করোনাকালে গর্ভধারণ মা ও শিশুর জন্য খারাপ ছিল: গবেষণা
Published: 18th, March 2025 GMT
করোনা মহামারি গর্ভবতী নারীর শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারির মধ্যে গর্ভধারণ করেছেন এমন মায়েরা বেশি জন্ম দিয়েছেন অকালিক ও কম জন্মওজনের শিশু। এ ধরনের মায়েদের সন্তান বেশি হারে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখতে হয়েছিল।
গর্ভবতী মায়েদের ওপর করোনা বা কোভিড–১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে এই গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্নল্ড স্কুল অব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। গত সপ্তাহে তাঁদের গবেষণা প্রবন্ধ এনালস অব এপিডেমিওলজিতে প্রকাশ করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুয়ান প্রদেশে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ শনাক্ত হয়। এর পরের ইতিহাস বিশ্ববাসীর জানা। মানুষ প্রস্তুত হওয়ার আগেই সারা বিশ্বে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। দেখা দেয় মহামারি। করোনা মহামারি বা কোভিড–১৯ মহামারি নামে তা পরিচিতি পায়। স্বাস্থ্যের ওপর করোনার প্রভাব নিয়ে সারা বিশ্বে অসংখ্য গবেষণা হয়েছে। নতুন নতুন গবেষণার ফল প্রকাশ পাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও গবেষণা হবে। বাংলাদেশেও বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত মানুষ প্রথম শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই গবেষকদের একজন অধ্যাপক শিয়াওমিং লি বলেন, তীব্র সংক্রমণে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় পরিবর্তন আসার কারণে গর্ভবতী নারীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। মহামারির সময় আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদের অনেকেরই সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
গবেষকেরা ২০২০ সালের ১ মার্চের আগে জন্ম দেওয়া মা ও সন্তান, মহামারির ঠিক আগে গর্ভধারণ করা ও মহামারির মধ্যে সন্তান জন্ম দেওয়া মা ও তাদের সন্তান এবং মহামারির মধ্যে গর্ভধারণ করা ও মহামারির মধ্যে সন্তান জন্ম দেওয়া মা ও তাদের সন্তানদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭ প্রসবের তথ্য পর্যালোচনা করেছেন। এত মা ও সন্তানের তথ্য তাঁরা পেয়েছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য রেকর্ড থেকে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মহামারির মধ্যে গর্ভবতী মায়েরা অকালিক শিশু ও কম ওজনের শিশু বেশি জন্ম দিয়েছেন। মহামারির মধ্যে গর্ভবর্তী হওয়া মায়েদের সন্তানদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখার হারও বেশি। মহামারির সময় মায়েরা শিশুদের বুকের দুধও কম খাইয়েছেন। এই গবেষণা থেকে শিক্ষা হচ্ছে যে গর্ভাবস্থায় সংক্রমণ হলে এবং সংক্রমণ তীব্র হলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে মায়ের ও নবজাতকের স্বাস্থ্যে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে
অস্ত্র মামলায় ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝালকাঠি জেলার সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন ওরফে সৈয়দ মিলনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন ঝালকাঠির পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মাহেব হোসেন।
এর আগে, আজ ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন হাদিসুর রহমান। বিচারক আবেদনটি নাকচ করেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ায় আ.লীগ-ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মী আটক
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ হাদিসুর রহমানকে প্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত ১৮ মার্চ ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-০১) বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম স্বাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার সময় হাদিসুর রহমান পলাতক ছিলেন।
সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন ওরফে সৈয়দ মিলন পূর্ব চাঁদকাঠি ইউসুফ আলী খান সড়কের সৈয়দ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত দেড়টায় ঝালকাঠি শহরের ডাক্তার পট্টি এলাকায় হাদিসুর রহমানের মালিকানাধীন সৈয়দ টাওয়ারের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। সেখানে রান্না ঘরের তাক থেকে একটি দেশি তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ হাদিসুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি ঝালকাঠি সদর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন অস্ত্র আইনে হাদিসুর রহমানকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ঝালকাঠি থানার ওসি খলিলুর রহমান একই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রায় দেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সরকারি কৌশলী পিপি মাহেব হোসেন। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মল্লিক নাসির উদ্দীন কবীর।
ঝালকাঠির পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহেব হোসেন বলেন, “আদালত সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিকে সাজাপ্রদান করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছেন। আজ হাদিসুর রহমান আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান। বিচারক আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”
আসামি পক্ষের আইনজীবী মল্লিক নাসির উদ্দীন কবীর বলেন, “আসামির অনুপস্থিতিতে মামলার রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।”
ঢাকা/অলোক/মাসুদ