খুলনা নগরের শান্তিধাম মোড়ে ‘পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র’ ক্লাব দখল করে বানানো গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয় উচ্ছেদ করেছে স্থানীয় ‘ছাত্র-জনতা’। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই ভবন দখলমুক্ত করা হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় ঘটনা ঘটে।

শান্তিধাম মোড়ে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাবটির কার্যক্রম যে ভবনে পরিচালনা করা হতো, সেটি মূলত গণপূর্তের একটি দ্বিতল ভবন। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ক্লাবের কার্যক্রম চলত। নিচতলায় ছিল আরও কিছু কার্যালয়। ২০১০ সালের দিকে গণপূর্ত বিভাগ থেকে নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়ে আসে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র। এরপর ১৪ বছর ধরে সেখানে ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কর্মকর্তারা।

গত ২৭ জানুয়ারি দুপুরের দিকে গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা তালা ভেঙে সেখানে প্রবেশ করে তা দখলে নেন। সেদিনই পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের সাইনবোর্ড খুলে ফেলে সেখানে ‘গণ অধিকার পরিষদ, খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয়’ লেখা একটি ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুরো ভবনটি নেতা-কর্মীদের ব্যানারে ভরা ছিল।

ক্লাব ভবন দখল করে নিজেদের কার্যালয় করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দিন রাতেই গণ অধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলামকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। তারপরও রাশেদুল কার্যালয়টি দখলে রেখে সেখানে দলীয় কাযক্রম চালাতেন।

গতকাল রাতে যখন গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয় দখলমুক্ত করা হয়, তখন রাশেদুল সেখানে ছিলেন। তিনি বলেন, কার্যালয়ের মধ্যেই তাঁরা তারাবিহর নামাজ পড়ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ওই কার্যালয়ে হামলা করেন। তাঁরা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর ও তাঁদের মারধর করে সেখান থেকে বের করে দিয়েছেন। এ সময় তাঁদের হামলায় তিনিসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনখুলনায় ক্লাব ‘দখলে’ নিয়ে টানানো হলো গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ের ব্যানার২৭ জানুয়ারি ২০২৫

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক ও খুলনা জেলার সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম (বাপ্পী) প্রথম আলোকে বলেন, এটি একটি সরকারি ভবন। সেখানে ইজারা নিয়ে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাব কাযক্রম পরিচালনা করত। সেই ক্লাব দখল নিয়ে রাজনৈতিক কার্যালয় বানানো হয়েছিল। ছাত্র-জনতা আজ ওই ভবনটি দখলমুক্ত করতে এসেছিল। এ সময় গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন।

সাজিদুল ইসলাম দাবি করেন, দখলমুক্ত করার কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুক্ত নয়। তবে দলের অনেকেই যেহেতু শিক্ষার্থী, তাই তাঁরাও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেটি দখলমুক্ত করতে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনগণ অধিকার পরিষদ খুলনা মহানগরের সম্পাদককে অব্যাহতি২৮ জানুয়ারি ২০২৫

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন বলেন, ‘গণপূর্তের ভবনটি গণ অধিকার পরিষদ দখল করে নিয়েছিল। হঠাৎ করে এনসিপি দলের নেতা-কর্মীরা সেটি দখলমুক্ত করতে আসে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। ভবনটির পাহারায় এখন পুলিশ আছে। ভবনটি গণপূর্তের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত গণপ র ত এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

ভবন নির্মাণে কাটা হলো ৯৭টি গাছ, পরিবেশকর্মীদের আপত্তি

চট্টগ্রামের বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) আগর গবেষণাগারের ভবন নির্মাণের জন্য কাটা হয়েছে ছোট-বড় অন্তত ৯৭টি গাছ। এক সপ্তাহ ধরে গাছগুলো কাটা হয়েছে। গতকাল সোমবারও চলে গাছ কাটা।

এ নিয়ে পরিবেশকর্মীরা আপত্তি তুললেও বিএফআরআই তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। বিএফআরআই কর্তৃপক্ষের দাবি, গাছ কাটার অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই অনুমোদন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

বিএফআরআই আগর গবেষণাগার করার জন্য ছয়তলার ভবন নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরের বিএফআরআইয়ের অভ্যন্তরে ৫৮ শতক জায়গায়। গবেষণাগার নির্মাণের জন্য ‘সম্পূর্ণ বৃক্ষে উন্নতমানের আগর রেজিন সঞ্চয়ন প্রযুক্তি উদ্ভাবন প্রকল্প’ নেওয়া হয়। বন বিভাগের দুটি প্রতিষ্ঠানের একটি বিএফআরআই ও অপরটি বন অধিদপ্তর।

২০২১ সালের জুনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) পৌনে ৭৮ কোটি টাকার প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়। এরপর নকশা দিয়েছে স্থাপত্য অধিদপ্তর। অনুমোদন রয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের।

সরেজমিনে গতকাল বিকেলে দেখা গেছে, বিএফআরআই ফটকের পাশে টিনের ঘেরাও দিয়ে গাছ কাটার কাজ চলছিল। কাটার কাজ শেষ পর্যায়ে। একটি ট্রাকে কাটা গাছ ওঠানো হচ্ছে। শেষ প্রান্তে একটি বৈলামগাছ তখনো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল। আরেকটি ইউক্যালিপটাসগাছের ডাল ছেঁটে গোড়া কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শ্রমিকেরা। ঘেরাওয়ের গায়ে প্রকল্পের ছবিসংবলিত একটি ব্যানার লাগানো হয়েছে।

ভবনটি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট (পিডিএল) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ছয়তলা ভবনটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। ২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে ভবনের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পুরো গবেষণা প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০২৭ সালের জুন মাসে।

গাছ কাটছেন এক শ্রমিক। গতকাল বিকেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়মনসিংহের ব্যস্ততম এলাকায় যেভাবে বাস করতেন আরসা সদস্যরা
  • ভবন নির্মাণে কাটা হলো ৯৭টি গাছ, পরিবেশকর্মীদের আপত্তি
  • রাজেন্দ্র কলেজের নজরুল হল: ছাদ চুইয়ে পড়ে পানি, খসে পড়ে পলেস্তারা
  • রাজেন্দ্র কলেজের নজরুল হল: ছাদ চুঁইয়ে পড়ে পানি, খসে পড়ে পলেস্তারা