দেড় শ বছরের ঐতিহ্যের স্মারক দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ
Published: 19th, March 2025 GMT
প্রায় দেড় শ বছর ধরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ। নবাবি আমলের স্থাপত্যশৈলীর কারণে মসজিদটি শুধু একটি স্থাপনা নয়, হয়ে উঠেছে শতবর্ষী ঐতিহ্যের স্মারক। সময়ের পরিক্রমায় এটি সংস্কার হলেও ধরে রাখা হয়েছে মূল নকশা ও স্থাপত্যশৈলী।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস ফর কালচারাল হেরিটেজ কনজারভেশনে ‘অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয় দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ। এর দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই নানা শ্রেণি–পেশার মানুষের আগমন ঘটে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার কোন্ডা ইউনিয়নের দোলেশ্বর গ্রামে বাংলা ১২৭৫ সনে (ইংরেজি ১৮৬৮, হিজরি ১২৮৫) দারোগা আমিনউদ্দিন আহাম্মদ নিজ উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। জনশ্রুতি রয়েছে, দারোগা আমিনউদ্দিন আহাম্মদ মসজিদটির নির্মাণে প্রথম উদ্যোক্তা হওয়ায় এটি ‘দারোগা মসজিদ’ নামে পরিচিত ছিল। তাঁর ছেলে মইজউদ্দিন আহম্মদ ছিলেন মসজিদের প্রথম মোতোয়ালি। মইজদ্দিন আহাম্মদ, তমিজউদ্দিন আহাম্মদ, করিমউদ্দিন আহাম্মদ, খিদির বক্স মিয়া ও আবদুর গফুর আহাম্মদ মসজিদটির জন্য জমি ওয়াক্ফ করেন।
মসজিদের সামনে স্থাপন করা সাইনবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সহোদর খিদির বক্স ও কাদের বক্স এবং মইজউদ্দিন আহাম্মদের পরিবার বংশপরম্পরায় মসজিদটির নির্মাণ ও সংস্কারকাজে যুক্ত ছিলেন। কাদের বক্সের নাতি ও হাফেজ মো.
মসজিদটিকে সংস্কার করে পুরোনো রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন হামিদুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের উদ্যোগে স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ মসজিদ অবকাঠামো ঠিক রেখে পুনঃসংস্কারের কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালে সংস্কারকাজ শেষ হয়। পুরোনো মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয় নতুন আরেকটি মসজিদ। পুরোনো মসজিদটি এখন গ্রন্থাগার ও মক্তব হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদটি লাল ইটের নির্মিত, যা ঐতিহাসিক বাংলার মসজিদগুলোর প্রাচীন নির্মাণশৈলীর সঙ্গে মিল রয়েছে। মসজিদটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এক গম্বুজবিশিষ্ট নকশা। গম্বুজটি উঁচু ও গোলাকৃতির। গম্বুজের চারপাশে ছোট ছোট মিনার স্থাপন করা হয়েছে।
মসজিদের পাশেই একটি জলাধার রয়েছে, যেখানে মসজিদের প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মসজ দ র প দ ল শ বর ন মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ, গাজায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা
রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শেষের আগমুহূর্তে শিল্পী ও দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে ছায়ানটের শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
নীরবতা পালনের আগে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ভয়াবহ মানবতার বিপর্যয় এবং গণহত্যায়, বিশেষ করে শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনবাসী আপন ভূমি রক্ষায় যে সংগ্রাম করছেন, তার প্রতি আমরা সংহতি জানাই। ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের স্মরণে সবাইকে এক মিনিট নীরবতা পালনের অনুরোধ করছি।
এবার ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। আলো, প্রকৃতি, মানুষ ও দেশপ্রেমের গান দিয়ে সাজানো হয় আজকের অনুষ্ঠান।
বাংলা বর্ষবরণের এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।
দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংস্থা ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এবার ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে গত তিন মাস ধরে ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে চলে গানের মহড়া।
ঢাকা/সুকান্ত/রফিক