রিমান্ড যা দেয় দিক, কিছু বলার দরকার নেই
Published: 19th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে ওবায়দুল ইসলাম নিহতের মামলায় সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৯ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। দীপু মনির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টার পর দীপু মনিকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে দীপু মনিকে এজলাসে তোলা হয়।
এ সময় আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন দীপু মনি। আইনজীবী তাকে বলেন, “আপা, আজ সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে।” জবাবে দীপু মনি বলেন, “যা রিমান্ড দেয় দিক। শুনানিতে কিছু বলবি না। কিছু বলার দরকার নেই।” তখন আইনজীবী বলেন, “আপা, শুধু রিমান্ড বাতিলের আবেদন দিয়েছি। কোনো শুনানি করব না।”
১০টা ২ মিনিটের দিকে শুনানি শুরু হয়। পরে আদালত তার চার দিনেরর রিমান্ডের আদেশ দেন। এ মামলায় হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননেরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
শুনানি শেষে ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে পুলিশি পাহারায় আদালত থেকে দীপু মনিসহ অন্যদের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর বারিধারা এলাকা থেকে দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা পেট্রোল পাম্পের সামনে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে হাজার হাজার মানুষের ওপর গুলি চালায়। এতে ওবায়দুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৫৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন তার স্বজন মো.
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ
‘কে টেলিকমের’ শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করে ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
‘সরকারের পাওনা ১২৬ কোটি টাকা, ফাঁকি দিতে অভাবনীয় জালিয়াতি ওসমান পরিবারের’ শিরোনামে গত ১৪ জানুয়ারি প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর ফকিরাপুলের ডিআইটি রোডের একটি ভবনে ছোট একটি কক্ষে সাখাওয়াত হোসেনের ট্রাভেল এজেন্সির কার্যালয়। সাখাওয়াত ফকিরাপুলেই একটি মেসে থাকেন। যদিও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নথিপত্রে সাখাওয়াত কে টেলিকম নামের (পরে ইন্টারন্যাশনাল ভয়েস টেল লিমিটেড নামকরণ হয়) একটি ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউ কোম্পানির অংশীদার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। কে টেলিকমের কাছে বিটিআরসির পাওনা ১২৬ কোটি টাকার বেশি। কে টেলিকমের মালিক ছিল নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পরিবার।
বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের পাওনা টাকার দায় এড়াতে তড়িঘড়ি করে ওসমান পরিবার কে টেলিকমের মালিকানা ওই তিন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করে। এ ক্ষেত্রে জালিয়াতি করা হয়েছে। ভুয়া ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ওসমান পরিবারের এই কারসাজির সহযোগী ছিল। নথিপত্রে দেখা যায়, ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট ওসমান পরিবার কে টেলিকমের মালিকানা সাখাওয়াত হোসেন, সিলেটের স্কুলশিক্ষক দেবব্রত চৌধুরী ও বগুড়ার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী রাকিবুল ইসলামের নামে হস্তান্তর করে। তাঁরা তিনজন প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁরা কেউই এ বিষয়ে জানতেন না। জালিয়াতি করে তাঁদের মালিক দেখানো হয়েছে।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে সাখাওয়াত হোসেন ওই রিট করেন। আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব এবং সৈয়দা সাজিয়া শারমিন।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ‘যার নাম ব্যবহার করা হয়েছে, অথচ এ বিষয়ে জানতেন না—সাখাওয়াত হোসেন রিটটি করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিটিআরসি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাখাওয়াত আবেদন করেন। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জালিয়াতির ওই অভিযোগ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আর জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করে ৯০ দিনের বিটিআরসি ও সিআইডিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’
আরও পড়ুনসরকারের পাওনা ১২৬ কোটি টাকা, ফাঁকি দিতে অভাবনীয় জালিয়াতি ওসমান পরিবারের১৪ জানুয়ারি ২০২৫ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওসমান পরিবার মূলত কে টেলিকম চালানোর পর একটা পর্যায়ে শেয়ার তিনজনের কাছে হস্তান্তর করে। তিনজন বলছেন তাঁরা কোনোভাবেই ওই কোম্পানি–সম্পৃক্ত কেউ নন এবং তাঁরা জানেনও না কীভাবে তাঁদের নামে শেয়ার এল। কে টেলিকমের শেয়ার কীভাবে হস্তান্তর হলো এবং হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।’