ইনজেকশনে যাচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিক
Published: 19th, March 2025 GMT
মাইক্রোপ্লাস্টিক বা খুদে প্লাস্টিক কণা এখন নতুন সংকট হিসেবে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর দূরবর্তী অ্যান্টার্কটিকা থেকে শুরু করে মানবশরীরের রক্ত ও মস্তিষ্কে এসব ক্ষুদ্র কণার মাইক্রোপ্লাস্টিক দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা রোগীদের স্যালাইনে মাইক্রোপ্লাস্টিকের খোঁজ পেয়েছেন, আর তা চিকিৎসকের মাধ্যমে ইনজেকশন হিসেবে রোগীর শরীরে প্রবেশ করছে। গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন স্যালাইন ব্যাগে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার প্লাস্টিক কণা দেখা যায়, যা চিকিৎসকেরা সরাসরি রোগীর রক্তপ্রবাহে ইনজেকশন আকারে প্রবেশ করিয়েছেন। চীনের বেইজিংয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস ফর ফুড অ্যান্ড ড্রাগ কন্ট্রোলের বিজ্ঞানী স্যালাইনে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা খুঁজে পেয়েছেন।
ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইড বা আইভি ড্রিপস হিসেবে স্যালাইন আকারে রোগীকে বিভিন্ন ওষুধ ও পুষ্টি রক্তসংবহনতন্ত্রে প্রবেশ করানো হয়। এসব স্যালাইন ব্যাগ সারা বিশ্বের বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীদের চিকিৎসায় দেওয়া হচ্ছে। এসব ব্যাগে হাজার হাজার বিপজ্জনক প্লাস্টিকের কণার উপস্থিতি নতুন সংকট তৈরি করছে। এ বিষয়ে একটি গবেষণা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেলথ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা দাবি করেছেন, প্লাস্টিকের স্যালাইন ব্যাগের মাধ্যমে তরল ও পুষ্টির সঙ্গে অজান্তে মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে ইনজেকশন দিয়ে প্রবেশ করছে। শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক শ্বাস আকারে বা পানের মাধ্যমে প্রবেশ করছে। রক্তের প্রবাহে প্রবেশের সরাসরি মাধ্যম নেই। সেখানে ইনজেকশন করলে সরাসরি প্রবেশ করছে রক্তে।
শিরার মধ্যে খুদে কণা সাধারণত প্লাস্টিকের বোতল থেকে আসছে। এসব প্লাস্টিকের বোতল পলিপ্রোপিলিন দিয়ে তৈরি হয় বলে দূষণের ঝুঁকি আছে। গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা দুটি ভিন্ন কিন্তু সাধারণ ব্র্যান্ডের ২৩৮ গ্রাম ব্যাগের স্যালাইন দ্রবণ বিশ্লেষণ করেছেন। ইনজেকশন দেওয়া যেকোনো ওষুধের মাধ্যমে কণা শরীরে প্রবেশ করতে পারে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি ব্যাগে সাড়ে সাত হাজারের মতো কণা ভাসছে এসব স্যালাইন ব্যাগে। ডিহাইড্রেশনের চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত একটি স্ট্যান্ডার্ড স্যালাইন ব্যাগে এই কণার সংখ্যা ২৫ হাজারের মতো হতে পারে। পেটের অস্ত্রোপচারের সময় একাধিক স্যালাইন ব্যাগে ৫২ হাজারের বেশি কণা দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিয়েছেন, উৎপাদনের সময় কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রয়োজন আছে। মাইক্রোপ্লাস্টিকের মতো অদ্রবণীয় কণা রোগীদের রক্তপ্রবাহে প্রবেশের পথ বন্ধ করতে হবে।
বিজ্ঞানীদের ভাষ্যে, মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে মাউন্ট এভারেস্ট পর্যন্ত দেখা যায়। পাঁচ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরাকে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলা হয়। মানুষের মস্তিষ্কের পাশাপাশি সমুদ্রের গভীরে মাছের পেটেও দেখা যায় এসব কণা।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স য ল ইন ব য গ ইনজ কশন
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার লাঠির আঘাতে বিএনপি নেতা নিহত
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম আবদুর রশিদ (৫৫)। তিনি কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকার লাল মিয়ার ছেলে। কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ছিলেন রশিদ। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অমিত হাসান। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা। কালারমারছড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদে রয়েছেন তিনি।
নিহত রশিদের ভাতিজা জাহেদ হাসান বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় একটি পুকুরপাড়ে তাঁর চাচা আবদুর রশিদের সঙ্গে অমিত হাসানের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে অমিত হাসান ও তাঁর বড় ভাই কামরুল হাসান লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আবদুর রশিদকে আহত করেন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এখলাছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত আবদুর রশিদ ইউনিয়ন বিএনপির অন্যতম সদস্য। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতার নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে অমিত হাসানের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তিনি পলাতক রয়েছেন। জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাইছার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে কামরুল হাসানকে আটক করেছে। অমিত হাসানকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।