আরসাপ্রধান আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের স্বস্তি-উল্লাস
Published: 19th, March 2025 GMT
রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ বা আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ ওরফে আবু আম্মার জুনুনীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করার খবরে কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ওই খবর শোনার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁরা উল্লাস প্রকাশ করেন। তারাবিহর নামাজ শেষে আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন মসজিদে রোহিঙ্গারা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে গোপন বৈঠকের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরসার ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৃথক দুই মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
রোহিঙ্গারা নেতারা জানান, গ্রেপ্তার আতাউল্লাহকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আশ্রয়শিবিরে মজুত রাখা বিপুল ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদের সন্ধান মিলবে। শনাক্ত হবে অস্ত্র ও অর্থের জোগানদাতা। আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে লুকিয়ে থাকা আরসার কয়েক শ সদস্য আত্মগোপনে চলে গেছেন। আরসাকে ঠেকাতে এত দিন মিয়ানমারের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশনসহ (আরআরএসও) ১০টির বেশি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী একাট্টা ছিল। এখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। আশ্রয়শিবিরে খুনখারাবি বেড়ে যেতে পারে। আশ্রয়শিবির থেকে সন্ত্রাসীরা যেন পালাতে না পারেন, সে জন্য তল্লাশিচৌকিতে তৎপরতা বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, দুই বছর আগেও আরসাপ্রধান আতাউল্লাহর অবস্থান ছিল পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখায়। সেখান থেকে মাঝেমধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসে খুনখারাবিতে লিপ্ত থাকতেন। এক বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাত-লড়াই শুরু হলে তিনি দলবল নিয়ে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে আস্তানা গাড়েন। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে জোট বেঁধে আরসার সদস্যরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়তে থাকেন। দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই সংঘাতের পর ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপসহ ৮০ শতাংশ এলাকা (২৭০ কিলোমিটার) দখলে নেয় আরাকান আর্মি। কিন্তু আরসার সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই বন্ধ হয়নি। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বর থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
আরও পড়ুনরোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার প্রধানসহ ১০ জন নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার১৪ ঘণ্টা আগেরোহিঙ্গা নেতারা জানান, ২০১৮ সালের দিকে পুরো আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ছিল আরসার হাতে। সাধারণ রোহিঙ্গারাও আরসাকে নানাভাবে সহযোগিতা দিত। কিন্তু রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে বিপাকে পড়ে আরসা। এর ফলে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সমর্থন হারাতে থাকে তারা। এখন আরসা আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছিল। আতাউল্লাহসহ আরসার কয়েকজন শীর্ষনেতা গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে থাকা আরসা সন্ত্রাসীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে আরএসওসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা আরসার সন্ত্রাসীদের পালানো ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। তাতে আশ্রয়শিবিরে নতুন করে সংঘাত-হানাহানি দেখা দিতে পারে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আতাউল্লাহসহ আরসার ছয়জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে কক্সবাজারে করা মামলায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনআরসার প্রধান কমান্ডারসহ ৪৯ জনের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা০৫ ডিসেম্বর ২০২৩কক্সবাজারের টেকনাফের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আগুনের কুন্ডলী। গতকাল মঙ্গলবার রাতে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র খ ইন র জ য আর ক ন আর ম ন আর ম র সশস ত র র র খবর সব জ র সদস য আরস র
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের আইসিটিসহ রাজনৈতিক মামলার দায়িত্ব নিলেন জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ডক্টর মো. ইকবাল হোসেন ভূইয়া বলেন, 'সাংবাদিকদের আইসিটি মামলাসহ অন্য যেকোনো রাজনৈতিক মামলার সকল দায় দায়িত্ব আজ থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সোনারগাঁ শাখা গ্রহণ করবে।
আইনজীবী ও মামলা পরিচালনার জন্য আর দুটি পয়সাও আদালতে গিয়ে আপনাদের গুনতে হবে না।
আমরা এই দায়িত্ব গুরুত্বসহকারে দেখবো৷ আপনারা যারা এধরনের মামলার কারণে দিনের পর দিন মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাদের কাছে হাত জোর করে বিনয়ের সাথে ক্ষমা চাচ্ছি এ কারণে যে আমরা আগে আপনাদের খোঁজ খবর নিতে পারিনি'।
সোমবার (১৭ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম উদ্যোগে উপজেলা মডেল মসজিদের অডিটোরিয়াম সোনারগাঁয়ে সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার শেষ হলে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে স্বরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন।
সেই নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নিজের ইচ্ছে মতো ভোট দিতে পারবে। তাই রাজনৈতিক দল গুলোর কাছে অনুরোধ রইলো পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন দাবি করা থেকে বিরত থাকুন।
সোনারগাঁ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মো. শাহজালালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার সেক্রেটারি মো. হাফিজুর রহমান, সহ সেক্রেটারি মো. আবু সাইদ মুন্না, কর্ম পরিষদ সদস্য মো. আশরাফুল ইসলাম, দেওয়ান মো. খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলা উত্তরের আমির মো. ইসহাক মিয়া, সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিণের আমির মাহবুবুর রহমান, দেশ টিভির সিনিয়র সাব এডিটর মো. রুহুল আমীনসহ সোনারগাঁয়ের প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে পবিত্র ইদুল ফিতরের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশের সকল নির্যাতিত নিপিড়ীত মানুষের মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।