মৌসুমের আগেই চুরি হচ্ছে সুন্দরবনের মধু
Published: 19th, March 2025 GMT
সুন্দরবনে এখন ফুল ফোটার মৌসুম। বনের খলিশা, গরানসহ বহু গাছে শোভা পাচ্ছে ফুল। আর ফুল থেকে চাকে মধু জমা করতে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে মৌমাছির। মধুর চাকগুলো পরিণত হওয়ার পর আগামী ১ এপ্রিল থেকে মৌয়ালদের মধু আহরণে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেবে বন বিভাগ। বৈধ অনুমতির আগেই জেলের বেশে কিছু অসাধু ব্যক্তি বনে ঢুকে অপরিণত চাক কেটে মধু সংগ্রহ করছেন। এতে পূর্ণ মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত মধু না পাওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন মৌয়ালরা।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে সুন্দরবনসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, সুন্দরবন থেকে চুরি করে সংগ্রহ করা খলিশা ফুলের মধু চড়া মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। মৌয়ালদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে সুন্দরবনে খলিশা ও গরান ফুলের মধু আসে। এরপর আসে কেওড়া ফুলের মধু। এর মধ্যে সবচেয়ে দামি হচ্ছে খলিশার মধু।
কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ গ্রামের মৌয়াল আবুল কালাম জানান, মধু সংগ্রহ করতে মৌয়ালরা আগামী এপ্রিলের ১ তারিখে সুন্দরবনে ঢুকতে বন বিভাগের অনুমতি পাবেন। অথচ মার্চ মাসেই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় প্রতি কেজি সুন্দরবনের মধু বিক্রি হচ্ছে। মূলত বেশি দামের আশায় মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেরা এসব মধু সংগ্রহ করছেন। এর ফলে কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ে বনে ঢুকে প্রত্যাশিত পরিমাণ মধু সংগ্রহ নিয়ে তারা চিন্তায় পড়েছেন।
সম্প্রতি সুন্দরবনে মাছ ধরার অনুমতি (পাস) নিয়ে চুরি করে মধু আহরণের অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে বন বিভাগ। সুন্দরবনের আন্দারমানিক টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল হাছান বলেন, ‘আমরা সুন্দরবনের চামটার খাল ধরে টহল দিচ্ছিলাম। সেখানে জেলেদের তিনটি নৌকা তল্লাশি করে অবৈধভাবে আহরণ করা মধু, মোমসহ আনুসঙ্গিক মালামাল জব্দ করেছি। সেই সঙ্গে নৌকায় থাকা ছয় জেলেকে গ্রেপ্তার করে বন আইনে মামলা দিয়েছি।’
সুন্দরবনে মাছ ধরার অনুমতি (পাস) নিয়ে চুরি করে মধু আহরণের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে বন বিভাগ। সম্প্রতি সুন্দরবনের আন্দারমানিক টহল ফাঁড়ির কার্যালয়ে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন র বন ব ভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
হরিণের সাড়ে তিন মণ মাংস ফেলে পালিয়েছে শিকারিরা
খুলনার কয়রা উপজেলায় সুন্দরবনে অবৈধভাবে শিকার করা হরিণের সাড়ে তিন মণ মাংস উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও বন বিভাগের কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনের বনরক্ষীরা। আজ সোমবার সকালে সুন্দরবন-সংলগ্ন জোড়শিং এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে এ মাংস উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি, মাংস ফেলে পালিয়ে যায় চোরা শিকারিরা।
বন বিভাগের খাঁশিটানা টহল ফাঁড়ির বনরক্ষী ছানা রঞ্জন পাল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে মাংস নিয়ে লোকালয়ে ফিরছে। এরপর কোস্টগার্ডের সঙ্গে যৌথ অভিযানে নেমে সুন্দরবন-সংলগ্ন জোড়শিং এলাকার নদীর চরের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই শিকারিরা পালিয়ে যায়। এ কারণে কাউকে আটক করা যায়নি। পরে নদীর চরে পড়ে থাকা চারটি বস্তায় রাখা হরিণের মাংস পাওয়া যায়।
বন বিভাগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রায় ৩০টির বেশি চোরা শিকারিচক্র ফাঁদ পেতে হরিণ নিধন করে। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত শুধু কয়রা থেকে ২৯৪ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার হরিণের ২৫ কেজি মাংস ও ৮০টি শিকারের ফাঁদসহ কয়রার পাঁচ হরিণ শিকারিকে গ্রেপ্তার করে কোস্টগার্ড।
সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, তারা সুন্দরবনে হরিণ শিকারি ও লোকালয়ে হরিণের মাংস ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করছেন। এদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া শিকারে জড়িত ব্যক্তিদের তথ্যদাতাকেও পুরস্কার দিচ্ছেন। হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে তাদের অভিযান চলছে।