মতিহার সিনেমা হলের পাশ দিয়ে যে সরু গলিটা ঢুকে গেছে, তার মাঝবরাবর ইয়াছিন দরজির দোকান। ফুটপাতে কনডেন্সড মিল্কের চা–দোকান, ঠেলাগাড়িতে তরকারি বিক্রেতা, মোটর পার্টসের দোকান, ডিসপেনসারি, যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা রিকশা-ট্যাক্সি, ভিড়ের গিজগিজ মানুষ—চারপাশের এসব বিচিত্র হাঁকডাকের মধ্যে বৈশিষ্ট্যহীন একটি দোকান। কোনো সাইনবোর্ড নেই। পুরোনো দরজি, হাতের কাজ ভালো। লোকের মুখে মুখে ইয়াছিন দরজির নাম ছড়িয়ে যায়।
এখন গলিটার নামই হয়ে গেছে ইয়াছিন দরজির গলি। তাই দূরদূরান্ত থেকে লোকজন খুঁজে খুঁজে এসে শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ব্লাউজ, সালোয়ার-কামিজ সেলাই করতে দিয়ে যায়। প্রথম দিকে বড় ছেলে সেলিম পড়ালেখার ফাঁকে বাবার কাজে সাহায্য করত। মেশিনে বসে নিজে নিজে সেলাইয়ের কাজ, কাটিং, বোতাম লাগানো, ঘের তোলার কাজ শিখে ফেলেছিল। এমব্রয়ডারির কাজেও দক্ষ হয়ে উঠেছিল। ম্যাট্রিক পাস করার পর সিটি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি করে দিয়েছিল ইয়াছিন দরজি।
মনে বড় আশা ছিল, ছেলেটা পড়ালেখা শিখে একদিন মান্যগণ্য মানুষ হবে। কিন্তু ছেলেটার মাথায় কী যে ঢুকল, পড়ালেখা করল না। কেবল বলে—বিদেশ যাব, বিদেশ যাব। স্বাধীনতার পর তখন আবুধাবি, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারে প্রচুর লোক যাচ্ছে। ছেলে দোকানেও বসে না, কলেজেও যায় না। ছেলের মা–ও যোগ দিয়েছে ছেলের দলে। ইয়াছিন দরজি করবে কী?
ধারকর্জ করে ইয়াছিন দরজি পুত্র সেলিমকে কাতার পাঠিয়ে দিয়েছে। একনাগাড়ে চার বছর কাতারে থেকে দেশে এসেছে সেলিম। টাকাপয়সা যা পাঠিয়েছে, ধারকর্জ শোধ করে সব কাজে লাগিয়েছে সে। কাঁচা ঘরটা সেমিপাকা করেছে। ছেলে আয়রোজগার করে, সবাই বলে সেলিমের জন্য এবার বউ আনো ঘরে। ইয়াছিনের মা–ও বলে, সেলিমকে বিয়ে করাও। দেখেশুনে হাজি বাড়ির ছামাদের মেয়ে রাহেলাকে বউ করে ঘরে এনেছে ইয়াছিন। ষোলো বছর ধরে সেলিম কাতার আছে। মাশা আল্লাহ ছেলের ঘরের দুই নাতি এখন বড় হয়েছে। বড় নাতি পারভেজ প্রতিদিন দুপুরবেলায় দাদুর জন্য ভাত নিয়ে আসে। স্থানীয় গরীবে নেওয়াজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস ফাইভে পড়ে সে। ছোট নাতি মুরাদ পড়ে ক্লাস থ্রিতে। ছয়–সাত বছর আগে ইয়াছিন দরজির স্ত্রী সফুরা খাতুন মারা গেছে। জ্বরজারি কিছু নাই, একদিন গভীর রাতে সফুরা বলে, ‘আমার বুকে ব্যথা, আমার বুক ভেঙে যাচ্ছে, আমারে ধরো, ধরো।’
