দেশের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমনও হাল, তাদের নিজস্ব কোনো ভবন নেই; জরাজীর্ণ ঘরে পাঠদান চালিয়ে নিতে হয়। অথচ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আধা পাকা ভবন থাকা সত্ত্বেও সেখানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যালয়টি এখন গোশালায় পরিণত হয়েছে। প্রায় এক যুগ চালু থাকার পর জাতীয়করণ না হওয়ায় বিবিধ সমস্যার কারণে গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। এতে গ্রামটিতে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের কাহেদগ্রামে স্কুলটির অবস্থান। ১৯৯৮ সালে স্থানীয় এক বাসিন্দার জমিদান ও পৃষ্ঠপোষকতায় এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। একটি এনজিওর অর্থসহায়তায় পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট আধা পাকা একটি স্কুলঘরও নির্মিত হয়।

কিন্তু শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন–ভাতা দিতে না পারা, শিক্ষক নিয়োগ ও পতিত সরকারের দলীয় পরিচয়ে ক্ষমতাচর্চার কারণে কয়েক দফা হোঁচট খাওয়ার পর ২০১৮ সালে এসে একেবারে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলটি। বিনা বেতনে পাঠদানের মাধ্যমে স্কুলটি জাতীয়করণে আশায় ছিলেন শিক্ষকেরা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় জাতীয়করণের বিষয়টি থমকে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির দরজা-জানালা ভেঙে পড়েছে। বারান্দাও ভেঙে পড়েছে। সামনে কয়েকটি গরু। শ্রেণিকক্ষগুলোয় গরুর জন্য খড় রাখা। বিদ্যালয়টিকে এখন গোশালা হিসেবে ব্যবহার করছেন জমিদাতা পরিবারের সদস্যরা। জমিদাতার পরিবারের এক সদস্য বলেন, এলাকার জন্য স্কুলটি খুব দরকার। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিলতায় স্কুলটি এখন বন্ধ হয়ে গেছে। যেহেতু স্কুলের কার্যক্রম নেই, তাই ফেলে না রেখে গরু ও অন্যান্য জিনিস রাখা হয়।

আশপাশের দু-তিন কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়। গ্রামের একমাত্র বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় দূরের পাঠশালায় যাচ্ছে শিশুরা। অনেক শিশু ঝরেও পড়ছে। স্কুলটির শিক্ষকদের কেউ কেউ শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, শুধু একজন শিক্ষকের জন্য রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে গিয়ে একটি গোটা স্কুল বন্ধ হয়ে যেতে পারে না।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তার (বর্তমানে ধোবাউড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) বক্তব্য, বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ার জন্য সব মানদণ্ড পূর্ণ করেছিল। স্কুলটি ২০১৬ সাল পর্যন্ত সমাপনী পরীক্ষায় অংশও নিয়েছিল। জাতীয়করণ হচ্ছে না দেখে পরে বন্ধ হয়ে যায়। এখনো যদি সব পক্ষ মিলে উদ্যোগ নেয়, তাহলে স্কুলটি আবার চালু হওয়ার সুযোগ আছে। ঈশ্বরগঞ্জের ইউএনও জানান, কাগজপত্র দেখে বন্ধ স্কুলটি চালু করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আমরা স্থানীয় প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে চাই। সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো উদ্যোগেই স্কুলটি চালু হোক, সেটিই প্রত্যাশা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব দ য লয়ট জ ত য়করণ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বর্ষবরণ উদযাপন 

পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে ময়মনসিংহে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে জেলা প্রশাসন ও বাংলা ১৪৩২ বর্ষবরণ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে পৃথক পৃথক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। এছাড়াও বিভিন্ন দল-মত ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

বর্ষবরণ সফল করতে বিভাগীয় নগরী ময়মনসিংহে সকাল ৮ টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। এদিকে নববর্ষ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া প্রাঙ্গণ থেকে আরেকটি বিশাল বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা দুটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শিল্পচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কের বৈশাখী মঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।

র‍্যালি শেষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি আবু বকর সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর কামরুল হাসান মিলন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, মাহবুবুর রহমানসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

র‍্যালি শেষে উপস্থিত সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ বেলুন উড়িয়ে শুভ নববর্ষের ঘোষণা করেন। শোভাযাত্রা দেখতে রাস্তার দু’ধারে শতশত উৎসুক নগরবাসী ভিড় জমান। পরে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন উদ্যানে বৈশাখী মঞ্চে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

এছাড়াও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে পদযাত্রা ও নানা আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। সকালে উপস্থিত ক্লাব সদস্যদেরকে বিনামূল্যে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিকেলে সার্কিট হাউজ মাঠে বাংলার ঐতিহ্য ঘুড়ি উড়ানো, লাঠি খেলা, রশি টানাটানি ও হা-ডু-ডু প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফুলবাড়িয়ায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তা‌র ৩
  • ময়মনসিংহে সালিসে না যাওয়ায় বাবা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় ৮৭ জনের নামে মামলা
  • ময়মনসিংহে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বর্ষবরণ উদযাপন 
  • সালিশে না আসায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • সালিসে না আসায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • কয়েকশত লোক বাড়ি হামলা করে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • ১০ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করল সরকার
  • দুই হাত কেটে ফেলেও বাঁচানো গেল না সাদাফকে
  • পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছে না ময়মনসিংহ মিনি চিড়িয়াখানার অসুস্থ ভালুকটি
  • ডেঙ্গুতে দু’জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২২ রোগী