খাগড়াছড়িতে গুলিতে ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের সদস্য নিহত
Published: 19th, March 2025 GMT
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসিত গ্রুপের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে মাটিরাঙ্গা তাইন্দং হেডম্যান পাড়া এলাকার এই ঘটনায় আরেকজন নারী আহত হয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম অস্তিন ত্রিপুরা। তিনি মায়া কুমারপাড়ার বাসনা ত্রিপুরার ছেলে। তার বোন তারাপতি আহত হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
যশোরে অ্যাম্বুলেন্স-ভ্যানের সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ নিহত ৩
বাউফলে পিটুনিতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় ২ মামলা
ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, তাদের সাধারণ কর্মীদের ওপর অর্তকিতে হামলা চালালে অস্তিন ত্রিপুরা ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনা জন্য তিনি সন্তু লারমা জেএসএসকে-কে দায়ী করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে সন্তু লামরা দলের পক্ষের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মাটিরাঙ্গা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হেনা মোহাম্মদ মোস্তফা রেজা জানান, ঘটনার কথা শুনেছি। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এখনো নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। তবে সেখানে পুলিশ পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে ১৬ মার্চ রাঙামাটির সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের খামার পাড়ার তৈ মেদুং পাহাড়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নির্মল খীসা (৩২) নামে এক যুবক নিহত হন। তিনি ইউপিডিএফের কর্মী ছিলেন। নিহত নির্মল নানিয়ারচর উপজেলার নানিয়াচর ইউনিয়নের ইউনিয়নের তৈ-চাকমা গ্রামের সুনীল বিহারী খীসার ছেলে।
পাহাড়ে প্রায়ই আন্তঃদলীয় কোন্দলের জেরে গুলির ঘটনা সামনে আসে।
ঢাকা/রূপায়ন/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়