ইয়াছিন দরজি এত রাতে কোথায় যাবে, কী করবে বুঝতে পারে না। ডিসপেনসারিতে একজন মহিলা ডাক্তার বসে। তাড়াতাড়ি ডাক্তারের বাসায় গিয়ে, ঘুম থেকে জাগিয়ে ডাক্তারকে নিয়ে আসে ইয়াছিন। ডাক্তার রোকেয়া বেগম স্টেথিস্কোপ বুকে ধরে, শিরা দেখে বলে—‘নেই’।
ইয়াছিন দরজি কাঁদে আর বলে, ‘আহা রে! সফুরা, আমারে তুমি একবার হাসপাতালে নেওয়ার টাইম দিলা না।’
ছোট ছেলেটা মা মা বলে গড়িয়ে গড়িয়ে কেঁদেছে। মা মরে যাওয়ার পর লতিফ শূন্য দৃষ্টি নিয়ে এদিক–ওদিক কয়েক দিন ঘোরাফেরা করেছে। তারপর গোঁ ধরল, সে–ও বড় ভাইয়ের মতো বিদেশ যাবে। টাকাপয়সা জোগাড় করে লতিফকেও বিদেশে পাঠানো হয়েছে। লতিফ এখন সৌদি আরব আছে। মাঝেমধ্যে টেলিফোন করে, খোঁজখবর নেয়। বড় ছেলেটা এখন আর বাপের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। নিজের আলাদা সংসার হয়েছে, ছেলেপেলে হয়ে গেছে, আর কী!
দোকানে কর্মচারী আছে তিনজন—রমিজ, লুৎফর আর তাহের। তারাও অনেক দিনের পুরোনো। কিশোর বয়সে ইয়াছিন দরজির দোকানে ঢুকেছে। এখন প্রায় মাঝবয়সে পৌঁছে গেছে। বিয়ে করে সংসার পেতেছে। তাদেরও ছেলেমেয়ে বড় হয়ে গেছে। আয়রোজগার ভালো, তাই অন্য কোথাও যায়নি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেলাই মেশিনের একটানা গরর গরর আওয়াজ শোনা যায়। হাতে কাজের ফুরসত নেই। ছোটখাটো কারখানার মতো চলে দরজির দোকান।
ঈদ এলে দরজির দোকানে ভিড়টা বেড়ে যায়। ইয়াছিন দরজির কদরও তখন বাড়ে। নির্ঘুম, একটানা রাত জেগে কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যায় শরীর। ‘অর্ডার ক্লোজ’ স্টিকার লাগানো থাকা সত্ত্বেও কাস্টমার ঢুকে হাত-পা ধরে রিকোয়েস্ট করে। পরিচিত, পুরোনো কাস্টমার হলে তো কথা নেই। তাদের ফিরিয়ে দিতে পারে না ইয়াছিন। এভাবে রিকোয়েস্ট রাখতে গিয়ে বিপাকে পড়ে ইয়াছিন দরজি। হিমশিম খেতে হয় তাকে। সময়মতো কাপড় ডেলিভারি দিতে না পারলে ঝগড়া-চেঁচামেচি-ফ্যাসাদও কম হয় না। প্রতিবছর ঈদের সময় প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটে। চল্লিশ-বেয়াল্লিশ বছরের দরজি–জীবন তার। মানুষের কাপড় সেলাই করতে করতে একটা জীবন পার করে দিয়েছে সে। এই জীবনে ঈদের চাঁদ দেখার সুযোগ তার হয়নি। ওই সময়টা তার দমবন্ধ ব্যস্ততার মধ্যে কাটে প্রতিবছর। এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ ইয়াছিন দরজি। কত হবে তার বয়স? সে নিজেই কি জানে? সত্তর–পঁচাত্তর! বেশিও হতে পারে। সেকালে তো কেউ জন্মসাল লিখে রাখত না। জন্মের হিসাব ছিল মুখে মুখে।
‘ওই যে, একবার কার্তিক মাসে বড় তুফান হইছিল, তুফানের পর তুই হইছিস!’
