সুন্দরবনে এখন ফুল ফোটার মৌসুম। বনের খলিশা, গরানসহ বহু গাছে শোভা পাচ্ছে ফুল। আর ফুল থেকে চাকে মধু জমা করতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে মৌমাছির। মধুর চাকগুলো পরিণত হওয়ার পর আগামী ১ এপ্রিল থেকে মৌয়ালদের মধু আহরণে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেবে বন বিভাগ। বৈধ অনুমতির আগেই জেলের বেশে কিছু অসাধু ব্যক্তি বনে ঢুকে অপরিণত চাক কেটে মধু সংগ্রহ করছেন। এতে পূর্ণ মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত মধু না পাওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন মৌয়ালরা।

গতকাল সোমবার সরেজমিনে সুন্দরবনসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, সুন্দরবন থেকে চুরি করে সংগ্রহ করা খলিশা ফুলের মধু চড়া মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। মৌয়ালদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে সুন্দরবনে খলিশা ও গরান ফুলের মধু আসে। এরপর আসে কেওড়া ফুলের মধু। এর মধ্যে সবচেয়ে দামি হচ্ছে খলিশার মধু।

কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ গ্রামের মৌয়াল আবুল কালাম জানান, মধু সংগ্রহ করতে মৌয়ালরা আগামী এপ্রিলের ১ তারিখে সুন্দরবনে ঢুকতে বন বিভাগের অনুমতি পাবেন। অথচ মার্চ মাসেই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় প্রতি কেজি সুন্দরবনের মধু বিক্রি হচ্ছে। মূলত বেশি দামের আশায় মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেরা এসব মধু সংগ্রহ করছেন। এর ফলে কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ে বনে ঢুকে প্রত্যাশিত পরিমাণ মধু সংগ্রহ নিয়ে তারা চিন্তায় পড়েছেন।

সম্প্রতি সুন্দরবনে মাছ ধরার অনুমতি (পাস) নিয়ে চুরি করে মধু আহরণের অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে বন বিভাগ। সুন্দরবনের আন্দারমানিক টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল হাছান বলেন, ‘আমরা সুন্দরবনের চামটার খাল ধরে টহল দিচ্ছিলাম। সেখানে জেলেদের তিনটি নৌকা তল্লাশি করে অবৈধভাবে আহরণ করা মধু, মোমসহ আনুসঙ্গিক মালামাল জব্দ করেছি। সেই সঙ্গে নৌকায় থাকা ছয় জেলেকে গ্রেপ্তার করে বন আইনে মামলা দিয়েছি।’

সুন্দরবনে মাছ ধরার অনুমতি (পাস) নিয়ে চুরি করে মধু আহরণের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে বন বিভাগ। সম্প্রতি সুন্দরবনের আন্দারমানিক টহল ফাঁড়ির কার্যালয়ে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন দরবন র বন ব ভ গ

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের মঞ্চ ভাঙচুর, আটক ৬

চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা মঞ্চ, প্যান্ডেল, চেয়ার, ব্যানারসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেশ কয়েকজন যুবক এসব সরঞ্জাম ভেঙে তছনছ করেন বলে জানান আয়োজকরা। 

এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকালের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। 

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিসি হিলে নববর্ষ উদযাপন পরিষদের অন্যতম সংগঠক প্রণব চৌধুরী সমকালকে বলেন, পহেলা বৈশাখের বর্ণাঢ্য আয়োজনকে ঘিরে এখানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে পুরো ডিসি হিলে প্যান্ডেল তৈরিসহ নানা সাজসজ্জা করা হয়েছিল। তবে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন যুবক প্রবেশ করে মঞ্চ থেকে শুরু করে সবকিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। বৈশাখের আগের দিন এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি বড় ধাক্কা। এমন ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এর প্রতিবাদে ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। 

বর্ষবরণের প্রস্তুতির মধ্যেই আজ রোববার ডিসি হিলে ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’ পহেলা বৈশাখের নানা আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। 

পরিষদের সমন্বয়কারী সুচরিত দাশ খোকন বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে ৪০-৫০ যুবক এসে ডিসি হিলে আমাদের অনুষ্ঠান মঞ্চে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় প্যান্ডেলসহ মঞ্চের সামনে থাকা বেশকিছু চেয়ার। সোমবার সকাল থেকে এখানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরুর কথা ছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। এখন দুর্বৃত্তদের হামলায় সবকিছুই তছনছ হয়ে গেছে। তাই এখানে আর পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আবদুল করিম বলেন, ‘মঞ্চ ভাঙচুরের বিষয়টি আমরা শুনেছি। ঘটনাস্থলে আমাদের একটি টিম আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুবলার চরের রাসমেলা ঐতিহ্যের সাম্প্রতিক রূপ
  • চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর, আটক ৬
  • চট্টগ্রাম ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের মঞ্চ ভাঙচুর, আটক ৬
  • গত বছর ইলিশ আহরণ কমেছে ৪২ হাজার টন