড এখনো আসেননি। তবে আমরা চাইলে তিনি তাঁর মেয়েকে পাঠাবেন আমাদের গাইড করার জন্য।

রিজার্ভ করা সিএনজি মামার চোখের ইশারায় আস্থা পেয়ে আমরা সময়টুকু আর নষ্ট করতে চাইলাম না।

তখনো পার্কের কাউন্টার খোলেনি। সিএনজি মামা স্থানীয় লোক। তাই টাকা রেখে নিরাপত্তাকর্মীরা ঢুকতে দিলেন।

ভেতরে যাওয়ামাত্রই কেউ একজন সালাম দিল আমাদের।

‘আমি রুবা।’

স্বাভাবিক কুশলাদি বিনিময় হলেও আমাদের সবার মধ্যে কেমন এক মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ল। ১২–১৩ বছর বয়সী হবে মেয়েটা। পরিবারের সঙ্গে পার্কের ভেতরেই একটি ছোট্ট আশ্রয় ওদের।

মেয়েটির স্মিত হাসি, স্পষ্ট উচ্চারণ, নেই কোনো আঞ্চলিকতা। মুগ্ধ করার মতো। আমাদের সময়স্বল্পতা বুঝেই সে বেশ দ্রুততার সঙ্গে ভেতরের দর্শনীয় স্থানগুলোতে নিয়ে গেল। সেই জায়গাগুলোর চমৎকার সব ইতিহাস শোনাল। আমরা মেয়েটিকে তার নিজের সম্পর্কে জিজ্ঞেস  করছিলাম। কেননা তার বাচনভঙ্গি, চলাফেরা প্রথমেই সবার নজর কেড়েছে।

পার্কের ভেতরে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে আমরা অপলক দৃষ্টিতে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখছিলাম। দূরে পাহাড়ের বুকে ছোট্ট কিছু আবাস চোখে পড়ল। রুবা হাত উঁচিয়ে দেখাল, ওখানেই ওরা একসময় থাকত। পাহাড়ের সবুজের মাঝে, গুটিকয় বাড়ি, তাদের জন্যই গড়ে ওঠা চার–পাঁচটা দোকানের সমন্বয়ে ছোট্ট একটি বাজার। জীবনের কী অদ্ভুত রূপ!

রুবা ওর বড় বোনের কথা বলল। বোনটি লেখাপড়া করত। এ রকমভাবে গাইড করত পর্যটকদের। পরে কিশোরী বয়সেই বিয়ে হয়ে যায়।

রুবা যখন আমাদের নিয়ে সিঁড়ি কাটা পাহাড়ের ওপরে ওঠে, তখনই পেছন থেকে একটি কুকুর দৌড়ে এসে ওর গায়ে উঠতে থাকে। আমরা রীতিমতো ভয় পেয়ে যাই। ওদের আদর বিনিময় আমাদের নজর কাড়ে। রুবা ওকে কোনোমতে শান্ত করে আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়, ‘ওর নাম টাইগার।’

এই পার্কের ভেতরে রুবার একমাত্র সাথি এই টাইগার। বাবা–মা দুজনই চায়ের দোকানে ব্যস্ত থাকেন। আর রুবা স্কুলের সময় বাদে বাকি সময়টা টাইগারের সঙ্গেই এই বিশাল এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। কী সুন্দর জীবন! পরিশুদ্ধ বাতাস, সবুজ প্রকৃতি, নেই কোনো কৃত্রিম আবেগ, প্রযুক্তির ছোবল।

যে কিশোর বয়সের সুন্দর সময়গুলো আমাদের শহরের ছেলেমেয়েরা মোবাইলের স্ক্রিনে মাথা গুঁজে হারিয়ে ফেলে। পাঁচজন মানুষের কাছে নিজেকে উপস্থাপনের বেলায় ব্যক্তিত্বের চেয়ে পোশাক আর মেকআপের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ভেতরটা ফাঁপা রয়ে যায়। সম্ভবত এসব কারণেই রুবার সাধারণ জীবনের গল্প আমাদের এতটা বিমোহিত করছিল!

তবে দিনের যে সময়ে পর্যটকদের ভিড় থাকে, রুবার তখন এখানে আসা নিষেধ! নগরজীবন থেকে দূরে থাকলেও দেশের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর ঠিকই রাখেন রুবার মা–বাবা।

এলাকাটি ঘুরে দেখিয়ে রুবা আমাদের চমৎকার একটি স্থাপনার কাছে নিয়ে গেল। কক্সবাজারের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত একটি স্থাপনা, যেখানে কাঁকড়া থেকে শুরু করে ঝিনুক, শামুক, ডাব— সবকিছুর টেরাকোটা করা হয়েছে।

ফেরার সময় রুবার মা–বাবা আমাদের যখন বিদায় দেন, ছোট্ট করে একটা অনুরোধ করলাম, ওকে যেন পড়াশোনার সুযোগ দেন, সে যত দূর পড়তে চায়।

কক্সবাজার থেকে আসার সময় আমরা ব্যাগ ভর্তি করে অনেক কিছু নিয়ে এসেছিলাম, যেগুলো বাসায় এনে ভাগ–বাঁটোয়ারা করে, একে–ওকে দিয়ে, খেয়ে শেষ হয়ে গেছে।

কিন্তু রুবার গল্পটা মনের মধ্যে নিয়ে আসায় এটা আর শেষ হয়নি।

ডা. মো. জাহিদুল আলম, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত বিএনপির ২ নেতার পদ স্থগিত
  • চাঁদাবাজির প্রতিবাদকারীর নামে মামলা দিলেন জবি ছাত্রদল নেতা
  • চাল না পেয়ে জেলেদের ইউপি পরিষদ ঘেরাও
  • ১৯০ বিঘা খাস জমি দখলে নিতে সংঘর্ষ, নিহত ১
  • ফুলবাড়ীতে কালবৈশাখী: গাছ উপড়ে ঘরে চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু 
  • টাকা দিয়েও পছন্দের সিট পাননি ইমন, আনলেন হেনস্থার অভিযোগ
  • গাজার জন্য সমব্যথী নারী
  • তৃণমূলের একজন কর্মীকেও হারাতে দেয়া যাবে না : রিয়াদ চৌধুরী
  • শেখ হাসিনার সন্ধান চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
  • কক্সবাজারের মেয়েটি