ছোটবেলায় মায়ের মুখে শোনা। জন্মের বৃত্তান্ত এইটুকু।
চোখে ভালো দেখে না আজকাল। কোঠরাগত চোখে হাই পাওয়ারের চশমা। সরাসরি তাকালে মনে হয়, স্বচ্ছ কাচের গ্লাস তোকমায় ভেজানো পানি। চোখের ছানি অপারেশন করিয়েছে একবার। মুখে অজস্র বলিরেখা। গালের দুপাশের চামড়া ঝুলে পড়েছে। মুখে দাঁত একটিও আর অবশিষ্ট নেই। মাথাটা হয়ে গেছে শ্রাবণ মাসের পাকা তালের মতো। তালুতে চুল নেই, কানের দুপাশে ও পেছনে শণের মতো পাতলা ক–গাছি চুল যেন অকারণেই রয়ে গেছে। সেলাই মেশিনে মাথা ঝুঁকে কাজ করতে করতে ইয়াছিন দরজির শরীর এখন ঈদের চাঁদের মতো বাঁকা হয়ে গেছে।
পুরোনো কাস্টমার, অনেক দিনের পরিচিত কেউ এসে ইয়াছিন দরজিকে দেখলে সালাম দেয়। আবার অবাকও হয়, ‘চাচা, আপনি এখনো বাঁইচ্ছা আছেন!’
কথাটা জিজ্ঞেস করে আইনুদ্দিন নিজেই যেন শরমের মধ্যে পড়ে যায়। সলজ্জিত চোখে ইয়াছিন দরজির ভাঁজপড়া মুখের দিকে তাকায়। জিব কেটে, বলে, ‘চাচা, আমার কথায় কিছু মনে করেননি তো?’
ইয়াছিন দরজিও বোঝে, কথাটা আইনুদ্দিন ভুলে বলে ফেলেছে। দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে ইয়াছিন দরজি বলে, ‘হয়াত মৌত হইলো আল্লার কাছে। যেদিন ডাক আসবে, সেদিন কেউ ধরে রাখতে পাইরবো না।’
দিন চলে যায়, দিন থেমে থাকে না। ইয়াছিন দরজিরও দিন যাচ্ছে। এবার রোজা পড়েছে বর্ষার মধ্যে। বৃষ্টিও হচ্ছে এবার বেশি। সন্ধ্যায় ধারা বৃষ্টি নামলে কোনো কোনো দিন মানুষ তারাবিহর নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে পারে না। শহরের কোনো কোনো অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। হাঁটুপানি, কোমরপানিতে ডুবে যায়।
বান-বর্ষার প্রতিকূলতার মধ্যেও ঈদের প্রস্তুতি চলে। শবে বরাতের পর থেকে শুরু হয়েছে উৎসব আয়োজনের, রোজা যত শেষ হয়ে আসছে, ঈদ ঘনিয়ে আসছে, মানুষের ব্যস্ততা তত বেড়ে গেছে। ঈদের আগেই সব কাজ শেষ করা চাই। সারা রাত মার্কেটগুলো খোলা থাকে, ক্রেতারও কমতি নেই। দিনের চেয়ে রাতে মার্কেটগুলো জমজমাট হয়ে ওঠে। নারী-শিশুদের প্রচণ্ড ভিড়, রাস্তায় দীর্ঘ যানজট। কেনাকাটা চলছে ধুমসে। ইয়াছিন দরজির দোকানেও ভিড়। তিনজন কর্মচারীর দম ফেলার সময় নেই। ইয়াছিন দরজির শরীরটা এবার ভালো যাচ্ছে না। বর্ষার পানি মাথার তালুতে একটু পড়তেই গায়ে জ্বর এসে গেল। মাথাটা ভারী এবং সর্দি-কাশিতে নাক-বুক জ্যাম হয়ে গেছে। দরজির দোকানে সেলাই মেশিনের একটানা আওয়াজে কানে তালা লেগে যায়। হরদম কাস্টমার আসছে-যাচ্ছে। কাল সকালেই ঈদ, ইফতারের পর ইয়াছিন দরজি দোকানের মধ্যেই বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেল। তাকে কয়েকজন ধরাধরি করে ট্যাক্সিতে তুলে নিয়ে গেল হাসপাতালে। জরুরি বিভাগের কাজ শেষ করে ইয়াছিনকে বেডে শোয়ানো হলে ডিউটি ডাক্তার যখন হাত ধরলেন, তখন ইয়াছিন দরজি শরীর নিথর। রাত পোহালে ঈদ। সবাই নতুন জামাকাপড় পরে ঈদের নামাজে যাবে। খুশির ঈদ, আনন্দের ঈদ। ঘরে ইয়াছিন দরজি অপেক্ষা করছে কাফনের কাপড় পরে, সে–ও যাবে। তবে ঈদগাহে নয়, গোরস্তানে।
সকালে ঈদের নামাজ। ইয়াছিন দরজির দাফনের কাজটা তাই বাদ আসরই হয়। জানাজার সময় সবাই দেখে খাটের ওপর শোয়ানো সাদা কাফনে মোড়া ইয়াছিন দরজি। ঈদের চাঁদের মতো বাঁকা হয়ে আছে।
কী সুন্দর ঈদের চাঁদ!
