দলীয় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবদল কর্মী নিহত
Published: 19th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। তাঁরা দুজনই যুবদলের কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, যুবদলের দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে মারামারির এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ভুজপুর থানার শান্তিরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রমজান আলী (২৫)। তিনি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব তারাকো গ্রামের মৃত হানিফের ছেলে। আহত হয়েছেন মুহাম্মদ হাসান (২৩)। তিনিও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা।
ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার ঘটনায় ভুজপুর থানায় গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে একটি হত্যা মামলা করেছে রমজানের পরিবার। এতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই যুবদলের কর্মী। এর মধ্যে চারজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মুহাম্মদ হাসান (২৩), মুহাম্মদ মহিম (২০), মুহাম্মদ ফোরকান (১৯) ও পেয়ার আহমদ (২৭)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই দাঁতমারা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে আহত যুবদল কর্মী হাসানের একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় নিহত রমজান আলীর পক্ষের যুবদলের কর্মীদের দায়ী করে আসছিলেন হাসানের পক্ষের লোকজন। তবে চুরির ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। চুরির বিষয়টি নিয়ে গতকাল রাতে সাড়ে নয়টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে রমজান ও মুহাম্মদ হাসান গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রমজান আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
যুবদলের নেতা-কর্মীরা জানান, রমজান আলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজিম উল্লাহ বাহারের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। তাঁর ওপর হামলাকারীরা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব সরোয়ার আলমগীরের অনুসারী। ঘটনার বিষয়ে জানতে আজিম উল্লাহ বাহারকে কল করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব সরোয়ার আলমগীর বলেন, পুলিশ আসামিদের না ধরায় গত ছয় মাসে ভুজপুরে পাঁচটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা যে পক্ষেরই হোক, তাঁদের পুলিশ গ্রেপ্তার করুক, সেটি তিনি চান। সরোয়ার আলমগীর আরও বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে বিশ্বাসী, সন্ত্রাসী-খুনি দলে রাখতে চাই না। ওই ইউনিয়নের বিএনপির দুজন নেতার প্রশ্রয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে।’
ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মূলত মোটরসাইকেল চুরির ঘটনার জেরে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের লোকজনই বিএনপি ও যুবদলের কর্মী। তাঁদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়েও দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। তিনি আরও বলেন, ঘটনায় জড়িত চারজনকে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ম হ ম মদ ব এনপ র র ঘটন উপজ ল ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বাসায় ঢুকে চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ৪
রাজশাহী নগরের বড়বনগ্রাম এলাকায় এক ফ্রিল্যান্সারের বাসায় ঢুকে মারধর ও চাঁদা দাবির অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল, চাকু, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও স্টাম্পসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার হয়।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুর
সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা হত্যা: এমপি ও এসপির বিরুদ্ধে মামলা
গ্রেপ্তার চারজন হলেন- নগরের শাহমখদুম থানার বড়বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকার সাজ্জাদুর রহমান (২৫), একই এলাকার হাসানুর রহমান রাব্বি (২৫), ভাড়ালিপাড়া এলাকার রাকিব হাসান (২৮) ও নগরের বোয়ালিয়া থানার কুমারপাড়া এলাকার সানি রহমান (৩০)।
আরএমপির মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন জানান, গোপালগঞ্জের এক ব্যক্তি বড়বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করেন। রবিবার বিকেলে তার বান্ধবী জরুরি প্রয়োজনে বাসায় তার সঙ্গে দেখা করতে যান। কিছুক্ষণ পর চারজন দেশীয় অস্ত্রসহ জোরপূর্বক বাসায় প্রবেশ করেন। তারা ওই দুইজনের মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন এবং পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ভুক্তভোগীদের মারধর এবং বাসার বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। অভিযুক্তরা ওই ফ্রিল্যান্সারের বান্ধবীর ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে।
তিনি আরো জানান, অভিযুক্তরা ওই তরুণীকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করেন তারা। তাকে ধর্ষণের চেষ্টাও করা হয়। ওই ফ্রিল্যন্সার কৌশলে তার সহকর্মীর মাধ্যমে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্তরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে নগরের শাহমখদুম থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