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দরজ র দ ক ন ক স টম র ঈদ র চ
এছাড়াও পড়ুন:
হাত জোড় করছি, ফিরিয়ে দিন সন্তানদের
‘কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। দোষ থাকলে, অন্যায় করলে উপযুক্ত শাস্তি দিন। তবু সন্তান হারানোর বেদনা যেন কারও বুকে না লাগে। আমি হাত জোড় করছি, আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিন।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে এমন আকুতিই জানান অপহৃত দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান। বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ির কুকিছড়া থেকে ফেরার পথে গত বুধবার ভোর ৬টার দিকে পাহাড়ি পাঁচ শিক্ষার্থী অপহৃত হন। এ অপহরণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট- ইউপিডিএফকে (প্রসীত) দায়ী করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অপহৃতদের উদ্ধরে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।
পিসিপির কেন্দ্রীয় শাখার সভাপতি নিপন ত্রিপুরা বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, ‘আমরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি, ইউপিডিএফ অপহৃতদের অভিভাবকদের একটি স্থানে ডেকেছে। বিকেলে অভিভাবকরা সেখানকার উদ্দেশে রওনা হন। পরে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।’ তিনি অবিলম্বে অপহৃতদের সুস্থ শরীরে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অন্বেষ চাকমা বলেন, অপহরণকারীরা সকালে একটি স্থানের নাম বলেছিল অভিভাবকদের। পরে পরিবর্তন করে আরেকটি স্থানে ডাকে। বিকেল থেকে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
অপহৃতরা হলেন– চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। তাদের মধ্যে রিশন চাকমার বাড়ি রাঙামাটির জুরাছড়ির মৈদং ইউনিয়নের জামেরছড়িতে। লংঙি ম্রোর বাড়ি বান্দরবানের আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নে; একই জেলায় বাড় অলড্রিন ত্রিপুরার; রাঙামাটির বরকল সদরের চাইল্যাতুলিতে দিব্যি চাকমা ও একই জেলার বাঘাইছড়ির বটতলায় মৈত্রীময় চাকমার।
এর আগে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী বিজু উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যান। উৎসব শেষে গত মঙ্গলবার তারা চট্টগ্রামে ফেরার উদ্দেশ্যে বাঘাইছড়ি থেকে দীঘিনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে আসেন। সেখানে বাসের টিকিট না পাওয়ায় খাগড়াছড়ি শহর থেকে কিছুদূরে পানছড়ি সড়কের কুকিছড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাতযাপন করেন। গত বুধবার ভোরে কুকিছড়া থেকে অটোরিকশায় খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল নামক জায়গায় দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে তাদের অপহরণ করে।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও অপহৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত ১৮৩ আদিবাসী শিক্ষার্থী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথী ভুবন চাকমার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হলেও তাদের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন অপহরণের ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে মানবাধিকারবিরোধী ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষার পরিপন্থি। অপহৃতদের উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
ইতোমধ্যে অপহৃতদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, খাগড়াছড়ি থেকে অপহরণের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। তাদের অবস্থান কিছুটা শনাক্ত করা গেছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে আসলে ঘটনাটি কী, কাদের হেফাজতে তারা রয়েছে। যৌথ অভিযানে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।